এসো_করো_স্নান-05,06

0
256

#এসো_করো_স্নান-05,06
রোকেয়া পপি।
৫ম পর্ব

জয়ী হাসছে।
কিন্তু চোখ ভর্তি পানি টলমল করছে।
যেন একটু টোকা দিলেই গড়িয়ে পড়বে মুক্তোর দানা।

রাজুর কাছে মনে হলো এর চেয়ে সুন্দর দৃশ্য ও এর আগে কখনো দেখেনি।

ওর খুব ইচ্ছে করছে ঠোঁট দিয়ে জয়ীর চোখের পানি গুলো চুষে নিতে।
ও নিজেও অজান্তেই একটু একটু করে জয়ীর দিকে এগিয়ে আসছে

হঠাৎ করেই রাজুর সেন্স ফিরে এলো। নিজেকে কন্ট্রোল করে মনে মনে ধিক্কার জানালো নিজেকে।
ছিঃ রাজু! কি করতে যাচ্ছিলে? জয়ী এখন তোমার কেউ নয়। সে অন্যের স্ত্রী।

জয়ী হালকা করে চোখের পানি মুছে বললো, বাদ দাও তো আমার কথা। তোমার কথা বলো রাজু ভাইয়া। সেদিন তোমাকে বাবা তার লোকজন দিয়ে উঠিয়ে এনেছিলো।
আমি জানি।
তোমাকে কোন অত্যাচার করেনি তো?

না জয়ী।
আমার সাথে তোমার বাবা ভাইরা খুব ভালো ব্যাবহার করেছেন। কিন্তু শর্ত ছিলো একটাই।
তার বন্ধুর মেয়েকে বিয়ে করতে হবে।

সিলেটে উনি বিশাল চা বাগানের মালিক।
আমাকে একসাথে রাজত্ব ও রাজকন্যা লুফে নিতে হবে তোমার পরির্তে।
রাজু খুব শব্দ করে হাসছে। তার হাসির শব্দে অনেকেই ঘুরে তাকিয়েছে।
রাজু মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে বাম হাতের তালু দিয়ে চোখটা মুছে বললো, কি লোভনীয় অফার তাই না জয়ী?

আমি প্রথমে জেদ দেখিয়েছিলাম। আমার পড়াশোনা শেষ হয়নি। আমি এখন কিছুতেই বিয়ে করতে চাই না।

কিন্তু তোমার বাবা ঠাণ্ডা গলায় যা বললেন, তার সারমর্ম হলো।

আমি আর কখনো, কোন ভাবেই ঢাকা যেতে পারবো না।
কারণ তার মেয়ে বিয়ের পর ঢাকা থাকবে। সুতরাং পড়াশোনার চিন্তা বাদ।

আর শর্তে রাজি না হলে
আমার একমাত্র বোনকে তুলে আনা হবে।

পরিণাম কি হবে তা আমি চোখ বন্ধ না করেও বুঝতে পারছিলাম। আমি খুব ভালো করেই জানি তোমার বাবা কি করতে পারেন আর না পারেন।

আমি আর কোন কথা না বলে ঠিকানা নিয়ে বের হয়ে আসলাম সেখান থেকে।

সেই রাতেই আমাকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বের হতে হয়, তোমার বাবার নির্দেশে।
উনি চান না মা মরা একমাত্র মেয়েকে গৃহবন্দী করে রাখতে।
তাই আমাকেই নির্বাসনে যেতে হবে।
আমি বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নিলাম প্রতিটা কথা। এছাড়া আমার কাছে দ্বিতীয় কোন অপশন ও খোলা ছিল না।

বাবা মাকে শুধু বলে আসি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে সিলেট যাচ্ছি। তোমরা সাবধানে থেকো। খুকিকে একা কোথাও যেতে দিও না। যেখানে যায়, বাবা যেন সাথে থাকে।

একদম ভোরে সিলেটে এসে পৌঁছাই।
সিলেটের অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমার সারা রাতের ক্লান্তি দূর করে দেয়।

ঠিকানা মতো পৌঁছে আমি যে রুমটাতে বসে ছিলাম, ছোট্ট একটা সুসজ্জিত অফিস।
রুমটা অতিরিক্ত ঠান্ডা। এসি চলছে বিজবিজ শব্দ করে।

আমি তখন তোমার চিন্তায় বিভোর।

তোমার নাম রাজু?

হঠাৎ করে আমার চিন্তায় ছেদ পড়ে। আমি চমকে উঠি। বুঝতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে উনি আমার নাম জানতে চাইছেন।

জি আমি রাজু।

রাজু নামের অর্থ জানো?

জি না। আমি জানি না।

নামের আগে পরে কিছু নেই?

