আমায়_রেখো_প্রিয়_প্রহরে #পর্ব_৬ Writer #প্রিমা_ফারনাজ_চৌধুরী

0
88

#আমায়_রেখো_প্রিয়_প্রহরে
#পর্ব_৬
Writer #প্রিমা_ফারনাজ_চৌধুরী

পিনপতন নীরবতা কেটে আবারও গুঞ্জন শুরু হতেই প্রফেসর মোর্শেদ উদ্দীন পোর্টফলিও ম্যানেজমেন্টের বইটি বন্ধ করে ভুরু কুঁচকে সবার দিকে তাকালেন।

হাউ স্টুপিড! আবারও তোমরা আমার সাথে মশকরা শুরু করেছ?

গালে হাত দিয়ে মেহুল বিড়বিড়িয়ে বলল

ধুরর টাকলা ভ্যা ভ্যা করিস না তো ভাই। টেনশনে মরে যাচ্ছি।

শান্তা বলল

আমাদের স্কুলের বাচ্চা পেয়েছে এই টাকলা। এইসব কূটনামি করেই তো মাথার সব চুল গেল।

প্রফেসর মোর্শেদ সময় ফুরিয়ে আসতেই নোট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দেখলেন দরজার বাইরে এক পা দু পা করে পায়চারি করছেন সদ্য জয়ন হওয়া প্রভাষক।

মোর্শেদ উদ্দীন কপালের একপাশে চুলকে বললেন

ও আরেকটা কথা। আজকে ফাইনানন্সিয়াল এনালাইসিস এন্ড কনট্রোল নতুন স্যার পড়াবেন। ফারদিন সাহেব আসুন আসুন। আমি আজকে ওদের একটু বেশি পড়িয়ে দিচ্ছি। ভীষণ অসভ্য এরা। নতুন স্যারের সাথে যেন ভন্ডামি না করে।

অভিক ভেতরে প্রবেশ করে হাসলো মৃদু।

সবাই তখন দাঁড়ানো। সুজানা মেহুল আর শান্তা একেবারে লাস্টে। প্রথম দুই বেঞ্চ ছাড়া যাদের দেখা যেত না তারা একদম শেষে ব্যাপারটা অনেকের কাছে আশ্চর্যের।

মেহুল কনুইয়ের গুঁতো মেরে বলল

আমি তোকে বলেছিলাম এই ক্লাসটা করব না। শুনলি না তো।

সুজানা বলল

বেরোনোর সুযোগ পেলাম কোথায়? আর উনি কি বাঘ নাকি? দেখ আজ না হোক কাল তোর সাথে ওনার দেখা হবেই। প্লিজ একদম মাথা খারাপ করিস না।

শান্তা বলল

হাহ ভার্সটিতে সব হ্যানসাম হ্যানসাম স্যার আসিতেছে কেন? এই বেটা তো এখন বেশ অর্ধেকের ক্রাশ হইয়্যা যাইবো সবাই ক্রাশ খাইয়্যা কিছুদিন পর ফাঁসও খাইবো।

মেহুল হেসে উঠলো। সুজানা বলল

এবার চুপ যাহ।

প্রফেসর মোর্শেদ উদ্দিন অভিককে দেখিয়ে সবার উদ্দেশ্য বললেন

এভরিওয়ান! তোমাদের নতুন স্যার কিন্তু ভারী মিষ্টি। তোমরা যদি উনার কাছেও কালার হয়ে যাও তাহলে বলতেই হবে আমার টাকলা হওয়ার একমাত্র কারণ তোমাদের মতোই স্টুডেন্ট।

সবাই হো হো করে হেসে উঠলো। অভিক ও হাসলো।

উনি অভিকের সাথে হাত মিলালেন। অন্য হাতে কাঁধ চাপড়ে বললেন..

আসি হ্যা? অল দ্য বেস্ট ফারদিন।

থ্যাংকিউ স্যার।

ইয়াহ আরেকটা কথা ওদের একদম লাই দেবেন না। নিখিল নিহাত হাত তোলো ?

