তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_DaS #পর্ব__________13

0
124

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_DaS
#পর্ব__________13

সামিয়া আর মিমকে বিদায় দিয়ে তৃপ্তি ভয়ে ভয়ে বাড়ির ভিতরে ডুকলো । এরপর তারাতারি দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেল তৃপ্তি । নিদ্র রুমে এসে চেঞ্জ করে খাটের উপর বসলো । কিছু সময় পর নিদ্রর রুমে সালমা আসলো ।

:+কিছু বলবে চাচি আম্মা ।(নিদ্র)

:+বলছিলাম দুপুর তো পেরিয়ে যাচ্ছে খাবে না ।(সালমা)

:+হুম আসছি তুমি যাও ।(নিদ্র)

:+গোছল,,,,,,,।(সালমা)

সালমাকে থামিয়ে দিয়ে নিদ্র বললো ।

:+ভোরে সাওয়ার নিয়েছি এখন আর নেবো না । ভালো লাকছে না ।(নিদ্র)

:+ঠিক আছে, নিচে এসো আমি খাবার দিচ্ছি ।(সালমা)

:+চাচু আসছে ।(নিদ্র)

:+হুম ড্রাইনিং টেবিলে বসে আছে ।(সালমা)

:+আচ্ছা তুমি যাও আমি আসছি ।(নিদ্র)

সালমা নিদ্রর রুম থেকে বেরিয়ে তৃপ্তির রুমে কাছে আসলো । দেখলো তৃপ্তির রুমের দরজা বন্ধ ।

:+তৃপ্তি রুমের দরজা বন্ধ করে রখছিস কেন । খোল ।(সালমা)

তৃপ্তি ভিতর থেকে বললো ।

:+কেন কোন দরকার আছে আম্মু । আমি এখন ঘুমোবো ।(তৃপ্তি)

:+ঘুমোবি মানে । দুপুরে খাবি না । তোর আব্বু নিচে বসে আছে আয় ।(সালমা)

:+আসলে আম্মু আমার খিদে নেই । বাহিরে থেকে খেয়ে আসছি তোমরা খাও, আমি পরে খাবো ।(তৃপ্তি)

সালমা আর কিছু বললো না । ভাবলো নিদ্র বাহিরে থেকে কিছু খায়িয়ে নিয়ে আসছে হয় তো । থাক পরে খাবে । নিদ্র রুম থেকে বেরিয়ে নিচে নামলো । দেখলো বজলুর ডাইনিং টেবিলে বসে খাচ্ছে । সেও গিয়ে বসে পরলো । সালমা একটা প্লেটে খাবার নিয়ে মেখে নিদ্রর মুখের সামনে ধরলো । নিদ্র কিছু না বলে চুপচাপ খেতে লাগলো । বজলুর সালমার উদ্দেশ্য বললো ।

:+খাওয়ার পর সোফার উপর থেকে ঔষধ গুলো নিয়ে, ওখান থেকে দুটো ঔষধ খায়িয়ে দিয়ো ।(বজলুর)

:+আচ্ছা ।(সালমা)

:+তৃপ্তি কৈ দেখছি না যে ।(বজলুর)

:+রুমে সুয়ে ঘুমাচ্ছে । খাবে কিনা বলছিলাম । বললো এখন খাবে না খিদে নেই ।(সালমা)

নিদ্র এবার মুখ খুললো ।

:+খাবে কি করে । পাচ প্লেট ফুচকা যে বাহিরে থেকে খেয়ে আসছে । বারবার বারন করছি তাও সুনেনি ।(নিদ্র)

:+কিহহ । পাঁচ প্লেট । এক প্লেট না,,,দুই প্লেট না । পাচ প্লেট ।(সালমা)

:+হ্যা । আমি একটু কাজে ওর থেকে দুরে গেলাম ।বাচ এই সুজুকে পাচ প্লেট ফুচকা সাবার করে দিলো ।(নিদ্র)

:+এ কারনেই আমি ওকে একা ছারি না । এজন্যই এখন ভয়ে রুমের দরজা লাগিয়ে সুয়ে আছে। (সালমা)

এরপর আবার সবাই নিশ্চুপ । বজলুর বাকি খাওয়া খেয়ে নিজের রুমে চলে গেল । আর সালমা নিদ্রকে খায়িয়ে দিতে লাগলো ।
তৃপ্তি রুমে এসে চেঞ্জ করে নিদ্রর আনা ডল টাকে জরিয়ে ধরে সুয়ার পর থেকে তার পেটে ঘুর ঘুর আওয়াজ হতে লাগলো । তৃপ্তি বিরবির করে বললো ।