জি আছে।
আমার পুরো নাম ইশতিয়াক আহমেদ রাজু।

তুমি কি জানো এখানে তোমার জন্য একটা স্মার্ট বেতনের চাকরি কনফার্ম করা হয়েছে?

জি জানি।

তাহলে নিশ্চয়ই এও জানো আমার একমাত্র মেয়ে বৃষ্টিকে বিয়ে করে তোমাকে এই সিলেটেই থেকে যেতে হবে।

জি আমি জানি।
তবে আমি আমার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে।
ভবিষ্যতে বাবা মা আর ছোট বোনকে আমার কাছে এনে রাখতে হবে। যদি আপনার আপত্তি না থাকে।

ওকে ডিয়ার।
ছেলে হিসেবে এটা তোমার দায়িত্ব।
আমার মেয়ের আপত্তি না থাকলে তুমি অবশ্যই তোমার বাবা মা কে এনে রাখবে।

তোমাকে আগেই একটা কথা বলে রাখি।
আমার মেয়েটা বড্ড জেদী আর অহংকারী।
তোমার একটু মানিয়ে নিতে হবে।

তোমার এ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার তৈরি করা আছে।
তুমি বসো। আমার ম্যানেজার তোমাকে বুঝিয়ে দিবে।

তারপর তোমার সাথে একসাথে বসে নাস্তা খাবো।
আমার ড্রাইভার তোমাকে আমার বাংলোতে পৌঁছে দিবে।

আমি এপোয়েন্টমেন্ট লেটার হাতে পাবার অপেক্ষায় জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। আকাশ ঘনো কালো রঙ ধারণ করেছে।
যে কোন সময় ঝুমঝুমিয়ে বৃষ্টি নামবে।
ঠিক যেন আমার মনের অবস্থা বুঝে নিয়ে আকাশ সেই সাজে সেজেছে।

নিন— এইখানে সই করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারটা নিন। কনগ্রাচুলেশন্স।

আমি চমকে গেলাম, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার হাতে নিলাম। অতিদ্রুত চোখ বুলালাম। অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। বেসিক এক লাখ দশ হাজার টাকা। হাউজরেন্ট, মেডিকেল অ্যালাউন্স সব মিলিয়ে দেড় লাখ।
প্রবেশনারি পিরিয়ড পার করলে রেগুলার পে-স্কেল শুরু হবে। রেগুলার পে-স্কেলটা কত? প্রবেশনারি পিরিয়ডটাই বা কত দিনের?

আমি আবারো জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে। বৃষ্টি থামার কোন লক্ষন নেই। বরং বৃষ্টির জোর আরো বেড়েছে। মনে হচ্ছে পুরো সিলেট শহর আজ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাবে।

শুরু হলো আমার নতুন জায়গায় নতুন জীবন।
বেশ ঘটা করেই বৃষ্টির সাথে আমার বিয়ে হলো।

কোয়ার্টার পেলেও আমাকে বৃষ্টির সাথে ওদের বাসায় থেকে অফিস করতে হতো।

বৃষ্টি দেশের বাইরে পড়াশোনা করা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী মেয়ে। সে আমাকে তার স্বামী হিসেবে মেনে নিতেই চায় না।

যখন তখন লং ড্রাইভে চলে যায় গাদা খানেক বন্ধু নিয়ে।

একদিকে আমি তোমাকে ভুলতে পারছি না।
অন্যদিকে বৃষ্টির এমন উশৃংখল জীবন যাপন আমি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না।
তবুও চেষ্টা করেছি খুব মানিয়ে নিতে।

কিন্তু কোন রকম আট মাস সংসার করার পর বৃষ্টি ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিলো।

ওর বাবা মা মেয়েকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য আমার মতো একটা সাধারন ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ডিভোর্সটা আটকাতে পারলো না কেউ।

এখন যাযাবর জীবন যাপন করছি। একটা প্রাইভেট ফার্মে জয়েন করেছি। ভালো বেতন। সপ্তাহে দুই দিন ছুটি।

ছুটি ছাটা পেলেই বাড়িতে গিয়ে কাটিয়ে আসি। ছোট বোনটার বিয়ে হয়ে গেছে।
বাড়িতে বাবা মা একাই থাকে। ঢাকা নিয়ে আসতে চাই, কিন্তু তাদের নাকি ঢাকা শহরে দম বন্ধ হয়ে আসে।

জয়ী হঠাৎ করে খেয়াল করলো, ওর নিজের চোখ দুটো পানিতে ভিজে যাচ্ছে।
ও চোখের পানি মুছার একটুও চেষ্টা না করে ধরা গলায় বললো, কি লাভ হলো!
এভাবে বাবা আমাদের দুজনের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে কি লাভ হলো বলতে পারো?
না আমি সংসার করতে পারলাম।
না তুমি!

