তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_দীপ্ত #পর্ব__________17

0
110

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________17

সন্ধ্যা ৬টায়……….
ঘুম ভাঙ্গ তৃপ্তির । চোখ খুলে চার পাসে তাকিয়ে ধরফরিয়ে উঠে বসলো সে । আনমনেই বলে উঠলো ।

:+আমি কোথায় ।(তৃপ্তি)

এরপর নিজ শরীরের দিকে চোখ যেতেই আরো অবাক হলো সে । তার জামা কাপড় পালটে দিলো কে । সে তো বোরখা পরা ছিল । মাথায় মুখে হাত দিয়ে দেখলো হিজাব নিকাব কিছুই নেই । রুমটা বেস বড় । তাদের বাসার রুমের থেকে এই রুমটা প্রায় দ্বিগুণ বড় । রুমে এসি ছেরে দেওয়ার কারনে একটু শীত অনুভব হচ্ছে তৃপ্তির । দু’হাত বুকে গুজে বলল ।

:+ঊহহ । রুমটা এমন ঠান্ডা কেন ।(তৃপ্তি)

এই বলে বেড থেকে নেমে রুমটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো তৃপ্তি । রুমের সাথেই এক যাস্ট ওয়াসরুম । রুমের এক পাসে সোফা রাখা । বেড টা একে বারে তুলতুলে নরম । একটা ড্রেসিং টেবিল । একটা রেডিমেড আলমারি । আরো অনেক কিছু দিয়ে পরিপূর্ণ রুমটা । রুমের পাসে অনেক সুন্দর একটা বেলকুনি আছে । বেলকুনির দরজা গুলো কাচের যা ভিতরের দিকে টান দিতেই খুলে গেল । বেলকুনিতে গিয়ে দুরে তাকালো তৃপ্তি । যতদুর দেখা যাচ্ছে সুধু বড় বড় বাড়ি আর গাড়ির ফো ফা শব্দ । হঠাৎ তার মনে হলো সে তো নিদ্রর সাথে গাড়িতে ছিল । সে এখানে এলো কি করে । আর নিদ্রই বা কোথায় । কেও তাকে কিডনাপ করলো না তো । কিডনাপের কথা মনে হতেই তৃপ্তির মন আতকে উঠলো । কান্না করে দিলো সে । ছোট থেকে সে সুনে আসছে কিডনা পাররা অনেক ভয়ানক হয় । তৃপ্তি দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না । তৃপ্তিদের বাড়ির দরজা গুলো ছিট কারি মারা যা সহজেই খোলা যায় । কিন্তু এখানকার দরজা লক সিস্টেম যা কায়দা করে খুলতে হয় । অনেক চেষ্টার পরো দরজা খুতে পরলো না সে । বেথ্যো হয়ে হাও মাও করে কাদতে কাদতে দরজার পাসেই ফ্লোরে বসে পরলো তৃপ্তি । এই রুম গুলো এম যে রুমের ভিতরে কি হচ্ছে তা বাহিরে থেকে কেও বুঝতেও পারবে না । তাই তৃপ্তির কান্নার আওয়াজ বাহিরে প্রজন্ত যাচ্ছে না । রুমের ভিতরেই থেকে গেল ।

তৃপ্তিকে রুমে সুয়িয়ে দিয়ে বেরিয়ে আসার পর নিদ্র নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয় । এরপর ফোন চার্জে লাগিয়ে বেডের উপর গিয়ে বসে পরে । এতপর আমেনা এসে দারায় নিদ্রর রুমে ।

:+আসতে কোন সমস্যা হয়নি তো বাবা ।(আমেনা)

:+নো mom । আচ্ছা mom তুমি একটা কাজ করো । তৃপ্তির ড্রেস গুলো পালটে দাও । এগুলো নিয়ে ঘুমুতে ওর আনিজি ফিল হবে ।(নিদ্র)

:+কিন্তু,,,,,,,,,,।(আমেনা)

:+ mom তুমিও মেয়ে । তৃপ্তিও মেয়ে তাহলে সমস্যা কোথায় ।(নিদ্র)

:+বেসি কথা বলছিস । আচ্ছা পালটে দেবো । কিন্তু দুপুর তো পেরিয়ে যাচ্ছে খাবি না । আর ও খাবে না ।(আমেনা)