তৃতীয় সারি আর প্রথম সারির প্রথম বেঞ্চের দুজন স্টুডেন্ট হাত তুললো।

মোর্শেদ উদ্দিন হাসলেন। বললেন

এরা হচ্ছে এই ব্যাচের টপার। খুবই ভালো। আরও কয়েকজন আছে যেমন নিখিলের পাশের জন। আহির আর ওর পেছনের দুজন। মেয়েদের এদিকে ওই ডান পাশের গুলো। আরও কয়েকজন আছে। আপনি বুঝে যাবেন অবশ্য।
আর বাকি সবাই ভীষণ ফাঁকিবাজ। একটু এদিকসেদিক হলেই ক্লাস থেকে আউট করে দেবেন। একদম বাইরে।

অভিক হেসে উঠলো।

আরেহ হাসির কথা নয় ফারদিন সাহেব। কয়েকদিন ক্লাস নেন। নিজেই বুঝে যাবেন এরা কেমন। আসি। সাবধান কিন্তু। হ্যা?

অভিক মৃদু হেসে মাথা দুলিয়ে

ইয়েস স্যার।

মোর্শেদ উদ্দিন যেতেই অভিক সামনের হান্টার ডেস্কে দু হাতের ভর দিয়ে সামনে দৃষ্টিপাত করলো। নিহাত আর নিখিলকে উদ্দেশ্য করে বলল

বসুন। স্যারকে নিশ্চয়ই ভীষণ ক্ষেপান আপনারা।

সবার ঠোঁট হাসি। যার মানে হ্যা।

এনিওয়ে আমি আজ ব্যাসিক কিছু থিওরি পড়াবো। আপনারা এলইডি স্ক্রীনে তাকান।

শান্তা ফিসফিস করে বলল

মাগোমা ইনি তো আসা মাত্রই পড়া পড়া শুরু করে দিয়েছে। একটু পরিচিত তো হবে। হাহ ডিউটির মারে বাপ।

সুজানা বলল

চুপ কর। এদিকে না আসলেই ভালো।

এখন তো বলছিলি যে কেন ভয় পেতে হবে উনাকে। এখন অন্য কথা বলিস।

সুজানা মুখ দিয়ে ‘চ’ সূচক শব্দ করে বলল

এদিকে আসলে যে ভয় পাব এমন না। একটা অন্যরকম ব্যাপার আছে শান্ত। আচ্ছা এবার চুপ থাক।

শান্তা চুপ করলো। নিহাত নামের মেয়েটি বলল

স্যার সবাই আপনার সাথে পরিচিত হতে চায়।

অভিক ঘাড় ঘুরিয়ে বলল

ওহ ইয়েস। আমার ক্লাস অনেক পাবেন আপনারা। পরিচিত হওয়া যাবে। পে এটেনশন ইন ক্লাস।

নিহাত বসেই বলল

ওকে স্যার।

মেহুল সুজানাকে ডেকে বলল

জানু আমার ভয়ে কেমন হাত পা কাঁপছে। উনি যদি জানতে পারেন আমি মেহুল তাহলে কেমন রিয়েকশন হবে?

কিছু বলবেন না। চুপ যা হতো ভাই। তোদের কথামতো পেছনে এসে বসাটাই ভুল হয়েছে।

আচ্ছা আচ্ছা বাদ দিলাম।

অভিক এলইডি রাইটিং বোর্ডে আঙুল চালিয়ে পড়ার গভীরে নিয়ে যেতেই মনোযোগী হলো প্রতিটিা ছাত্রছাত্রী। সুনিপুণ ভাবে প্রতিটা টপিক, প্রতিটা রুলসের, প্রতিটা থিওরির স্পষ্ট ব্যাখ্যায় কিছুক্ষণের জন্য হলেও পিনপতন নীরবতা নেমে এল পুরো ক্লাসরুম জুড়ে।
এমন শিক্ষকের ভূয়সী প্রশংসায় মনে মনে পঞ্চমুখ হলো ছাত্রছাত্রীরা।
পড়া শেষ করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অভিক সবার উদ্দেশ্য বলল

By the way, let me introduce myself, I am Abhik Fardin. I have joined the Finance Department as a lecturer. See you again very soon.

