Selfish – (Part:04)

0
420

গল্প :- #Selfish
পর্ব :- ০৪
Writer :- Kabbo Ahammad
.
.
.
-:–আচ্ছা তোরা বলতো আমাদের কলের সব চাইতে সুন্দরি মেয়ে কে???

–কে আবার আমাদের মিরা। আর তুই কি চোখেও দেখিস না ওর আগে পিছে কত বড় লোকের ছেলেরা ঘুরঘুর করে। (ওর এক বান্ধবী)

–ঐ থাম থাম শুধু কি বড়লোকের ছেলেরাই
আমাদের কলেজে যতো ছেলে আছে সবারি একই অবস্থা।
(ওদের মধ্যে অন্য একজন)

–নারে আমার তো মনে হয় না। আমাদের মিরা আমাদের এই কলেজের সব ছেলেদের ক্রাস আর সব চাইতে বেশী সুন্দরী।(নীলা)

–ঐ কানার বৌ কানি।
মনে হয় আজ সকালে তুই বুড়ীগঙ্গঅর পানি দিয়ে তোর চোখ ধুয়েছিস। আর না হয় তোর মাথার ঠিক নেই।
জানিস না মিরা যদি শুধু একবার………(রিয়া)

–ঐ থাম আর শোন আমার মাথা ঠিক আছে।আচ্ছা তোরা একটা জিনিস খেয়াল করেছিস।(নীলা)

–কী (সবাই একসাথে)
(ওদের এসব কথা শুনে মিরা শুধু হাসতেছে)

–বেশী কিছু না তোরা কি জানিস আমাদের কলেজের এমন একজন বান্দা আছে যে আজ পর্যন্ত আমাদের কলেজের কোন মেয়ের দিকেই ভালে করে তাকিয়ে পর্যন্ত দেখে নাই। আর মিরাকে তো মনে হয় আরো একদম ই দেখতেই পারে না।(নীলা)

–ঐ তোর আজাইরা পেচাল বন্ধ কর।(রিয়া)

–ঐ সালি কি বললি আমি আজাইরা পেচাল পারছি।(নীলা)

–তা নয়তো কি?
ঐ তোরাই বল আমি কি কিছু ভুল বললাম। (বাকি মেয়েদের উদ্দেশ্য করে বললো রিয়া)

–না তুই তো…একদম ঠিক বলেছিস।
(রিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলছে অন্যান্য বান্ধবীরা)

–ঠিক আছে মানলাম আমিই ভুল আর তোরা সবাই ঠিক। কিন্তু সবাই একবার ভেবে দেখতো আমার ক্ষেত বাবু কাব্যর কথা।(নীলা)

–ওর কথা ভেবে আমরা কি করবো?
আমাদের কি আর কোন কাজ নেই যে ঐ ক্ষেত মার্কা ছেলের কথা ভাববো। (সবাই এক সাথে)

–তোদের সময় কে নষ্ট করতে বলছে?
আচ্ছা একটু ভেবে দেখতো আমাদের ক্ষেত বাবু আজ পর্যন্ত কোন মেয়ের দিকে তাকিয়ে দেখেছে?

আর আমাদের কথা ছাড়..
যেখানে মিরার মত বড় লোক আর সুন্দরি মেয়ের সামনে পিছনে আমাদের কলেজের সব ছেলে ঘুড় ঘুড় করে।
সেখানে আমাদের ক্ষেত বাবু তো ওর দিকে ভুল করেও তাকায় না।

আর তাই আমার তো মনে হয় মিরাও আমাদের মত আর দশ পাঁচ টা সাধারন মেয়ের মতই। (নীলা)
.
.
.
–ঐ নীলার বাচ্চা তোর তো সাহস কম না তুই আমার সামনে থেকে আমাকেই বলছিস যে আমি আর দশ পাঁচ জন সাধারন মেয়ের মত।
(রেগে গিয়ে বললো মিরা)

–তা নয়তো কি।
তুই যদি আমাদের মধ্যে সত্যি সত্যি সবচেয়ে বেশী সুন্দরি হতি। তাহল ঐ ক্ষেত বাবু এতদিনে তোর প্রেমে হাবুডুবু খেতো। (নীলা)