:+ও এখন ঘুমুচ্ছে ঘুমুতে দাও । পরে খাইয়ে দিয়ো । আর আমি এখন কিছু খাবো না । একটু রেস্ট নেবো। তুমি গিয়ে ওর পরনের ড্রেস গুলো চেঞ্জ করে দাও । আর একটু ঠিক করে সুয়িয়ে দিও । আমি কি ভাবে সুয়িয়ে দিয়ে এলাম যানি না ।(নিদ্র)

এই বলে নিদ্র রুমের এসি ছেরে দিয়ে বেডে সুয়ে পরলো ।
আমেনা নিদ্রর রুম থেকে বেরিয়ে তৃপ্তির রুমে আসলো । তিনি এসে দেখেন নিদ্র তৃপ্তিকে এলো পাথালি সুয়িয়ে দিয়ে গেছে । আমেনা তৃপ্তির পাসে গিয়ে দারায় ।

:+এই ছেলে টাও না । মেয়েটার পায়ের জুতু গুলোও খুলে দেয়নি । মন চাচ্ছে এখন গিয়ে কানের নিচে দু’টো দেই ।(আমেনা)

এই বলে আমেনা তৃপ্তির পায়ের জুতু খুলে দিলো । এরপর তৃপ্তির বেগ গুলোর মধ্যে থেকে নীল রঙ্গের একটা থ্রি ফিচ জামা বের করে আগের ড্রেস গুলো খুলে নতুন ড্রেস পরিয়ে দিলো । তৃপ্তিকে ঠিক করে সুয়িয়ে দিয়ে । তার বেগ গুলো থেকে সব জামা কাপর বের করে কাবাডে রকলো মানে ইত্যাদি যত কাজ আছে সব সেরে তৃপ্তির রুম থেকে বেরিয়ে আসলো আমেনা ।

দরজার সামনে ফ্লোরে বসে হাটুতে মুখ গুজে ফুফিয় ফুফিয়ে কেদে যাচ্ছে তৃপ্তি । নিদ্র সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে হাতে ফোন নিয়ে তৃপ্তির রুমের সামনে আসলো । এতপর রুমের দরজা খুলে ভিতরে গেল । দরজা খোলার আওয়াজ সুনে হাটু থেকে মাথা তুলে দরজার দিকে তাকালো তৃপ্তি । নিদ্রকে দেখে বসা থেকে উঠে যাপিয়ে পরলো নিদ্রর বুকে । নিদ্র তৃপ্তিকে এভাবে কাদতে দেখে অবাক হলো ।

:+কি হয়েছে তৃপ্তি ।(নিদ্র)

তৃপ্তি কদতে কদতে আরো একটু শক্ত করে নিদ্রকে জরিয়ে ধরে বললো ।

:+তুমি আমাকে একা রেখে কোথায় গিয়েছিলে । আমি এখানে কিছু চিনি,,,,, না যানি । আমি কিডনাপ হয়ে যাইনি তো । কিডনাপাররা কিন্তু ভালো না প্লিজ আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো । আমি এখানে থাকবো না ।(তৃপ্তি)

নিদ্র তৃপ্তির মাথার পিছনে এক হাত রেখে নিজের বুকের সাথে জরিয়ে নিলো । তৃপ্তির মুখে কিডনাপের কথা সুনে নিদ্রর বুক দুরুদুরু করে উঠলো । সে তার ছোট বেলার সাথি দের হারিয়েছে । কিন্তু তৃপ্তিকে সে কোন মূল্যই হারাতে চায় না । তৃপ্তি ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেদে যাচ্ছে । নিদ্র তৃপ্তির মাথায় আলতো করে একটা চুমু খেয়ে বলল ।

:+ধুর বোকা । তুই কিডনাপ হবি কেন । তোকে কিডনাপ করার সাহস এখান কার কারো নেই । তুই তোর নিজের রুমে আছিস । গাড়িতে ঘুমিয়ে পরেছিলি । তাই তোকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে আসলাম ।(নিদ্র)

তৃপ্তি নিদ্রর বুক থেকে মাথা তুলে নিদ্রর মুখের দিকে তাকালো । নিদ্র তার ডান হাত দিয়ে তৃপ্তির চোখের পানি মুছে দিলো । এরপর তৃপ্তির কপালে একটা চুমু খেয়ে আবার নিজের বুকের সাথে জরিয়ে নিলো ।

