বসন্তের_ফুল🌺🌺 #তারিন_জান্নাত #পার্ট৪৩

0
444

#বসন্তের_ফুল🌺🌺
#তারিন_জান্নাত
#পার্ট৪৩

-‘সরি রে,তুই আর অভিক আমার জন্য সমান। তোকে আমি আমার ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করি।
-স্নেহ,? এসবের মূল্য আমার কাছে নেই। (অভ্র)তীক্ষ্ণ স্বরে জবাব দেয় অভ্র।
স্মিত হাসে অরি, অভ্রের কঠিন্যস্বরে বলা কথা ওর বুকে গিয়ে বিঁধে। অরির ছোট ভাই অভিক আর অভ্র সমবয়সী। তাই অভ্রের প্রতি আলাদা টান ওর মধ্যে।রক্তের টানও বলা যায়।

-‘ তোর সাথে দেখাটাও হয়েছে অদ্ভুদভাবে তাইনা?’তখন তো তুই খুব স্বাভাবিকভাবে কথা বলেছিলি।তাহলে এখন এতো আক্ষেপ কেন?আমার পরিচয়টা তোর কাম্য ছিলো না? (অরি)

অরির কথায় অভ্র মুখ বাঁকিয়ে বিরক্তির চাপ ফুঁটে তুলে। পরিচয়-অপরিচয় তাতে ওর কিছু যায় আসে না। সমস্যা একটায় অভ্র নিজের মতো বাঁচতে চাই।কোন পিছুটান ছাড়া।

– দেখ অরি আপু, পরিচয় যাইহোক মানুষ মানুষের বিপদে এগিয়ে আসবে এটাই মূলকথা। আর তোর এক্সিডেন্ট না হলে হয়তো তোর সাথে দেখা হতোনা। তাতে কী আমি আমার মতোই থাকতাম এবং থাকবো। যতোই হোক।(অভ্র)

অভ্রের কথায় বিষণ অসন্তুষ্ট অরি। মলিন হেসে বলে,
-তোর ভাই মানে আরিয়ানের সাথে তোর সমস্যা কী যার কারণে তাঁর সাথে আমার বিয়েটা দিলি। আমার সত্যিটা জেনেও? যে আমি….(অরি)

অভ্রের কপালে তীক্ষ্ণ ভাঁজ ফুটিয়ে তুলে মুহুর্তে। ঝাঁজালো কন্ঠে বলে,
-স্নেহ,আদর,মমতা সব আমি আমার মায়ের কাছে পেয়েছি। আমার মাকে যে কষ্ট দিবে তাঁকে আমি কেন ছাড় দিবো? কেন? (অভ্র)

অভ্রের কথায় অরি বাকরুদ্ধ। অদ্ভুদ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে অরি। বুক ভাড় হচ্ছে তাঁর। মা ছাড়া সেও বড় হয়েছে। ভেবেছিলো নিজের মাতৃত্ব দিয়ে হলেও অপূর্ণতাকে পূর্ণ দিবে।কিন্তু তা অসম্ভব। চোখ ভিজে আসে তাঁর।

-বিগড়ে গেছি আমরা অভ্র,অভিকও (অরি)

অরির কথা অভ্র শুনেও না শুনার ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে থাকে পুকুরের দিকে তাকিয়ে। দু’পকেটে হাত গুঁজানো।

-কিছু তো বল অভ্র? (অরি)
অভ্র ঘাঁড় হালকা বাঁকিয়ে তাকাল। এবং বলে,

-তোদের তো দোষ নেই,সব রক্তের দোষ। (অভ্র)

অভ্রের কথায় অরি ব্যাঞ্চে বসে পড়ে। কিছু বলার ভাষা বা মনমানসিকতা তাঁর মধ্যে অবশিষ্ট নেই। জোরে নিঃশ্বাস নিতে শুরু করে।

দু’জন দুই ভাবনায় মত্ত। ঠিক সেই মুহুর্তে ফোনের টিউনে ধ্যান ভাঙে তাদের। অপরিচিত টিউন শুনে দু’জনেই কপাল কুঁচকে ফেলে।

-ফোন ধর। (অভ্র)
-অভ্র এটা আমার ফোনের টিউন না,
এবার অভ্র চমকে আশেপাশে তাঁকায়। ওদের মধ্যে এখানে তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি রয়েছে বুঝতে বেগ পেতে হয়নি তাদের।