সবাই তখন দাঁড়িয়ে। ধপাস করে বসে পড়ার আগেই অভিক ফিরে তাকালো পুনরায় । সবাই হকচকিয়ে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো।

পেছনের তিনজন বেশি কথা বলেছেন। নেক্সট টাইম আপনারা সামনে এসে বসবেন।

বলেই অভিক বেরিয়ে গেল। সবাই সুজানাদের দিকে ফিরে তাকালো। তিনজন ধপাস করে বসে একে অপরের গায়ের উপর ঢলে পড়লো।

_______________

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে উঠলো কাটাপাহাড়ের রাস্তা। ভিড় জমে উঠলো ঝুপড়িগুলোয়। প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত চবি’র পুরো আঙিনা যেন অপরূপ এক লীলাখেলা । দৃষ্টিজুড়ে নান্দনিক, অপ্সরী। এ যেন নান্দনিক সৌন্দর্যের পুরোধা।
সৌন্দর্যপিপাসুদের কাছে পরম আকর্ষণীয়, ভ্রমণের পিপাসা মেটানো চিরসবুজ-শ্যামল সোনালি ক্যাম্পাসে হৈ-হুল্লোড়ে মেতে থাকা বন্ধুমহল ছুটতে ছুটতে এসে দাঁড়ালো ঝকঝক করে এসে থামা শাটল ট্রেনের কাছে।

রঙবেরঙের এই শাটল ট্রেন তাদের কাছেই পরম আপনের। নিত্যদিনের সঙ্গী। একের পর বগি দখল হলো।

সবাই জায়গা দখল করে বসে পড়লো। কেউ ঘর্মাক্ত গায়ে দাঁড়িয়ে রইলো। কেউ ঠেস দিয়ে দাঁড়ালো। এই ক্লান্ত দুপুরেও চবির ক্ষুদে শিল্পীদের পুরোনো তারছেঁড়া গিটারে সুর উঠলো। গেয়ে উঠলো সবাই চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় সেই বিখ্যাত গান।

ও হালা চান গলার মালা
পেট ফুরেদ্দে তোয়াল্লায়।
কইলজা জ্জলের তুয়ারলাই।

মাইট্টা গুদাম টইনুর
ছানি ঝরঝরাইয়া পরের পাণি
মাইট্টা গুদাম টইনুর
ছানি ঝরঝরাইয়া পরের পাণি
আই ভিজিলে যেমন তেমন তুই
ভিজিলে পরান ফাঢী যায়
ও কালাচান গলার মালা
পেট পুরেদ্দে তুয়ারলাই
পেট পুরেদ্দে তুয়ারলাই
কইলজা জ্জলের তুয়ারলাই

হাতের তালি আর মাথা দুলিয়ে সুর মিলিয়ে সবাই গেয়ে যেতে লাগলো।

গিটারে আঙুল চালাতে চালাতে হাতের কব্জি দিয়ে হাতের উল্টোপাশ দিয়ে ঘাম মুছে পাশে তাকাতেই নিখিলের চোখে পড়লো ক্লাসের টপারের দিকে। তার সাথেই অঘোষিত শান্তিযুদ্ধ চলতে থাকা সেই মানবীর দিকে। চোখ সরু করে তাকাতেই নিহাত চোখ সরিয়ে খোলা জানালার বাইরে চোখ নিবদ্ধ করলো। তার উড়ো চুল কাউকে বিরক্ত করছে তা দেখার সময় তার নেই। তার পাশে বসেছে কেন?

বন্ধুরা সবাই ফিসফিস করলো

দোস্ত টপার প্লাস টপার একুয়াল কি হয়?

নিখিল দাঁতে দাঁত চেপে বলল

ডাফার হয়।

সবাই আবারও হো হো হাসিতে মেতে উঠলো।

সুজানা আর মেহুল আসার সময় ট্রেন মিস করায় নিউমার্কেট থেকে বাসে করে চলে এসেছিল। কিন্তু যাওয়ায় সময় তো আর মিস করা যায় না। ৫২ মিনিটের এই পথটা তাদের কখন যে ফুরিয়ে গেল ঘূর্ণাক্ষরেও টের পেল না তারা। ঝকঝক করে সেই শাটল থেমে যায় শহরের বটতলী রেলওয়ে স্টেশনে এসে।