–:ঐ হারামি চুপ কর।
তা না হলে কিন্তু তোরে আজকে আমি…(মিরা)

–তুই কিছুই করতে পারবি না।
যদি পারিশ তাহলে ঐ ক্ষেত বাবুকে তোর রুপের প্রেমে আর প্রেমের জ্বালেয়ে ফাসিয়ে দেখা।(নীলা)

–:ঠিক আছে ওকে যদি আমি যদি ২মাসের মধ্যে আমার প্রেমের জ্বালে না ফাসিয়েছি তাহলে আমার নামও মিরা নয়।

–মিরা তুই আর একবার ভেবে দেখ। পরে যেন বলিশনা….(নীলা)

–: মিরার ভাবাভাবি শেষ ওকে আমি আমার প্রেমের জ্বালে ফাসিয়েই ছারবো।(মিরা)

–যদি না পারিশ কি করবি?? (নীলা)

–: মিরা পারেনা এমন কোন কাজ নেই।
আর যদি সত্যি না পারি তাহলে তোরা যা খেতে চাইবি তোদেরকে আমি তাই খাওয়াব। আর যদি পারি তাহলে কিন্তু তোকে আমাদের সবাইকে খাওয়াতে হবে।(মিরা)

–ওকে ডান।(নীলা)

–ডান।
আর চোখ খুলে দেখতে থাক এই মিরার খেলা সরি মিরার প্রেমের খেলা।

(আর এদিকে ওদের কথাবার্তা শুনে আমার মনে মেয়েদের প্রতি ঘৃনা আরো দ্বিগুণ বারতে থাকে।
এই মেয়েরা আসলে কি ভাবে নিজেকে?
তাদের আল্লাহতালা সুন্দর করে পূথিবীতে পাঠিয়েছে বলে কি তারা তাদের সৌন্দর্যের অহংকারে যা খুশি তাই করবে।
তারা কি আমাদের মত সহজ সরল ছেলেদের খেলনা পেয়েছে।
যে যখন যার ইচ্ছা হবে সে তার স্বার্থ পুরন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের নিয়ে খেলবে।
আর যখন ইচ্ছা হবে টিস্যু কাগজের মত ছুরে ফেলে দেবে।
না তা হবে নাভক্ত কখনো না………
তোমরাদের যা ইচ্ছা তা ছেলেদের সাথে তোমরা করতে পারো না।বআর মিরা তুমি যতো চেষ্টাই করনা কেন আমাকে কোন মিথ্যা মায়ায় ফেলতে পারবে না।হা হা হা
এসব ভাবতে ভাবতে বাড়িতে চলে আসি)
.
.
.
.
#কয়েক_দিন_পর….
আমি বেশ কয়েকদিন থেকেই লক্ষ করছি কে বা কারা যেন আমাকে ফলো করছে……
তবে না কাউকে তো দেখতেই পাই না তাহলে??

মনে হয় আমি এখানে একা একা থাকি আর কারো সাথে নিজের মনের ভিতর জমে থাকা কথা গুলো সেয়ার করতে পারছিনা বলে হয়তো কোন ভ্রমের ভিতর ডুবে যাচ্ছি।

আর আমি কার সাথেই বা কথা বলবো?
কলেজে কেউ তো আমাকে সহ্য ই করতে পারেনা।

তবে একটা বিষয় আমাকে খুব ভাবাচ্ছে!
মিরাকে আমি বেশি কদিন থেকে না জানলেও।
এ সামন্য কয়েক দিনেই যত টুকু ওর সম্পর্কে জেনেছি।
ও কিনা যদি একবার কিছু একটা করতে চায় তাহলে সেটা যে কোন কিছু বিনিময়ে হলেও করে ছারে।

কারন ও নিজেকে নিজে মনে করে….
মিরা কারো কাছে হারতেই শেখে নাই আর কারো কাছে হারার জন্য জন্মেও নাই মিরা।।।

তাহলে?
কিন্তু মিরা ওর বান্ধবীদের সাথে বাজি ধরার পর আমাকে তেমন ইমপ্রেস করার মত কিছুই করে নাই কেন?……