:+কি দরকারছিল তৃপ্তি তোর এতো গুলো ফুচকা খাওয়ার । এবার বুঝ ঠেলা । পেটের ভিতর ঠাডা পড়ার মতো আওয়াজ হচ্ছে । নিচ্ছই পেট খারাপ হইছে তোর ।(তৃপ্তি)

বলতে না বলতেই তৃপ্তির পেট মোচর দিয়ে উঠে । সুয়া থেকে উঠে দৌড় দেয় ওয়াসরুমের দিকে ।
নিদ্র খাওয়া শেষ করে ঔষধ খেয়ে রুমে এসে সুয়ে পরলো । তারপর জেককে কল করলো নিদ্র ।

:+কিরে এখন কি করছিস ।(জেক)

:+সুয়ে আছি ।(নিদ্র)

:+হাতের কি অবস্তা এখন ।(জেক)

:+ভালো । ঔষধ খেলাম সবে মাত্র । তুই কি করছিস এখন ।(নিদ্র)

:+কি করবো । তোর ওখান থেকে বাসায় আসতে আসতে ১টা বেজে গেছে । এখন খেয়ে ঘুমোতে যাচ্ছি ।(জেক)

:+আন্টি কিছু বলছে ।(নিদ্র)

:+না ।(জেক)

:+কিহহ । কিছু বলেনি ।(নিদ্র)

:+না বলেনি । কারন আমি সব দোষ তোর ঘারে চাপিয়ে দিয়েছি । এবার ঠেলা সামলা ।(জেক)

:+জেএএক ।(নিদ্র)

:+বায়,,,,,,বায় বেটা ।(জেক)

এই বলে জেক কল কেটে দিলো । নিদ্র ফোন টাকে সাইডে রেখে চোখ বুজে নিলো । জেকের মা একটু অন্য রকম রাগি টাইপের, তবে মন তার বেস ভালো । যদিও জেকের সামনে কিছু বলতে তিনি উলটো নিজে ভয় পান, তবুও ছার দেন না তিনি জেককে । বিরবির বিরবির করে জেকের কানের পোকা বের করে ফেলেন তিনি।
তৃপ্তি সেই কখন ওয়াসরুমে গেল এখনো বেরোনোর কোন নাম নেই । ওয়াসরুম থেকে তৃপ্তি কান্না করতে করতে বলছে ।

:+সালার ফুচকা ওয়ালা, আমি বলছি বলেই কি তোর দিতে হইবো । মানা করতে পারলি না । আবার সামনে পেলে নাক ফাটিয়ে দিবো তোর । সালা উগান্ডা, বান্দরের তিন নাম্বার সন্তান ।(তৃপ্তি)

এই বলে ভে ভে করে ওয়াসরুমে পরে কদতে লাগলো তৃপ্তি । নিদ্র এখন অতল ঘুমে তলিয়ে গেছে । সালমা রুমে এসে একটু সুয়ে পরলেন । সারাদিন কাজ করে হাপিয়ে গেছেন তিনি । বজলুর কিছু খন আগে আবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন । চেয়ারম্যান মানুষ কার কি সমস্যা সেটা দেখতে হয় । বাড়িতে থাকতে পারেন না তিনি বেসিখন । সজিব সকালে স্কুলে গেছে এখনো আসেনি । আসবে বিকেল ৪টা বাজে ।
একটু ভালো বোধ হওয়ায় ফ্রেশ হয়ে ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে আসলো তৃপ্তি । হেলতে দুলতে খাটের কাছে গিয়ে ধপাস করে ডল টাকে জরিয়ে ধরে সুয়ে পরলো । আর মুখে ফুচকা ওয়ালার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলো ।

:+সালা বিরালের নাতি । হাসের বাচ্চা । কুকুরের তিন নাম্বারের নাতি । আর কি আছে । ও হ্যা । শিয়ালের পাচ নাম্বার বউয়ের চব্বিশ নাম্বার নাতি ।(তৃপ্তি)

এসব আন বান বলতে বলতে ঘুমিয়ে পরলো তৃপ্তি । শরীর খুব দুর্বল হয়ে গেছে তার । বিকেল চারটায় বাড়িতে আসলো সজিব । সাথে তৃপ্তির ফ্রেন্ড মিমও আসছে সামিয়া আসেনি । সালমা নিচে বসে ফোনে তার ভাইয়ে বউয়ের সাথে কথা বলছিল । সজিব বাড়ির ভিতরে ডুকে নিজের রুমে চলে গেল । আর মিম সালমার কাছে আসলো । সালমার সেদিকে কোন খেয়াল ছিল না । সালমা কল কেটে দিয়ে সামনে তাকাতেই দেখলো মিম দারিয়ে আছে ।