:+আমরা বাড়িতে আসলাম কখন ।(তৃপ্তি)

:+দুপুর মনে হয় ২টা বা আরাইটা বাজবে তখন ।(নিদ্র)

:+ওওওও ।(তৃপ্তি)

:+রুমটা পছন্দ হয়নি তোর ।(নিদ্র)

:+পছন্দ তো হয়েছে । কিন্তু এতো বড় রুমে আমি একা থাকতে পারবো না ।(তৃপ্তি)

:+কেন ?(নিদ্র)

:+আমার ভয় করে ।(তৃপ্তি)

:+ভয় কিসের । এখানে কেও আসতে পারবে না । তোদের বাসার থেকে এখানকার রুম গুলো একটু বড় । কিন্তু কোন প্রবলেম হবে না । তুই নিশ্চিতে থাকতে পারিস । (নিদ্র)

:+হুমমম । কিন্তু আমার বেগ গুলো কৈ । দেখছি না যে । আর আমার জামা কাপড় চেঞ্জ করে দিলো কে ।(তৃপ্তি)

:+তোর বেগ গুলো মনে হয় mom আলমারিতে গুছিয়ে রেখেছে । আর তোর জামা কাপড় mom ই চেঞ্জ করে দিয়েছে ।(নিদ্র)

:+ওহ । আমি তো বড় আম্মুর সাথে দেখাই করতে পারলাম না । কাপড় চেঞ্জ করে দেওয়ার কি আছে আমাকে ডেকে দিলে কি হতো ।(তৃপ্তি)

:+এই যে কিউটি । আপনি যে ঘুমিয়ে পরেছিলেন তার আগে বলে ছিলেন আপনার শরীরটা কেমন যেন খারাপ লাকছে । তাই আপনাকে ঘুম থেকে ডাকা হয়নি বুঝচ্ছেন ।(নিদ্র)

:+ভাইয়া তুমি আমাকে আপনি করে বলছো কেন । আর তোমাকে না বলছি আমাকে কিউটি বলে ডাকবে না ।(তৃপ্তি)

:+আমি তো আপনাকে কিউটি বলেই ডাকবো । মাই কিউটি ।(নিদ্র)

এই বলে নিদ্র তৃপ্তিকে নিজে থেকে ছারিয়ে নিলো ।

:+আচ্ছা ভাইয়া এই রুমটা এতো ঠান্ডা কেন ।(তৃপ্তি)

:+এসি চলছে যে তাই ।(নিদ্র)

:+এসি মানে ।(তৃপ্তি)

:+এদিকে আয় আমি তোকে বুঝিয়ে দিচ্ছি ।(নিদ্র)

এই বলে নিদ্র তৃপ্তির হাত ধরে বেডের কাছে নিয়ে আসলো । বেডের এক পাসে এসি রিমোট টা রাখা ছিল । নিদ্র সেটা হাতে নিয়ে তৃপ্তির দিকে বারিয়ে বললো ।

:+এই যে এটা দেখছিস । এটা এসি রিমোট । এই বাটনটা দিয়ে অফ করে । আর এই বাটনটা দিয়ে চালু করে । এটা দিয়ে বারায় । আর এটা দিয়ে কমায় ।(নিদ্র)

রিমোটের বাটন গুলো দেখিয়ে বললো নিদ্র ।

:+ওওও । বুঝলাম । আচ্ছা দরজা খোলে কি করে ।(তৃপ্তি)

:+কিহহ। তুই দরজা খুলতে পারিস না ।(নিদ্র)

:+না । তাই তো আরো ভয় পেয়ে কান্না করে দিয়ে ছিলাম । আমি ভেবে ছিলাম কেও আমাকে কিডনাপ করে এই রুমে আটকে রেখে গেছে ।(তৃপ্তি)

:+আচ্ছা এদিকে আয় আমি তোকে সব বুঝিয়ে দিচ্ছি ।(নিদ্র)

এরপর নিদ্র তৃপ্তিকে একে একে রুমে থাকা সব কিছু কিভাবে কি করতে হবে বুঝিয়ে দিল । রুমের দরজা থেকে সুরু করে ওয়াসরুম প্রজন্ত সব কিছু বুঝিয়ে দিল ।