দূর হয়তো মিরা রাগের মাথায় ওর বান্ধবীদের সাথে বাজি ধরেছিলো। আর পরে হয়তো মিরা এটাও ভেবেছে যে আমার সাথে ওর তো কোন ভাবেই মানায় না।বতাই ওর থেকে দুরেই থাকি।
.
.
.
তবে আজকে ক্লাস করার সময় হঠাৎ দেখি মিরা আমার দিকে এক পলকে তাকিয়ে আছে। আমার কাছে ব্যাপারটা কেমন যেন হজম হয় নি!! খুব অদ্ভুত মনে হলো ব্যাপারটা…
আর আমি যখন ওর দিকে তাকাচ্ছি তখনি দেখি মিরা খুব লজ্জা পেয়ে ওর মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে।
বুঝলাম কিছুই…..
তারপর ক্লাস শেষ হলে যখন আমি ক্লাস রুম থেকে বের হবো। তখনি হঠাৎ মিরা আমার সামনে এসে দাঁড়ায়।

তাই আমি ওকে যেই পাশ কেটে যাবো। তখনি ও আবার আমার সামনে এসে দাড়ায়।

–কি ব্যাপার!
আপনি এভাবে আমার সামনে বারবার আসছেন কেন?
(মাথাটা নিচু করেই কথাটা বললাম)

–আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই। এতে তোর কোন অসুবিধা আছে।ব(রাগি ভাব নিয়ে বললো মিরা)

–দেখুন আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে। আপনার যদি কিছু বলার থাকে বলতে পারেন। আর যদি না থাকে তাহলে আমাকে দয়া করে যেতে দিন।

(আমিও একটু রাগি মুডে কথাগুলো বললাম। কারন কেন যানি আজ আমার মনটা একদম ভাল নেই)

–OMG বাবু দেখছি রাগ করতেও জানে দেখছি।
(বলেই হাসতে শুরু করলো)

(আমি মিরাকে আবারো পাশ কেটে যখনি যাবো)

–ঐ তোকে যেতে বলেছি কি??(মিরা)

–না। কিন্তু…

–কিন্তু কি হ্যা। এটাইতো বলবি তোর দেরী হয়ে যাচ্ছে…
কিন্তু তোকে তো এখন আমি যেতে দিচ্ছি না, বলেই আমার কলার ধরে বলতে লাগল..
-:আগে আমাকে এটা বল তোর এতো ভাব কিসের হ্যা।

–:আরে আপনি এভাবে আমার কলার ধরছেন কেন?
আর আমি কখন আপনার সাথে ভাব নিলাম?

(আর কোথায় আমি আর কোথায় আপনি)

(কথাগুলো বলার সাথে সাথেই দেখলাম মিরার চোখগুলো সম্পূর্ণ লাল হয়ে গেছে রাগে, আমি মিরার এই লুক দেখে খুব ভয় পেয়ে গেলাম)

–ভাব নিস না মানে। আমিতো দেখি ১০০ বার ভাব নিস। আচ্ছা আর একটা কথা বল আমাদের এখানে যারা পড়তে আসে। তাদের প্রত্যেকের বন্ধু/বান্ধবী আছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তোর কোন ফ্রেন্ড/বন্ধু/বান্ধবী নেই কেন? এটা তোর ভাব ছাড়া আর কিই বা হতে পারে?

–ফেফেফ্রেন্ড থাকা না থাকার সাথে ভাবের কি আছে আছে তাইতো বুঝলাম না। (ভয়ে ভয়ে)

–তোকে এত বেশী বুঝতে হবে না।
কালকের মধ্যেই যেন আমি তোর একটা ফ্রেন্ড দেখতে পাই। বন্ধুত্ব করবি…..