:+আরে তুমি কখন এলে ।(সালমা)

:+এই তো আন্টি সবে মাত্র ।(মিম)

:+ওওও ।(সালমা)

:+সজিব ও আসছে । রুমে গেল এখন ।(মিম)

সালমা বসা থেকে উঠে দারালো ।

:+আন্টি তৃপ্তি কৈ ।(মিম)

মিমের মেন উদ্দেশ্য নিদ্রর সাথে দেখা করা । কিন্তু সে তৃপ্তির উছিলা দিয়ে এটা থেকে এরিয়ে বাচতে পারলো ।

:+সেই দুপুরে বাহিরে থেকে আসার পর থেকে । রুমে গিয়ে যে দরজা বন্ধ করছে এখনো খোলেনি ।(সালমা)

:+আচ্ছা আমি দেখি ।(তৃপ্তি)

:+তুমি তো ওদিকে যাবে । সজিবকে বলো তারাতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে আসতে । আমি খাবার দিচ্ছি ।(সালমা)

:+আচ্ছা ।(মিম)

এই বলে মিম দোতলায় চলে গেল । আর সালমা কিচেনে । মিম দোতলায় এসে সজিবের রুমে গিয়ে সজিবকে ফ্রেশ হয়ে নিচে যেতে বলে । তারপর তৃপ্তির রুমের দিকে পা বারালো । একটা রুমের সামনে গিয়ে থেমে গেল মিম । রুমের দরজা হালকা চাপানো ছিল তাই ধাক্কা দিতেই খুলে গেল । খাটের উপর সুয়ে আছে নিদ্র । কাল রাতের ঘুম তাকে গভির ভাবে আঘাত করে অতল ঘুমে তলিয়ে রেখেছে । নিদ্রকে এভাবে ঘুমাতে দেখে মিম একটা মুচি হাসি দিলো । তারপর তার রুমের ভিতরে গিয়ে দরজা হালকা চাপিয়ে আসতে আসতে নিদ্রর খাটের পাসে গিয়ে দারালো মিম ।

+—————————+

:+ভাই এই মিমকে না রাখলে হয় না ।(রনি)

:+কেন ? (আরিয়ান)

:+এ আবার সেড ইস্টুরির এন্ট্রি দিতে পারে ।(রনি)

:+সালা তুই চুপচাপ সুন, নাহলে কিন্তু আমি আর বলবো না ।(আরিয়ান)

:+সরি ভাই মাপ কর । ঠিক আছে তুই বলতে থাক আর কিছু কমু না ।(রনি)

:+হুম ।(আরিয়ান)

+——————————-+

মিম পিছনে দু’হাত দিয়ে নিদ্রর খাটের কাছে এসে দারালো । তারপর মনে মনে বললো ।

:+তুমি যতই অন্য কাওকে মন দিয়ে থাকো না কেন । আমি তো তার থেকে ছিনিয়ে এনে আমার করে নেবোই সেটা । আমার বাধা হয়ে দারাতে চেয়েছিল সামিয়া । কিন্তু কি যেন মনে করে সে সরে গেল । আর বলে গেল আমি তোমাকে পটাতে পারলে আমার করে নিতে । আমি সেটাই করবো ।(মিম)

এরপর মিম একটা দুষ্টু হাসি দিলো । নিদ্রর দিকে একটু যুকে আবার সোজা হয়ে দারালো মিম । তার হার্টবিট দুপদুপ করতে লাগলো । অবশেষে নিদ্রর দিকে যুকে তার দু’চোখে চুমু খেলো মিম । তারপর তারাতাড়ি সোজা হয়ে দারালো । তার বুকের হার্টবিট আরো জোরে দুপদুপ করতে লাগলো । মিম বুকের বা পাসে ডান হাত রেখে মনে মনে বললো ।

:+অল ইজ ওয়েল মিম । এতোটুকু সাহস করেছিস এতেই এনাপ বাকিটা পরে । কন্ট্রোল,,,,,কন্ট্রোল ।(মিম)