:+ওওহহ । বুঝলাম । আচ্ছা তুমি এখন যাও আমি ফ্রেশ হয়ে নামায পরবো । আজ তো নামায পরাই হয়নি ।(তৃপ্তি)

:+ঠিক আছে । নামাজ পড়ে নিচে চলে যাস । তোর বড় আম্মু হয়তো নিচে বসে আছেন ।(নিদ্র)

:+আচ্ছা ।(তৃপ্তি)

:+নিচে যেতে পারবি তো ।(নিদ্র)

:+নিচে,,,,,,,।(তৃপ্তি)

:+রুম থেকে বেরিয়ে বাম দিকে সোজা চলে যাবি । গিয়ে দেখবি সিরি আছে । সিরি দিয়ে নিচে নামবি উপরে উঠবি না ওকে ।(নিদ্র)

:+ঠিক আছে।(তৃপ্তি)

নিদ্র রুম থেকে বেরিয়ে এলো । তৃপ্তি ওয়াসরুমে গিয়ে আজু করে বেরিয়ে আসলো । এতপর নামাজে বসে পরলো সে । নিদ্র নিচে এসে দেখলো আমেনা সবে মাত্র নামাজ সেরে উঠে সোফার বসছেন । নিদ্র আমেনার কাছে পিয়ে দারালো ।

:+mom তৃপ্তি ঘুম থেকে উঠে গেছে । এখন নামাজ পরছে । কিছুখন পর নিচে আসবে । কিছু খাইয়ো দিও । ও আবার খালি পেটে থাকতে পারে না ।(নিদ্র)

:+সে না হয় দেবো । কিন্তু তুই কিছু খাবি না ।(আমেনা)

:+না এখন আর কিছু খাবো না । বাহিরে থেকে কিছু খেয়ে নেবো ।(নিদ্র)

:+বাহিরে থেকে খাবি মানে । এখন কি কোথাও যাচ্ছিস নাকি ।(আমেনা)

:+হুম ।(নিদ্র)

:+কোথায় যাচ্ছিস ।(আমেনা)

:+কোথায় আর যাবো । ক্লাবে যাবো ।(নিদ্র)

:+সুন আমি বলি এখন,,,,,,,,,,,,।(আমেনা)

আমেনা আর কিছু বলার আগে নিদ্র তার সামনে থেকে চলে গেল । এরপর বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজের বাইক নিয়ে ক্লাবে চলে আসলো নিদ্র । ক্লাবে এসে দেখলো জেক,রাহুল,সাব্বির,রাশেদ, ক্রাম খেলছে । আর সুজন দারিয়ে তাদের খেলা দেখছে । নিদ্র আসতে করে গিয়ে সুজনের পাসে দারিয়ে তাদের খেলা দেখতে লাগলো ।

:+বাহহ । ভালোই তো আড্ডা যমিয়েছিস তোরা । তা সুনি এই ক্রামটা এখানে আনলো কে ?(নিদ্র)

নিদ্রর কথা সুনে নিদ্রর দিকে তাকালো সবাই । নিজেদের অজান্তেই সুকনো ডোক গিললো পাঁচ জনে । সাব্বির কাপা গলায় বললো ।

:+তু তুই ক কখন এলি ।(সাব্বির)

নিদ্র দু’হাত উচু করে সাপের মতো মোরা মুড়ি দিয়ে বললো ।

:+আগে বল । এই ক্রাম ক্লাবে আনলো কে ।(নিদ্র)

:+দেখ ভাই এই প্রজন্ত তিন’টা ক্রাম ভাঙ্গছিস তুই । তুই খেলতে পারিস না বলে আমাদেরও খেলতে দিবি না ।(রাশেদ)

:+হয় নিদ্র এটা কিন্তু ঠিক না । তুই খেলতে পারিস না বলে আমাদেরও খেলতে দিবি না ।(রাহুল)

:+জেক ।(নিদ্র)

:+আমি কিছু যানি না ।(জেক)

সাব্বির,রাহুল,সুজন,রাশেদ চারো জনে জেকের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো ।

:+হয় ভাই আমি যানি । কে কি যানে আর কে কি যেনে না ।(নিদ্র)