রাজু চমকে…….

চলবে…….

#এসো_করো_স্নান_(ষষ্ঠ পর্ব)
রোকেয়া পপি

জয়ী হঠাৎ করে খেয়াল করলো, ওর নিজের চোখ দুটো পানিতে ভিজে যাচ্ছে। ও চোখের পানি মুছার একটুও চেষ্টা না করে ধরা গলায় বললো, কি লাভ হলো!
এভাবে বাবা আমাদের দুজনের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে কি লাভ হলো বলতে পারো?
না আমি সংসার করতে পারলাম।
না তুমি!

রাজু চমকে উঠলো।

রাজুর মুখ কালো হয়ে গেলো।
সে নিজের অজান্তেই একটা ধাক্কার মতো খেলো।
ভাগ্যিস জয়ী সেটা খেয়াল করেনি। খেয়াল করলে খুব লজ্জা পেতে হতো।

জয়ী কথার মাঝখানে excuse me বলে, তড়িঘড়ি করে washroom ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল। ও কাঁদছে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। কেন তার এত কান্না পাচ্ছে তা সে নিজেও বুঝতে পারছে না। রাজু ভাই বলেছে তার ডিভোর্স হয়েছে, তাতে তার নিজের এত খারাপ লাগছে কেন? ভাগ্যিস তার এই খারাপ লাগাটা অন্য কেউ দেখতে পাচ্ছে না। দেখতে পেলে কি ভয়ংকর লজ্জার ব্যাপার হত!

পৃথিবীতে অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে একজন মানুষ কখনো আরেক জন মানুষের মনের আকাশ দেখতে পারে না!!
আর পারে না বোলেই প্রতিদিন নতুন নতুন ভোর হয়!!

জয়ী কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজেকে সামলালো। চোখে মুখে পানি দিয়ে এসে দেখে লঞ্চ ঘাটে ভিড়েছে।
সবাই ব্যাস্ত হয়ে গেছে নামার জন্য।

রাজু নিজের ফোন নাম্বার টা একটা কাগজে লিখে জয়ীকে দিয়ে বললো, মন চাইলে রাতে একবার ফোন দিও।
আমি অপেক্ষা করবো।

জয়ী লঞ্চ থেকে নেমে খুব অবাক হলো সফুর ভাইকে দেখে।
সফুর ভাই ওদের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে আছে।
খুবই বিশ্বস্ত একজন মানুষ।
জয়ী ছোট থেকে এই সফুর ভাইকে দেখে আসছে
ওদের পরিবারের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ।

সফুর ভাই এসেই জয়ীর হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে ছাতা ফুটিয়ে জয়ীর মাথায় ধরে বললো,
আপা তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠেন।
ভালো বৃষ্টি নামছে।

জয়ী বিস্মিত হয়ে বললো, আমি আসছি তুমি জানলে কিভাবে সফুর ভাই? আমি তো কাউকে কিছু জানাইনি।

আপনার শশুর বাড়ি থেকে সকালে ফোন দিছিলো আপামনি।
বলছে আপনি একাই আসতেছেন। ঘাট থেকে জেনো নিয়ে যাই। চাচাজি আসতে চাইছিলেন।
চাচাজির শরীর ভালো না। আবার বাদলার দিন।
তাই আমি নিয়ে আসিনি।

খুব ভালো করছো সফুর ভাই।
চলো যাওয়া যাক।

রাজু ঘাটে দাঁড়িয়ে জয়ীর চলে যাওয়া দেখলো।
বৃষ্টির বেগ বাড়ছে। কিন্তু ওর নিরাপদ কোন আশ্রয়ে যেতে ইচ্ছে করছে না। সে একটা খালি রিকশা দেখে উঠে বসলো।

বৃষ্টির বেগ আরো বেড়েছে। এখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পরছে। রিকশা চালক হুক তুলে দিতে গেছিলো।
রাজু হাত ইশারায় থামিয়ে দিয়েছে।

বৃষ্টিতে ভিজতে রাজুর খুব ভালো লাগছে। ইচ্ছে করছে মনের সব দুঃখ কষ্ট গুলো বৃষ্টির পানির সাথে ধুয়ে মুছে যাক।

ওর প্রচন্ড রকম কষ্ট হচ্ছে, যাকে সে নিজের জীবনের চাইতেও বেশি ভালবাসে, সে ভালো নেই!
অথচ ও মন থেকে সবসময় চেয়েছে জয়ী সুখি হোক।
খুব ভালো থাকুক খুব।
ভুল করে ও যেন কখনো আমার কথা ওর মনে স্থান না পায়।
কিন্তু মানুষ ভাবে এক, আর হয় আরেক!