কিন্তু মন কি আর মানে । শেষ চান্স টা নিয়েই ফেললো । বুকের বা পাসে ডান হাত রেখে লজ্জা যনিত মুখ নিয়ে নিদ্রর ঠোঁটের দিকে এগিয়ে গেল মিম । শেষ চুমুটা খেয়েই ফেললো । এরপর তারাতাড়ি সরে এসে । নিদ্রর রুম থেকে বেরিয়ে আসলো মিম । নিদ্রর কোন হুস নেই । কাল রাতের ঘুম আর শরীর দুর্বলের কারনে গভির ঘুমে আচ্ছন্ন নিদ্র । মিমের মন এখন ফুর ফুরে । মিম নাচতে নাচতে তৃপ্তির রুমে সামনে এসে দারালো । তারপর দরজা থাপ্পড়াতে থাপ্পড়াতে চিৎকার দিয়ে ডাক দিলো ।

:+তৃপ্তিইইইইইইইই ।(মিম)

কারো চিৎকারের আওয়াজ সুনে ধরফরিয়ে উঠে বসলো তৃপ্তি । কিন্তু চোখ তার বন্ধ । কান খারা করে বুঝার চেস্টা করলো কে ডাকছে । মিমের গলার আওয়াজ সুনে আসতে আসতে খাট থেকে নেমে হেলতে দুলতে রুমের দরজা খুলে দিলো । দরজা খুলতেই মিম রুমের ভিতরে এসে রুমের দরজা লাগিয়ে দিলো । খুশিতে তৃপ্তির দিকে ঘুরতেই তৃপ্তি মিমের বুকে মাথা রাখলো ।

:+বেস্টু আমি শেষ ।(তৃপ্তি)

মিম অবাক হয়ে বললো ।

:+কি হয়েছে’রে তোর ।(মিম)

:+সালার ফুচকা ওয়ালা । আমারে মারছে । ওয়াসরুম আর খাট এখন আমার ঠিকানা করে ছারছে ।(তৃপ্তি)

:+হা হা হা । তোকে তো আগেই বারন করছিল । কিন্তু তুই সুনিস নি এখন বুঝ মজা ।(মিম)

:+আমারে বাচা বেস্টু ।(তৃপ্তি)

:+এখন কি হয়েছে সেটা বল ।(মিম)

:+তোদের দুই চুন্নির নজর লেগেছে । পেট অনেক বেথা করতেছে ।(তৃপ্তি)

:+এদিকে আয় ।(মিম)

এরপর মিম তৃপ্তিকে খাটে সুয়িয়ে দিলো । তৃপ্তি ও আর কোন কিছু বললো না । শরীর দুর্বলের কারনে কিছু বুঝতে পারছে না তৃপ্তি । মিম তৃপ্তির রুম থেকে বেরিয়ে নিচে আসলো । সালমা সজিবকে খায়িয়ে দিচ্ছেন । মিম ডাইনিং টেবিলের সামনে এসে সালমাকে বললো ।

:+আন্টি তৃপ্তির শরীর খারাপ করছে ।(মিম)

মিমের কথা সুনে অবাক হয়ে মিমের দিকে তাকালো সালমা । সজিব মুখে খাবার চিবোচ্ছে । সালমা বললো ।

:+মানে ।(সালমা)

:+মানে দুপুরে আসর পর থেকে ওর পেটে বেথা সুরু হইছে । আজ পাচ প্লেট ফুচকা খাইছে তাই এমন হইছে ।(মিম)

পাচ প্লেট ফুচকার কথা সুনে সজিবের মুখ হা হয়ে গেল । মুখ থেকে খাবার প্লোরে পরে গেল । সালমা আর মিম সজিবের দিকে তাকালো । সালমা মিমকে চোখে কি যেন ইসারা করলো । কিন্তু লাভ হলো না । ছোট সজিবের মাথায় এতো খনে ডুকে গেছে সব ।

:+আমি আগেই যানতাম আপুরা আজ ভাইয়াকে নিয়ে ঘুরতে যাবে । তাই ইস্কুলে যেতে চাইনি । আর আম্মু তুমি আমাকে মিথ্যা বলে ইস্কুলে পাঠালে । খাবো না আমি ।(সজিব)

এই বলে চেয়ার থেকে নেমে হাটা ধরলো সজিব । সালমা খাবার হাতে মিমের দিকে অসহায় দিষ্টিতে তাকলো । মিম তারাতাড়ি সজিবের হাত ধরে বললো ।

:+আরে তুই ভুল বুজচ্ছিস আমরা ঘুরতে যাইনি । আমরা আজ আমাদের স্কুলে গেছিলাম । ওখানে বারেক কাকার দোকানে আমরা ফুচকা খাইছি ।(মিম)

:+না এটা মিথ্যা আমি সব বুঝি বঝচ্ছো । ছারো আমার হাত ।(সজিব)