:+দেখ নিদ্র আমি এখন ভালো হয়ে গেছি । ওরা জোর করছিল তাই একটু ওদের সাথে খেলতে লাগলাম ।(জেক)

জেকের কথা সুনে নিদ্র ছারা বাকি চারো জনে খেপে গেল । জেকের উপর হামলা করলো চারোজনে । আসলে ক্রাম আনার প্লেন ছিল জেকের । নিজের টাকায় কিনে এনেছে ক্রাম বোড । অথচ নিজে অস্বীকার করছে ।

:+আরে তোরা থাম বাচ্চাটা মরে যাবে তো ।(নিদ্র)

:+নিদ্র বাঁচা ভাই মরে গেলাম এই সালারা আমারে মাইরা ফালাইলো ।(জেক)

নিদ্র তারাতাড়ি জেকের এক হাত ধরে টান দিয়ে ওদের চারোজনের মধ্যে থেকে বের করে নিয়ে এসলো ।

:+আরে থাম কি করছিস তোরা । বন্ধু মানুষ নাহয় একটু মিথ্যাই বললো ।(নিদ্র)

:+নিদ্র তুই যানিস না । এই সালাই বলছে ক্রাম এনার কথা । নিজের টাকায় ক্রাম কিনে আনছে ।(সুজন)

:+জেক ।(নিদ্র)

:+বড় ভাই ।(জেক)

:+ক্রাম বোডটা কি ভাঙ্গবো ।(নিদ্র)

:+না ভাই ৫ হাজার টাকা জলে চলে যাবে ।(জেক)

:+আচ্ছা ঠিক আছে । এটা এখানে থাকতে পরে । তবে একটা শর্তে ।(নিদ্র)

:+কি বড় ভাই ।(জেক)

:+কাজের সময় কোন রমক খেলা চলবে না । তাহলে কিন্তু,,,,,,,।(নিদ্র)

:+ আর বলতে হবে না । তোর শর্তে আমরা সবাই রাজি ।(সাব্বির)

:+তাহলে এখন এটা তুলে রাখ ।(নিদ্র)

:+কেন।(রাহুল)

:+যেটা বলছি সেটা কর ।(নিদ্র)

সুজন আর রাশেদ মিলে ক্রাম বোড তুলে এক পাসে রেখে দিলো ।

:+এবার বল হঠাৎ চলে এলি যে । কিছু দিন তো থেকে আসতে পারতি ।(রাশেদ)

:+ভালো লাকছিল না ।(নিদ্র)

:+সরি নিদ্র । আমি আসলে বুঝতে পারিনি মেয়েটা হাতের বাধন খুলে দেয়ার পর এমন করবে ।(জেক)

:+আরে তুই সরি বলছিস কেন । আমিই তো তোকে বললাম ওর হাতের বাধন খুলে দেয়ার কথা ।(নিদ্র)

:+দেখ নিদ্র আমরা সব সুনছি জেকের থেকে । জেসিকা মানে তোর ফ্রেন্ড যে পথে,,,,,,,।(সুজন)

:+আরে বাদ দে না । যেটা হয়ে গেছে । সেটা আবার টেনে তুলছিস কেন । নিদ্র তুই এসব কিছু ভুলে যা ।তাহলে দেখবি ভালো থাকতে পারবি নাহলে কষ্ট পাবি অনেক ।(রাহুল)

:+রাহুল ঠিক বলছে । আর এই বিষয় নিয়ে কেও কোন দিন আর কথা তুলবে না ।(সাব্বির)

:+আচ্ছা নিদ্র এখন কোন কাজ আছে কিনা সেটা বল । ক্রাম তুলতে বললি কেন ।(জেক)

:+আমি ওখানে গিয়ে একটা জিনিস বুঝে এসছি ।(নিদ্র)

:+কি জিনিস বুঝলি ওখানে গিয়ে।(সাব্বির)

:+আমাদের নেতা দের কল করে এখানে আসতে বল ।(নিদ্র)

:+আমাদের নেতা মানে । আমাদের নেতা আবার কে ।(জেক)

:+আরে বেটা কলেজ আর ভার্সিটির যত লিডার বানিয়ে রেখেছি । ওদের সব কায়টাকে কল করে আসতে বল ।(নিদ্র)