ততক্ষণে প্রেমা ফোনটা বন্ধ করে ফেলে।বেশ মনোযোগ দিয়ে অভ্র আর অরির কথা শুনছিলো বটগাছের আঁড়ালে।এবার বুঝি শেষ রক্ষা হলোনা।অভ্র বুঝে গিয়েছে। ফোনটাও বাজার সময় পায়নি আর।গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তেই ফোন সবসময় আক্রমণ করে।
গাছের সাথে ল্যাপ্টে দাঁড়িয়ে থাকে প্রেমা।

কারো উপস্থিতি না পেলেও অভ্র প্রেমার উপস্থিতি বুঝে ফেলে। এতোক্ষণ মনে হয়েছিলো।কিন্তু ফোনের টিউন শুনে সিউর হয়ে যায় প্রেমা এখানেই আছে।
অভ্র মনেমনে বলে উঠে, ‘ এ মেয়েকে নিয়ে আর পারা গেলো না। নিজেকে সামলাতে পারেনা। অভ্র গলা উঁচিয়ে বলে,

-‘প্রেমা আর লুকিয়ে থাকতে হবে না,এদিকে এসো।’ (অভ্র)
কুঁচকানো চোখমুখ স্বাভাবিক করে প্রেমা।নাহ অভ্রের গলার স্বরে কোন রাগ নেই।তাই প্রেমা অভ্রের দ্বিতীয় ডাকের অপেক্ষায় না থেকে গাছের আঁড়াল থেকে বের হয়ে অভ্রের সামনে এসে দাঁড়ায়।
প্রেমা বেরুতেই অরি বসা থেকে উঠে পেঁছনের দিকে তাকাল। প্রেমাকে দেখে অরি বেশ চমকে যায়। প্রেমাকে এখানে আশা করেনি। প্রশ্নাত্বক দৃষ্টিতে অভ্রের দিকে তাকায়। অরির দৃষ্টি উপেক্ষা করে অভ্র প্রেমার কাছে গিয়ে প্রেমার হাত ধরে অরির সামনে এসে দাঁড়ায়।

অরি এবার বিস্ফোরিত দৃষ্টি ছুঁড়ে অভ্র আর প্রেমার দিকে। তা দেখে অভ্র বাঁকা হেসে প্রেমার দিকে তাকাল,
এরপর অরির দিলে তাকিয়ে বলে,
-‘ মাই লাইফ, (অভ্র)
অরি আর প্রেমা একে-অপরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে আবার অভ্রের দিকে তাকাল।প্রেমা নিজেই হতবম্ব।একটু আগেও অভ্রের ব্যপারে কী না কী ভেবেছে সে। মনেমনে একটা শব্দ উচ্চারণ হয়,’ ছিঃ’

-‘ আমি কিছু বুঝতে পারছিনা অভ্র? (অরি)
– ‘ অরি আপু,তোর হাসবেন্ড আমার হার্টের দিকে নজর দিয়েছিলো, তার জন্যই এতো কিছু করেছি।তোর সাথে বিয়ে দেওয়ার ব্যপারটা তো এখন স্পষ্ট।
নাকি এখনো বুঝতে পারিস নি।(অভ্র)
অরি সচকিত স্বরে বলে,
-এরজন্য এতোকিছু?(অরি)
অভ্র প্রেমাকে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়,এবং অরির দিকে তাকিয়ে বলে,
-এবার আমার লাইফে কার কার প্রায়োরিটি বেশি বুঝতে পেরেছিস তো?(অভ্র)
প্রেমার শরীর শিউরে উঠে,লজ্জাও পাচ্ছে।অরি না থাকলে হয়তো এমন হতোনা। কিন্তু অরির সাথেই আরিয়ানের বিয়ের সূত্রেই ওদের সাক্ষাৎ বুঝতে আর সমস্যা হয়নি প্রেমার।কিন্তু আরো কিছু অদ্ভুদ কথার অর্থ উদ্ধার করতে হবে তাকে।ঠান্ডা মেজাজে।কিছু তো ঘাটতি রয়েছে কথার মধ্যে।

অরি অভ্রের কথায় হাসে।অভ্রের কথায় এখনো সে আসল কথাটা উদ্ধার করতে পারেনি। অভ্রের মাকে আরিয়ানওই বা কি করেছিলে যার জন্য অভ্রের এতো রাগ। কিন্তু সেটা ভাবার সময় এখন নেই। ওকে আরো একটা কাজ করতে হবে।

-অভ্র তোর সাথে কিছু কথা ছিলো,একান্তে!(আঁড়চোখে প্রেমার দিকে তাকালো)
-একান্তেই আছি বলতে পারিস, আমি আর প্রেমা এক।
(অভ্র)