দলে দলে নেমে পড়লো সবাই। আর মিলিয়ে গেল ভিন্ন ভিন্ন পথে।

কাল সকালে তাদের আবারও দেখা হবে ঠিক এই স্টেশনে। তারা যে এক শহরের মানুষ।

______________

রোদ ছাতাটা বন্ধ করে ষোলশহরের ২ নম্বর গেইটের সেই কাঙ্ক্ষিত বাড়িটির গেইট ঠেলে ভেতরে পা রাখলো সুজানা। ওই নীল গগনে শেষ বিকেলে ক্লান্ত,কর্মঠ কাকপক্ষীগুলো যখন নীড়ে ফিরছে সুজানা তখন পড়াতে এসেছে নবকুঠিরে। সূর্য্যিমামাও তখন ভারী পরিশ্রান্ত। বেলা করে পড়াতে এসেছে সুজানা। ভার্সিটি থেকে ফিরে খেয়েদেয়ে যেই শুয়েছিল চোখটা লেগে গিয়েছিল। কি এক জ্বালা। এই টিউশনিটা বেশিদিন কন্টিনিউ করতে পারবে মনে হয় না তার।

বাড়ির দক্ষিণ পাশে কাজ করছে বাগানের মালী। সুজানা হাসলো মালীর সাথে। তারপর বাড়ির ভেতরে পা রাখতেই দেখলো শার্ট কোর্ট পড়া কয়েকজন লোক বসে আছে।

সুজানাকে দেখে কেমন কৌতূহলী চোখে চাইলো। আজাদ সাহেব কিছু একটা বলতেই উনারা মাথা দুলিয়ে নিজেদের কাজে মনোযোগ দিলেন। দোতলায় যাওয়ার পথে অভিকের সাথে দেখা হতেই বুকের ভেতর ধুকপুক করে উঠলো তার। আজ ক্লাসে নিশ্চয়ই উনি সুজানাকে লক্ষ্য করেছিলেন। আর ফিসফিস করাতে বিরক্ত হয়েছিলেন।

অভিক নেমে আসতে আসতে জিজ্ঞেস করলো

কেমন আছেন সুজানা?

সুজানা মাথা নেড়ে ভালো আছি বলার আগেই অভিক নিচে গিয়ে লোকগুলোর সাথে হাত মিলিয়ে খোশগল্পে মেতে উঠলো।

সুজানা দ্রুত পা চালিয়ে চলে গেল। অনা আর আবিদ টেবিলের উপর বসে বসে কার্টুন দেখছে।

সুজানা বলল

একি? ওখানে কেন? আবার?

দুজনেই সমস্বরে সালাম দিল।

আসসালামু আলাইকুম টিচার।

ওয়ালাইকুমুস সালাম। কি ব্যাপার?

অনা বলল

সুজান সুজান আছকেও আমরা ইখানে পড়বো।

সুজানা চেয়ারে গিয়ে বসলো। গাল টেনে দিয়ে বলল

কে বসিয়ে দিয়েছে এখানে?

অভি অভি।

ওহহ।

আবিদ সুজানার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকালো। বলল

সুজান দিরি কচচো কেন? কান ধরো।

সুজানা বড় বড় চোখ করে চাইলো। বলল

হাহ আমি?

হ্যা অভি বুলেচে টিচার দিরি কললে পানিশ দিতে।

সুজানা হেসে বলল

কানে না ধরলে কি করবেন?

অভিকে বুলে দিবো।

আচ্ছা? উনি কি করবেন?

আবি আর অনার মোতো আদর কববে না।

সুজানা কপাল চাপড়ে বলল

মাফ করেন আমায়। আর দেরী করব না ভাই।

মর্জিনা এসে ট্রে রেখে গেল। সুজানা দেখলো চায়ের বদলে কফি। আর দু রকমের নাশতা। সুজানা কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই মর্জিনা বলল

ছোড বাবু বলছে তোমারে চায়ের বদলে কফি দিতে। তাই বড় বউ কফি দিছে। খাইয়্যা লও।
সুজানা খেল কোনো উপায়ান্তর না দেখে। তবে আগের মতো অত খারাপ লাগলো না।

_____________

সুজানা পড়ানো শেষ করে ড্রয়িংরুমে আসতেই দেখলো নতুন শাড়ি পড়া কয়েকটা ভদ্র মহিলা। নিশ্চয়ই বেড়াতে এসেছেন উনারা। পুরুষমানুষ কাউকে দেখা গেল না অভিক আর আহনাফ ছাড়া। আহনাফ সুজানাকে দেখে জানতে চাইলো

কেমন আছেন সুজানা? ওরা ঠিকঠাক পড়ছে তো?