:+ওওও ।(জেক)

:+কিন্তু কেন ।(সুজন)

:+আগে আসুক তার পর বুঝবি । তারাতারি কল কর ।(নিদ্র)

:+ওকে ।(সুজন)

এরপর সবাই একেক জন একেক জনকে কল করে আসতে বললো ।
৩০মিনিটের মধ্যে সবাই এসে হাজির হলো । এই এরিয়ায় দুটো ভার্সিটি আর তিনটি কলেজ আছে । সব কয়টার লিডার নিদ্র,জেক,রাহুল,সাব্বির,রাশেদ,আর সুজন । সাব্বির, রাশেদ, সুজন এরা দেশে থাকে কম । বিদেশে বাপের ব্যবসা আছে তাই তারা বিদেশেই থাকে । দেশে আসে বছরে এক বার । নিদ্র, রাহুল আর জেকই সব সামলায় । এতপর বৈঠক বসলো । নিদ্র পাসে দারিয়ে আছে জেক, রাহুল, সাব্বির, রাশেদ, আর সুজন ।

:+কি বেপার নিদ্র ভাইয়া । আজ হঠাৎ সবাইকে একযায়গায় করলেন আবার । কোন কারন আছে কি । আর আপনি না দেশের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ছিলেন ।(আবির)

:+বেড়াতে তো গিয়ে ছিলাম । কিন্তু আপনারা যা সুরু করলেন ।(নিদ্র)

:+আমরা আবার কি সুরু করলাম ভাইয়া ।(শিশির)

নিদ্র আদির দিকে একবার তাকালো । আদি মাথা নিচু করে বসে আছে । নিদ্র এবার বলা সুরু করলো ।

:+আমাদের এই সংগঠন কিসের জন্য । যাতে আমাদের কলেজ আর ভার্সিটিতে কোন ছেলে বা কোন মেয়ের কারোর কোন প্রবলেম না হয় । আর কলেজর বাহিরেও একই সিস্টেম । যেখানে কোন ছেলে কোন মেয়েকে টিচ করবে বা তাকে ইভটিজিং করবে সেখানে রুখে দারাবে । কিন্তু আপনারা কি করেন সারাদিন । আপনাদের লিডার নেতা বানানো হয়েছে এজন্য । যে ছেলেরা মেয়েদের ইভটিজিং করে যাবে আর আপনারা তা চুপচাপ দেখে যাবেন ।(নিদ্র)

:+ভাইয়া আপনি কি বলছেন আমরা কিছু বুঝতে পারছি না । আপনি তো এগুলো আমাদের আগেও বলেছেন । আমাদের ছেলে পেলেরা তো মেয়ে দেখলেই মাথা নিচু করে হাটে ।(আবির)

:+হ্যাঁ । সেটা সুধু কলেজ আর ভার্সিটিতে । কিন্তু বাহিরে কি করে । ওই মেয়েদেরই টিচ করছে ।(নিদ্র)

:+না ভাইয়া আমাদের ছেলে পেলেরা এমন না । ওরা সব যায়গায় মেয়ের দেখলে সম্মান করে ।(শিশির)

:+আচ্ছা ঠিক আছে । একটু ভালো করে ওদের বুঝাবে আবার সবাই ।(নিদ্র)

:+ভাই সুধু এজন্যই ডেকেছেন আমাদের ।(ফাহাদ)

:+হুমমম এজন্যই ডেকেছি । দেখলাম তোমাদের এগুলো মনে আছে কিনা ।(নিদ্র)

:+কি যে বলেন না ভাই এগুলো মনে থাকবে না কেন ।(ফাহাদ)

:+আচ্ছা তাহলে তোমরা এখন সবাই চলে যাও । রাত ১০টা বেজে গেছে । আর আদি তুই বস তোর সাথে কথা আছে ।(নিদ্র)

সবাই চলে গেল । এখন সুধু নিদ্র, জেক,রাহুল,সাব্বির,সুজন,রাশেদ, আর আদি আছে ।

:+আচ্ছা তাহলে আমি যাই । তোরাও বাসায় চলে যা ।(নিদ্র)

:+এতো তারাতাড়ি চলে যাবি ।(সাব্বির)