:+আরে ভাই তুই বুঝতে পারছিস না । আমি সত্যি বলছি । আচ্ছা আমি যদি মিথ্যা বলি তাহলে তুই তোর বড় ভাইকে জিগেস করিস যা ।(মিম)

:+ঠিক আছে । আমি ভাইয়া কেই জিগেস করবো । ভাইয়া যদি বলে তোমরা ঘুরতে গেছ তাহলে তোমাদের খবর আছে ।(সজিব)

:+ঠিক আছে ভাই পরে খবর করিস । এখন খা। (মিম)

সজিব আর কথা না বলে খেতে লাগলো । সজিবকে খাবার খাওয়ানোর পর রুমে পাঠিয়ে দিলো সালমা । তারপর তৃপ্তির রুমে আসলো । মিম আগে চলে এসছিল তৃপ্তির রুমে । সালমা তৃপ্তির পাসে বসে তার মাথায় হাত রাখলো । তৃপ্তি আবার ঘুমিয়ে গেছে এতোখনে ।

:+আন্টি আমি চলে যাই । সন্ধা নামলো বলে ।(মিম)

:+আচ্ছা ।(সালমা)

মিম চলে গেল চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে । তৃপ্তি কিছুখন পর চোখ খুলে সালমাকে দেখে ভয় পেয়ে গেল ।

:+আম্মু আর কোন দিন এমন ভাবে খাবো না প্রোমিজ । এবারের মতো মাপ করে দাও ।(তৃপ্তি)

:+শরীর খারাপ হইছে । বললি না কেন । আমি কি মারতাম তোকে ।(সালমা)

সালমার নরম কথা সুনে সালমার কোমর জরিয়ে ধরল তৃপ্তি ।

:+এখন কমছে পেট বেথা ।(সালমা)

:+একটু কমছে ।(তৃপ্তি)

:+দ্বারা ঔষধ নিয়ে আসছি ।(সালমা)

:+না ঔষধ লাগবে না । আমি এখন ঠিক আছি ।(তৃপ্তি)

:+বেসি কথা বলিস না । আমি আসছি ছার ।(সালমা)

সালমা তৃপ্তিকে নিজে থেকে ছারিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল । কিছুখন পর এক প্লেট ভাত আর পানির গ্লাস ঔষধ নিয়ে হাজির হলো । তৃপ্তি এসব দেখে বললো ।

:+আম্মু আমি এখন ভাত খাবো না । ভালো লাকছে না ।(তৃপ্তি)

সালমা তৃপ্তির কথা না সুনে । হাতের প্লেটটা তৃপ্তির পরার টেবিলের উপর রেখে । গ্যাস্টিকের টেবলেট পাতা থেকে একটা টেবলেট খুলে হাতে নিয়ে তৃপ্তির কাছে আসলো ।

:+ এটা খেয়ে নে ।(সালমা)

:+এটা কি আম্মু ।(তৃপ্তি)

:+ঔষধ ।(সালমা)

:+না আমি এটা খাবো না । এটা দেখতে কেমন যেন ।(তৃপ্তি)

:+গ্যাস্টিকের টেবলেট দেখতে এমনি হয় ।(সালমা)

:+আমি,,,,, ।(তৃপ্তি)

:+কথা কম । তারাতাড়ি খা । না হলে এখন পিটুনি খাবি বাদর মেয়ে ।(সালমা)

চোখ রাঙ্গিয়ে ধমক দিয়ে বললো সালমা । ধমক খেয়ে তারাতাড়ি ঔষধ খেয়ে নিলো তৃপ্তি । তারপর সালমা ভাত মেখে তৃপ্তিকে খায়িয়ে দিতে লাগলো আর তৃপ্তি খেতে লাগলো । তৃপ্তি বুঝে গেছে এখন সালমার কথা না সুনলে নিচ্চিত মার খাবে । খাবার খাওয়ানো শেষ করে সালমা তৃপ্তিকে বললো ।

:+কিছুখন পর আযান দিবে । অজু করে নামাজ পরে নিস । দুপুরে তো নামাজ পরলি না আজ ।(সালমা)

এই বলে সালমা রুম থেকে চলে গেল । তৃপ্তি আরো কিছু খন সুয়ে রইলো । আজানের শব্দ সুনে সুয়া থেকে উঠে ওয়াসরুমে চলে গেল তৃপ্তি ।
নিদ্র ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামলো । নামাজ ছেরেছে আজ পাচ বছর হয়েছে । নিচে সোফার উপর বসে সজিবের সাথে টিভি দেখতে লাগলো নিদ্র । তৃপ্তি নামাজ শেষ করে নিচে নামলো । নিচে নেমে দেখলো নিদ্র আর সজিব সোফার উপর বসে আছে । এটা দেখে তৃপ্তি তারাতাড়ি আবার সিরির দিকে পা বারালো । কিন্তু লাভ হলো না । নিদ্র দেখে ফেললো । ধমক দিয়ে তৃপ্তিকে ডাক দিলো নিদ্র ।