হ্যা পড়ছে ভাইয়া। দুষ্টুমি তো করবেই। এখনো ছোট তাই।

বলতে না বলতেই অনা আর আবিদ ছুটে এসে বাবার পাশে গিয়ে বসলো। আহনাফ বলল

এইতো চলে এসেছে। অভিক সুজানাকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আয়।

অভিক মাথা তুলে সুজানার দিকে তাকালো। সুজানা বলল

না না। আমি চলে যেতে পারব ভাইয়া। সমস্যা হবে না। আমাকে ম্যাডাম কেন ডেকেছিলেন?

অভিক চোখ নামিয়ে ফোনে মনোযোগ দিল। আনিকা ছুটে এসে বলল সুজানা আসুন না। আরেহ আমার আম্মা আর চাচী আপনার সাথে দেখা করতে চাইছিলেন।

বলেই হাত ধরে নিয়ে গেল আনিকা। সুজানা বলল

কিন্তু আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে ম্যাডাম।

গাড়িতে করে যেতে পারবেন। এমনিতেই দেরী হয়েছে। আসুন আমার আর চাচী অনেকদিন পর এসেছেন।

সুজানাকে রান্নাঘরের দিকে টেনে নিয়ে গেল আনিকা। সুজানাকে দেখেই সবাই নড়েচড়ে বসলো। সুজানা সালাম দিতেই আনোয়ার বেগম উত্তর দিলেন। বললেন

বসো। কি নাম তোমার?

সুজানা নিজের নাম বলে আবারও আনিকার দিকে চাইলো। আনিকা বলল

এমা আমার আম্মা উনি। এত লজ্জা পাওয়ার কি আছে?

সালমা বেগম আঁড়চোখে তাকিয়ে বললেন

শোনো মেয়ে। একটা উপদেশ দিই তোমাকে। মেয়ে বড় হয়েছ কেউ যখন কথা বলতে ডাকবে তখন একদম চুপচাপ থাকবে। আর যেটা জিজ্ঞেস করবে সেটা উত্তর দেবে। মনে থাকবে?

সুজানা মাথা নামিয়ে বলল…

জ্বি।

আনোয়ারা বেগম হেসে বলল

বেয়াইন ছোটমানুষ তাই লজ্জা পাচ্ছে হয়ত। আচ্ছা মা তোমার বাড়িতে কে কে আছেন? কোথায় থাকো?

আমি মা আর ভাই। সরিষা বাড়ির পথে যে বিল্ডিংটা দেখা যায় ওখানে তৃতীয় তলায় ভাড়া থাকি আমি। আমার গ্রামের বাড়ি পটিয়া।

ওহহ আচ্ছা আচ্ছা। তোমার বাবা কি করেন?

সুজানা কিছু বলতে যাবে তখনি আবিদের ডাক ভেসে এল।

সুজান সুজান অভি এখুন যেতে বলে। এখুন ডাকে। এখুন এখুন।

আনিকা বলল

আচ্ছা আচ্ছা যাচ্ছে বাপু।

আবিদ চলে গেল। কিছুক্ষণ পর অনা এল।

সুজান সুজান অভি এখুন ডাকে। নইলে মার দিবে।
এখুন আসো। আসো তাত্তারি আসো। আসো না?

সালমা বেগম বললেন

অ্যাই বজ্জাত তুই আমার ছেলের নাম ধরে ডাকবি কেন?

অনা চিল্লিয়ে বলল

ভোবব। অভি আমার ছিলে। মাই সান।

সবাই হেসে উঠলো তার কথায়। সালমা বেগম খুন্তি দেখিয়ে বললেন

সুজানা যাবে না। যাবে না মানে যাবে না।

অনা মাথা দুলিয়ে বলল…

তাওলে অভি কুলে করে নিয়ে যাবে।

সালমা বেগম চোখ বড় বড় করে তাকালেন।
সুজানার ইচ্ছে হলো মাটি ফাঁক করে ঢুকে পড়তে।

অনা বেরিয়ে যেতে যেতে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলল

অভি অভি তাত্তারি আসো । টিচারকে কুলে করি নিয়ে যাও।

চলবে…….

পাঠক অনুভূতি জানাবেন। ভালোবাসা সকলকে❤️❤️❤️❤️ আমার জন্য দোয়া করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here