:+তোরা তো যানিস পাপা রাত ১০টার পর বাসায় গেলে পেদানি দেয় ।(নিদ্র)

:+আচ্ছা ঠিক আছে যা তাহলে । আর আদিকে রাখলি কেন ।(সাব্বির)

:+দরকার আছে । আচ্ছা আমি যাই তাহলে । আদি চল ।(নিদ্র)

নিদ্র আদিকে নিয়ে বেরিয়ে আসলো ক্লাব থেকে ।

:+ভাই আমারে মাপ করে দেন । আমি বাধা দিয়েছিলাম ওদের । কিন্তু ওরা সুনেনি ।(আদি)

:+তোর ভাই কোথায় হাত দিয়েছে যানিস । আমার এই কলিজায় হাত দিয়েছে । সুধু তোর দিকে তাকিয়ে সেদিন তোর ভাইকে আমি ছেরে দেই । ও তোর ভাই হয়ে বেচে গেলো নাহলে সেদিন ওর লাস ফেলে দিতাম আমি ।(নিদ্র)

আদি নিদ্রর পা জরিয়ে ধরল ।

:+ভাই আমি আপনার কাছে আমার ভাইয়ের হয়ে আবারো খমা চাচ্ছি । প্লিজ আমার ভাইকে খমা করে দিন । ও সেদিনের পর থেকে এখন ভালো হয়ে গেছে ।(আদি)

নিদ্র আদিকে নিজের পা থেকে ছারিয়ে উঠিয়ে দার করালো ।

:+তোর ভাইকে আমি খমা করে দিয়েছি সেদিনই । কারন আমি যানি তুই তোর ভাইকে ঠিক পথে নিয়ে আসবি ।(নিদ্র)

:+ভাই আমার লিডার সিট কেরে নিয়েন না । নাহলে,,,,,,,,।(আদি)

:+ধুর বোকা । তোর লিডার সিট কেরে নেবো কেন ।
আচ্ছা বাইক নিয়ে আসছিস ।(নিদ্র)

:+নাহ ।(আদি)

:+তাহলে কি করে এলি(নিদ্র)

:+দৌড়ে চলে এসছি । এখান থেকে এখানে আবার বাইক নিয়ে আসবো নাকি ।(আদি)

:+ওওও।(নিদ্র)

:+হুমমমম(আদি)

:+ওহ । তোকে যে জন্য দার করিয়ে রাখছি ।(নিদ্র)

:+কি জন্য ভাই ।(আদি)

:+তোদের কলেজের পিন্সিপেল স্যারের সাথে কথা বলে রাখিস । একটা মেয়ে ভর্তি হবে তোদের কলেজে । কাল বা পরসু আমি তাকে নিয়ে যাবো ।(নিদ্র)

:+মেয়েটা কে ভাই ।(আদি)

:+ওই যে তোর ভাই ইভটিজিং করছিল সে ।(নিদ্র)

:+মেয়েটা আপনার কি হয় ভাই ।(আদি)

:+বলতে পারিস তোদের ভবিষ্যৎ ভাবি ।(নিদ্র)

:+সত্যি তাই নাকি ভাই।(আদি)

:+হুমম । আচ্ছা আমি যাই তাহলে । তুই সাবধানে চলে যাস । আর একথা এখন কাওকে বলিস না। (নিদ্র)

:+আচ্ছা ভাই ।(আদি)

এরপর নিদ্র বাইক নিয়ে চলে আসলো বাসায় । আর আদিও চলে গেল নিজের বাসায় ।

————————————-

রাতে খাবার টেবিলে বসে আছে ফরহাদ, তৃপ্তি, নিদ্র আর আমেনা । আমেনা খাবার বেরে দিছেন ।

:+তা মামুনি বাসা পছন্দ হয়েছে তোমার ।(ফরহাদ)

:+হুম বড় আব্বু খুব পছন্দ হয়েছে । কিন্তু এখন নতুন তো তাই মানিয়ে নিতে একটু প্রবলেম হচ্ছে ।(তৃপ্তি)

:+ওহ । সমস্যা নেই ধিরে ধিরে সব ঠিক হয়ে যাবে ।(ফরহাদ)

:+আমার সাথে থাকবি সারাখন দেখবি সব প্রবলেম দুর হয়ে যাবে । আমি সব সিখিয়ে দেবো তোকে ।(আমেনা)