:+এই এদিকে আয় ।(নিদ্র)

নিদ্রর ধমক সুনে দারিয়ে গেল তৃপ্তি । পিছনে ঘুরে সুকনো ডোক গিলে নিদ্রর দিকে তাকালো ।

:+এদিকে আসতে বলছি না ।(নিদ্র)

তৃপ্তি তারাতাড়ি নিদ্রর কাছে এসে দারালো । নিদ্র হাত দিয়ে তার পাসে বসতে বললো । তৃপ্তিও চুপচাপ বসে পরলো ।

:+এতো খন কৈ ছিলি দেখলাম না যে ।(নিদ্র)

:+রুমে সুয়ে ছিলাম ।(তৃপ্তি)

:+শরীর খারাপ হইছে নিচ্ছই তাই না ।(নিদ্র)

তৃপ্তি মাথা নিচু করে ফেললো । নিদ্র তৃপ্তির দিকে ঘুরে বসে বললো ।

:+আমি বারন করছিলাম কি না ।(নিদ্র)

:+হুমমম ।(তৃপ্তি)

:+তাহলে সুনলি না কেন ।(নিদ্র)

:+অনেক দিন পর ফুচকা দেখে লোভ সামলাতে পারিনি ।(তৃপ্তি)

:+ওওও । তার মানে তোমরা সত্যি ঘুরতে গেছিলে । আম্মু আমারে আবার মিথ্যা কথা বলছে । আর সাথে ওই চুন্নি টাও । আবার আসুক আমাদের বাড়ি তারপর দেখাবো মজা । সাতচুন্নি একটা ।(সজিব)

নিদ্র আর তৃপ্তি সজিবের দিকে তাকালো । সজিব মুখ কালো করে টিভির দিকে তাকিয়ে বসে রইলো ।

:+এখন কেমন লাকছে ।(নিদ্র)

:+একটু বেটার ফিল হচ্ছে ।(তৃপ্তি)

এরপর নিদ্র সজিবকে নিজের কাছে টেনে এনে বললো ।

:+আমার ছোট ভাইটা বুঝি রাগ করছে ।(নিদ্র)

:+কথা বলবো না তোমাদের সাথে যাও ।(সজিব)

:+আচ্ছা কাল তো শুক্রবার কাল তোকে নিয়ে ঘুরতে যাবো ।(নিদ্র)

:+সত্যি কাল ঘুরতে যাবে ।(সজিব)

:+হুম পিচ্চি ।(নিদ্র)

”””””””””””””””””””””””””””””””””

রাতে খাবার পর সবাই সবার রুমে চলে গেল । নিদ্র নিজের রুমে গিয়ে ফোন হাতে নিয়ে আবার বজলুর আর সালমার রুমের সামনে আসলো ।

:+আসবো চাচু ।(নিদ্র)

বজলুর খাটে বসে ছিল আর সালমা ডেসিং টেবিলের সামনে । নিদ্রর কথা সুনে দরজার দিকে তাকালো দু’জনে ।

:+ আয় । এতে আবার অনুমতি লাগে ।(বজলুর)

নিদ্র রুমে ভিতরে এসে বজলুরের সামনে দারালো ।

:+কিছু বলবি ।(বজলুর)

:+হুম । আমি যেই জন্য এখানে আসলাম ।(নিদ্র)

বজলুর কিছুটা অবাক হয়ে বললো ।

:+কি জন্য ।(বজলুর)

:+mom তোমাদের কিছু বলেনি ।(নিদ্র)

:+কৈ কিছু তো বলেনি সুধু বলছে তুই আসবি ।(বজলুর)

:+তৃপ্তিকে যে সাথে নিয়ে যেতে বলছে, এই বেপারে কিছু বলেনি ।(নিদ্র)

:+মানে তৃপ্তিকে কৈ নিয়ে যেতে বলছে ।(সালমা)

:+ঢাকায় । আম্মু বলছে তৃপ্তিকে নিজের কাছে রেখে পরা লেখা করাবে । এখানে তো কলেজ অনেক দুরে তাই ।(নিদ্র)

:+না আমি ওকে ঢাকায় পাঠাবো না ।(সালমা)