জয়ী খুব করে চাইছিলো নিজেকে শক্ত রাখতে।
সে পন করেছিলো, কোন ভাবেই সে তার চোখের পানি কাউকে দেখাবে না।
কিন্তু এখন সে হাপুস হুপুস নয়নে কাঁদছে।
তার বাবা যখন জয়ীকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো, জয়ী আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না।

চেয়ারম্যান বাড়িতে দারুন এক নাটকীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। আর দর্শক হিসেবে আছে দুইজন নতুন মুখ।
তার দুই ভাইয়ের বৌ।
এদের সাথে জয়ীর এখনো পরিচয় হয়নি।
এরা মাথা নিচু করে বোকার মত দাঁড়িয়ে আছে।
ঠিক বুঝতে পারছে না, এই মুহূর্তে কি বলা উচিত বা করা উচিত।

জয়ী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য বললো, বাবা আমার খুব খিদে পেয়েছে। সকাল থেকে দুকাপ কফি ছাড়া পেটে কিছু পরেনি।

সাথে সাথে শরাফত আলী ব্যাস্ত হয়ে পড়লো, বৌমা তোমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি দেখছো। মেয়েটা কতো বছর পর বাড়ি আসছে, তোমরা জানো না?
তাড়াতাড়ি খাবার সাজাও টেবিলে। আজকে আমরা বাপ বেটিতে একসাথে খাবো।

বাবা টেবিলে খাবার দেওয়া হয়েছে।
আপনারা আসুন।

দুই ভাইয়ের বউ কেই জয়ীর বেশ পছন্দ হয়েছে।
দুজনেই খুব মিশুক।
অল্প সময়ে তারা দুজন জয়ীকে আপন করে নিয়েছে। নিজের থেকে এসেই পরিচিত হয়েছে। দুজনেই দেখতে বেশ মিষ্টি।

প্রচুর আয়োজন ছিল।
জয়ী খুব সামান্য খেয়েই নিজের রুমে চলে আসছে।
ওকে নিয়ে সবার এতো ব্যাস্ততা কেন যেন ভালো লাগছে না।
অকারণেই চোখ ভিজে উঠতে চাইছে।
এই পাঁচ বছরে ও ভুলেই গিয়েছিলো ও একজন মানুষ। বাবার আদরের রাজকন্যা।
যে কিনা মুখ ফুটে কিছু চাওয়ার আগেই সব কিছু সামনে এসে হাজির হতো।

রুমের সবকিছু ঠিক আগের মতই আছে।
একদম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, সুন্দর করে গোছানো।
মনে হচ্ছে গতো কাল ও সে এখানেই ছিলো।
আলমারির ড্রয়ারে ওর রেখে যাওয়া টাকাগুলো পর্যন্ত সেভাবেই আছে।

জয়ীর স্বভাব ছিল, বাবা, ভাইরা হাত খরচের জন্য টাকা দিলেই ড্রয়ারে রেখে দেওয়া। খরচ করার তেমন অভ্যাস ছিল না। আর সুযোগ ও হতো না।

বিকেল না হতেই জয়ী বের হয়ে এসেছে।
সে আজ কোথায় যাবে কিছুই ঠিক করেনি। রিকশায় উঠেই না হয় ঠিক করবে। বেশ কিছু টাকা সঙ্গে নিয়েছে। কত নিয়েছে সে নিজেও জানে না। গুনে নেয় নি। ড্রয়ার থেকে চোখ বন্ধ করে বেশ কিছু নোট তুলে নিয়েছে। জয়ী ঠিক করে রেখেছে, আজ সে সব টাকা খরচ করবে।
সবার জন্য কিছু উপহার কিনবে। বাড়িতে দু দুটো নতুন মুখ।
খালি হাতে এভাবে চলে আসা একদম ঠিক হয়নি।

শেষ রাতে রাজুর শরীর কাঁপিয়ে জ্বর এলো। থার্মোমিটারে পারদ তিনের ঘর ছাড়িয়েও কিছু দূর উঠে গেল। ও বুঝতে পারছে না ওর এখন কি করা উচিত।
মাকে ডাকবে, নাকি বাথরুমে ঢুকে কল ছেড়ে দিবে।

কারো ঘুম নষ্ট করতে একদমই ইচ্ছে করছে না।
কিন্তু বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ানোর মতো শারীরিক জোরও সে পাচ্ছে না।

জাগ্রত অবস্থাতেই ওর মনে হচ্ছে, ও কোন চলন্ত ট্রেনে শুয়ে আছে।
মাথার ভেতর ঝিকঝিক ঝিকঝিক শব্দ হচ্ছে।
পুরো শরীর দুলছে।
শুয়ে শুয়েই সারা শরীরে সেই ঝাঁকুনি সে অনুভব করছে।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here