:+হ্যাঁ বাট সিরিয়াল দেখা সিখিও না mom ।(নিদ্র)

:+নিদ্রঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅ(আমেনা)

:+আরে রাগছো কেন ।(নিদ্র)

:+যাহ আজ তুই মুরগীর রান পাবি না । আজ আমার মেয়েকে আমি খাওয়াবো ।(আমেনা)

:+বাহহহ । আসতে না আসতেই তোমার মেয়ে হয়ে গেল । আর আমি পর হয়ে গেলাম ।(নিদ্র)

:+হ্যাঁ ও আমার মেয়ে হয়ে গেছে । কোন প্রবলেম আছে তোর । তুই তো সব সময় আমার বিরোধীতা করিস ।(আমেনা)

:+mom দাও না প্লিজ আর কোন দিন বিরোধীতা করবো না ।(নিদ্র)

:+না পাবি না । আজ আমার মেয়েকে আমি খাওয়াবো তুই আর পাবি না সর ।(আমেনা)

:+ mom প্লিজ ।(নিদ্র)

তৃপ্তি আর ফরহাদ বসে বসে মা ছেলের কান্ড দেখছে আর হাসছে । এতপর খাবার খেয়ে যে যার রুমে গিয়ে সুয়ে পরলো । আজ আমেনা তৃপ্তির সাথে ঘুমিয়েছেন । কারন তৃপ্তি বলছে তার অনেক ভয় করছে তাই আমেনা তৃপ্তির সাথে ঘুমোচ্ছে । তৃপ্তি আমেনাকে জরিয়ে ধরে সুয়ে আছে ।
আমেনা তৃপ্তির কপানে আলতো করে একটা চুমু খেলেন ।

:+আচ্ছা বড় আম্মু তুমি আমাকে ভালোবাসো ।(তৃপ্তি)

:+কেন । তোর কি মনে হয় ।(আমেনা)

:+আব্বু আম্মু তো আমাকে ভালোবাসে । তুমি আমাকে ভালোবাসো কিনা তাই বলো ।(তৃপ্তি)

:+ভালোবাসার মানে বুঝিস ।(আমেনা)

:+একটু একটু । আব্বু আম্মু আমাকে আদর করে এটাই ভালোবাসা ।(তৃপ্তি)

:+ সুধু আদর করে এটাই ভালোবাসা না । ভালোবাসা অনেক কিছুতে থাকে । হুম আমিও তোকে ভালোবাসি । ঠিক আমার মেয়ের মতো ।(আমেনা)

:+তাহলে এতোদিন আমাদের বাড়িতে যাওনি কেন।(তৃপ্তি)

:+তোর বড় আব্বুর অফিস আর এই বাড়ি সামলানো । অনেক যামেলার মাঝে আছি ।(আমেনা)

:+না এটা সঠিক না । তুমি যদি আমাকে তোমার মেয়ের মতো ভালোবাসতে তাহলে নিশ্চই আমাদের বাড়িতে গিয়ে আমার সাথে দেখা করে আসতে ।(তৃপ্তি)

:+এতোদিন যেতে পারিনি তো কি হইছে । এখন তো একে বারে নিয়ে এসছি আমার কাছে ।(আমেনা)

:+একে বারে মানে আমি কি আর বাড়িতে যাবো না ।(তৃপ্তি)

:+হুম যাবি তো । মানে আমি বলছি । তোর বাকি পড়া লেখা তো এখানে থেকেই শেষ করবি । তাই এই সময় টাতো আমার কাছে থাকবি তাহ না ।(তৃপ্তি)

:+হুমমম ।(তৃপ্তি)

:+আচ্ছা আর বেশি কথা না । এবার ঘুমো ।(আমেনা)

:+ঠিক আছে ।(তৃপ্তি)

এরপর তৃপ্তি আমেনাকে জরিয়ে ধরে সুয়ে পরলো । আর আমেনা তৃপ্তির মাথায় হাত বুলাতে থাকলো । কিছু সময় পর তৃপ্তি ঘুমিয়ে যায় । হাত বুলাতে বুলাতে কখনযে আমেনা ঘুমিয়ে পরেন তিনি নিজেও যানেন না ।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

((কপি করা নিষেধ))

[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here