:+আরে চাচি আম্মা তুমি বুঝার চেস্টা করো । তোমাদের এখান থেকে কলেজ যেতে সময় লাগে ১ঘন্টা । আর আমাদের বাসা থেকে কলেজ মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা ।(নিদ্র)

:+কিন্তু ওকে সামলাবে কে । একা ছারলে কিছু না কিছু ঘটায় ও । আজ তো তুমি নিজে চোখে দেখলে । এখানে ওর ফ্রেন্ডরা আছে তাই আমি একটু নিচিন্তে থাকতে পারি । ওখানে গেলে যদি কিছু করে বসে ।(সালমা)

:+চাচি আম্মা তুমি এতো ভয় পাও কেন আমি তো আছি । আর mom তো ওর খেয়াল রাখবে । এমন তো না যে আমরা ওখানে কেও নেই । আর আমি ওখানে এখন সেটেল আছি । ওর দিকে তো কেও চোখ তুলে তাকাতেই পারবে না ।(নিদ্র)

:+কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছি ওন্য কিছু । ও যদি ঢাকা গিয়ে আবার জেসিকার মতো,,,,,,।(সালমা)

বজলুর চোখ বড় বড় করে সালমার দিকে তাকালো । নিদ্র মন খারাপ হয়ে গেল । অন্য দিকে ঘুরে চোখে আসা পানি মুছে সান্ত কন্ঠে বললো ।

:+সরি চাচি আম্মা ।(নিদ্র)

তারপর নিদ্র ফোন অন করে আমেনাকে কল করে খাটের উপর রাখল । এরপর বললো ।

:+mom কে কল করছি । তোমরা তার সাথে কথা বলো, আমি যাই । কথা শেষ হলে ফোন’টা রুমে পাঠিয়ে দিও ।(নিদ্র)

এই বলে নিদ্র তাদের রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে আসলো । দরজা লাগিয়ে দু’চোখের জল ছেরে দিয়ে প্লোরে বসে পরলো নিদ্র । অতিতকে যত দুরে রাখতে চাচ্ছে ততই অতিত তাকে আরো ঘিরে ধরছে । না এখানে আর বেসি দিন থাকা যাবে না । কষ্ট তাকে ঘিরে ধতে চাচ্ছে চারি দিক থেকে মনে হচ্ছে ।
বজলুর একটু সালনার দিকে তাকিয়ে নিদ্রর ফোন হাতে নিলো । দেখলো আমেনা কল রিসিপ করছে ।

:+আসসালামুওয়ালাইকুম ভাবি । কেমন আছেন ।(বজলুর)

:+ওয়ালাইকুমআসসালাম আমি ভালো আছি তোরা কেমন আছিস ।(আমেনা)

:+আমরাও ভালো আছি ।(বজলুর)

:+তা হঠাৎ নিদ্রর ফোন দিয়ে কথা বলছিস কেন । তোর ফোনের কি হইছে ।(আমেনা)

:+না ভাবি আমার ফোনের কিছু হয় নাই । তুমি নাকি তৃপ্তিকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলছো ।(বজলুর)

:+ও হ্যা আমি তো বলতেই ভুলে গেছি । তোদের ওখান থেকে তো কলেজ অনেক দুর তাই আমি নিদ্রকে বুঝেয়ে পাঠিয়েছি যাতে ও তৃপ্তিকে এখানে নিয়ে আসে । এখানে কলেজ একে বারে আমাদের বাসার পাসে বলতে গেলে । নিদ্র তো যেতেই চাচ্ছিলো না । অনেক বুঝিয়ে পাঠিয়েছি । আর কাল যে এতো কিছু হবে । এটা যানলে আমি ওকে সত্যি পাঠাতাম না । সারাদিন একা বাসায় থাকি ভালো লাগে না । তাই ভাবলাম মেয়েটাকে এখানে নিয়ে আসি । ওর পরা লেখার সুবিধা হলো আর আমার একা কিত্র সময়টাও কাটানোর জন্য একটা মেয়ে পেয়ে গেলাম । তোর ভাই তো সারাদিন অফিস অফিস বলে বেস্ত থাকে এখন । আর নিদ্র তো সারাদিন বাসার বাহিরে থাকে ।(আমেনা)

:+কিন্তু ভাবি ওকি ঢাকা যাবে । আর ওর বাচ্চামো সভাব গুলো সামলাতে পারবে না ।(বজলুর)

:+ও আসবে না মানে । ওকে তুই সুধু একবার বল । তোর বড় আম্মু তোকে ঢাকা যেতে বলছে । দেখবি কেমন নাচা নাচি সুরু করে আসার জন্য । আর ওর বাচ্চামো সভাবের কথা বলছিস । এখানে এলে আমি ওর সব সভব পালটে দেবো ।(আমেনা)