–:আরে আযব তো আমার ফ্রেন্ড দিয়ে কি কাজ হবে।তাছাড়া এখানে আমি যখন থেকে এসেছি তখন থেকেই সবাই আমাকে এড়িয়ে চলে।
তাই এই কলেজে আমার কোন ফ্রেন্ড নেই।
আর তাছাড়া এখানে এমন কোন ছেলেও নেই যে আমার সাথে বন্ধুত্ব করবে।
(এক নিশ্বাসে বলে ফেললাম)

–কেন বন্ধুত্ব কি শুধু ছেলেদের সাথেই হয় মেয়েদের সাথে বুঝি হয় না।?

–তা হবে না কেন।
কিন্তু আমি চাইনা আমার জীবনে ২য় বার কোন মেয়ে বন্ধু হয়ে আসুক।
আর তাছাড়া এ কলেজে যে মেয়েরা পড়ে তাড়া ভুল করেও……..

–আমি এত কিছু শুনতে চাই না।
তোর যখন কোন ফ্রেন্ড নেই তাহলে আজ থেকে আমি আর আমার এই চার বান্ধবী তোর ফ্রেন্ড।
আর আগামীকাল থেকে তাড়াতাড়ি কলেজে আসবি।
যদি দেড়ি করিস তো তোর সাথে যে কি করবো….

কথাগুলো বলেই মিরা চলে গেলো। আর এদিকে যেন আমার দেহে প্রান ফিরে এলো।
হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি পাজি মেয়েটা আমার সময়ের বারোটা বাজিয়ে দিছে।
তাই তাড়াতাড়ি কলেজ থেকে বাড়ির দিকে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম।
কারন আপনারা তো জানেন ই আমাকে আবার আমার কর্মস্থলে যেতে হবে।
.
.
.
.
–আচ্ছা মিরা তুই কি কিছু মিস করেছিলি,, বা করছিস বলে মনে হয়। (নীলা)

–আমি আবার কি মিস করলাম বা করছি বলে তোর মনে হচ্ছে। (মিরা)

–না এ জন্যই বলছি যে কিছুদিন আগেতো তুই আমাদের কাছে……
-:স্যরি আমার কাছে আর এদের সামনে কিছু একটা নিয়ে বাজি ধরেছিলি….(নীলা)

–থাকভথাক তোকে আর বলতে হবে না।
আমি কিছুই ভুলি নাই বুঝলি বোকা মেয়ে।
(নিলার মাথায় টোকা মেরে)

–হ্যাঁ তা তো নিজের চোঁখেই আজ সব দেখলাম।
কেমন করে আমাদের সবার প্রিয় মিরা ক্লাসের ভিতর একটা ক্ষেত ছেলের দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছিলো।
আবার ক্লাস শেষে সেই ক্ষেত ছেলেকেই নিজ থেকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ীয়ে দিলো।(নীলা)

–:এতে অবাক হবার কি আছে তা বুঝলাম না?
আর থাকলো তোর সাথে আমার বাজি ধরার কথা সেটা তো আমি কখনো ভুলবো না।
সেই জন্য আমি আমার প্লান নিজের মতো করে সাজিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি..(মিরা)

-+কেমন প্লান করেছিস তা বুঝতেই পারছি।
এমন যেন না হয় তুই নিজেই ঐ ক্ষেতটার প্রেমে পড়ে যাস। আর ও তোকে…. (রিয়া)

–ঐ তুই থাম।
এই মিরা কারো প্রেমে পড়বে তাও আবার ঐ ক্ষেতমার্কা একটা ছেলের.. কখনো ই না….
ওর তো আমার বাড়ির চাকর হবারো যোগ্যতাও নেই।
নেহাৎ তোদের সাথে বাজি ধরেছি বলেই ওর সাথে আজ বন্ধুত্বটা করলাম।
যাতে ওকে আমার প্রতি উইক করতে পারি।(মিরা)

–আচ্ছা বন্ধুত্ব করলি ভালো কথা।
তবে ও যে তোর প্রতি উইক হবে তা শিউর হচ্ছিস কি ভাবে।?(রিয়া)

–সিউর হচ্ছি এই জন্যে যে…(হঠাৎ স্তব্ধ)

–কি হলো থেমে গেলি কেনো। (নীলা বলে উঠলো)

–:তা যেনে তোদের কাজ নেই। তোদের কাজ হচ্ছে………
.
.
.
চলবে…………….?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here