:+আচ্ছা তুমি সালমার সাথে কথা বলো ।(বজলুর)

বজলুর সালমার দিকে হাত বারিয়ে ফোন দিলো । সালমা বজলুরের হাত থেকে ফোন নিয়ে বললো ।

:+আসসালামুওয়ালাইকুম আপা কেমন আছেন ।(সালমা)

:+এই তো ভালো তুই কেমন আছিস ।(আমেনা)

:+আমিও ভালো আছি । আপা তৃপ্তির বেপার কি যেন বলছিলেন ।(সালমা)

:+বলছিলাম মেয়েটাকে এখানে পাঠিয়ে দে । আমি ওকে আমার কাছে রেখে পরা লেখা করাবো । এখান থেকে কলেজ একে বারে কাছে ।(আমেনা)

:+কিন্তু আপা ওকে ছারা আমি থাকতে পারবো না ।ওর কিছু হলে আমি ঠিক থাকতে পারবো না ।(সালমা)

:+মেয়েকে কি বিয়ে দিবি না । তখন থাকবি কি করে । আর ওর কিছু হবে মানে । আমরা কি মরে গেছি নাকি । তুই,,,,,। আচ্ছা তুই কি জেসিকার বিসয় নিয়ে ভয়ে আছিস ।(আমেনা)

:+আপা,,,,,,,।(সালমা)

:+আমি তোকে বলছি ওকে আমি সব সময় আমার চোখে চোখে রাখবো । জেসিকা ছিল আমার থেকে দুরে তাই আমি ওকে চোখে চোখে রাখতে পারিনি । ওই মেয়ের জন্য তুই আমার ফুলের মতো মেয়েকে সন্দেহ করে বাসায় আটকে রাখিস না ।(আমেনা)

:+আচ্ছা আপা আমি ওর সাথে কথা বলি । ও যদি বলে যাবে তাহলে আর আমি বাধা দেবো না ।(সালমা)

:+আচ্ছা তাহলে এখন আমি রাখি ।(আমেনা)

:+ঠিক আছে ।(সালমা)

আমেনা কল কেটে দিলো । সালমা বসা থেকে উঠে ফোন হাতে নিয়ে নিদ্রর রুমের দিকে পা বারালো ।
নিদ্র কপালে হাত রেখে খাটে সুয়ে আছে । পুরোনো দিনে বন্ধুদের সাথে আড্ডা মাস্তি ফান সব নিয়ে ভাবছে এখন নিদ্র । আর দু’চোখ দিয়ে জল গরিয়ে পরছে । হঠাৎ সালমার রুমে আগমনে নিদ্র তারাতাড়ি চোখে পানি মুছে উঠে বসলো । কিন্তু চোখের পানি মুছলে কি হবে । ধরা তো খেলোই সালমার হাতে ।

:+কথা হয়েছে চাচি আম্মা ।(নিদ্র)

:+তুমি কাদছিলে ।(সালমা)

:+আরে না কাদবো কেন ।(নিদ্র)

:+লুকিয়ে লাভ নেই আমি দেখেছি । আচ্ছা সরি আমি আসলে ওভাবে বলতে চাইনি । একটা মাত্র মেয়ে আমার বুঝতেই পারছো । সব সময় চোখে চোখে রাখি আমি । ওর কিছু হলে আমি ঠিক থাকতে পারবো না ।(সালমা)

:+বুঝচ্ছি । বাট ওকে mom সামলাবে । আর আমি তো থাকবোই । মানুষ একবার ভুল করে দু’বার ভুল করে । কিন্তু বারবার না । আসলে কি যানো চাচি আম্মা । যাদের মেয়ে নেই তারা বুঝে মেয়ের মরর্ম ।(নিদ্র)

:+হুমমম । বুঝচ্ছি ।(সালমা)

:+এখন mom কি বলছে ।(নিদ্র)

:+বলছে তোমার সাথে তৃপ্তিকে পাঠিয়ে দিতে । আমি বলছি ও যদি যেতে চায় তাহলে আমি আর বাধা দেবো না ।(সালমা)

:+ওওও।(নিদ্র)

:+আচ্ছা আমি যাই । তুমি ঘুমাও । রাত অনেক হইছে ।(সালমা)

নিদ্র আর কিছু বললো না । সালমা রুম থেকে চলে গেল । নিদ্রও সুয়ে পরলো ।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

((কপি করা নিষেধ))

[বি.দ্র: ভুল ত্রুতি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here