কিন্তু প্রেমা থাকতে ইচ্ছুক নয়।তাই অভ্রের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বেশ কিছু দূরে গিয়ে দাড়াল।

প্রেমা যেতেই অরি অভ্রের কাছে এসে ব্যস্ত গলায় বলে,
-তুই আমাদের বাড়ি চল,বাবা তোর জন্য সব রেখে দিয়েছে। তুই বাকিটা জীবণ বেশ আরামে কাটিয়ে দিতে পারবি।তোর সব ফেরাতে আমিই তোকে সাহায্য করবো,প্লিজ চল। (অরি)

অরির কথায় অভ্র তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলে,
– মি. আশিক কোথায়? মরেটরে গেছে নাকি বেঁচে আছে? (অভ্র)
-অভ্র, (গলা উঁচিয়ে বলে অরি)
– রাগছিস কেন সেটা তো বল? (অভ্র)
-কাকাই বেঁচে আছে,মরবে কেন? তাছাড়া কাকাই দেশে নেই। নাহলে….(অরি)
এবার অভ্র কঠোর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,
-ভালো হলো দেশে নেই, নাহলে তোর কাকাই কে আমার হাতেই মরতে হবে,বলে দিস,
কাথাটা বলে অভ্র চলে যাওয়ার জন্য পেঁছন ফিরলেই অরি দ্রুত বলে উঠে,
-আমার কথাটা একটু ভাবিস। আমাদের সব আমরা বুঝে নিলে ভালো হয়।(অরি)

অভ্র অরির দিকে তাকাল, গভীর শ্বাস টেনে বলে,
-দাদার নামে গাধা,
বাবার নামে আধা,
আর নিজের নামে শাহাজাদা।
কী বুঝানোর চেষ্টা করেছি আশা করি বুঝতে পেরেছিস? আর হ্যাঁ তোর হাসবেন্ড এবং তোর শাশুড়ির স্পেশালভাবে যত্ন নিবি।যেনো কোন ত্রুটি না থাকে।
কথাটা বলে মৃদু হেসে প্রেমার কাছে এসে দাড়ায়।
প্রেমা কিছু বলতে চাইলে অভ্র সেদিকে পাত্তা না দিয়ে প্রেমার হাত ধরে হাঁটা দেয়।
-অভ্র সরি,আমি আসলে,ভালো লাগছিলো না তাই তোমার পিঁছুন ঘুরতে বের হয়েছিলাম। আমার অন্য কেন ইনটেনশন ও ছিলোনা। (প্রেমা)
প্রেমার কথা কানেও তুলছেনা অভ্র। রেগেছে খুব সে।কিন্তু প্রেমাকে রাগ দেখিয়ে কী হবে? কিন্তু চুপ থাকবে। প্রেমাকে বকলে কেঁদে দিবে নিশ্চিত।যে দৃশ্য অভ্র সহ্য করতে পারবেনা।তার চেয়ে আপাততে চুপ থাকবে।

মাঝরাস্তায় প্রেমা থেমে যায় অভ্রকে অনেক ভাবে কথা বলানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু অভ্র তার কথাতেই আবদ্ধ। শেষে জড়িয়েও ধরে।তাতে রাগ কমলেও অভ্রের কোন হেলদেল নেই।

-অভ্র সরি বলেছি তো, আর হবেনা।(প্রেমা)
ঠোঁট চেপে হাসি আঁটকিয়ে অন্য দিকে তাকাল অভ্র।
এভাবে চলতে থাকলে সে নিজেও নিজেকে সংযত রাখতে পারবেনা।তবুও প্রেমার পাগলামি গুলো সহ্য করছে। দেখতে চাই সে। যদিওবা প্রেমাকে রাগ ভাঙানোর ট্রিকস তার জানা।যেটা প্রেমা রেগে গেলে প্রয়োগ করবে।
কিছুক্ষণ পরপর প্রেমা কানে ধরছে, নিজের গালে চিমটি দিচ্ছে।আবার অভ্রের গাল ধরছে,টানছে।সুরসুরি দিচ্ছে।তাতে অভ্রকে দিয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করাতে পারেনি প্রেমা।
ক্লান্ত হয়ে যায়। ততক্ষণে বাড়ির কাছে চলে আসে তারা।
অভ্রকে রেখেই প্রেমা বাড়িতে ঢোকে।পেঁছন ফিরেও তাকায়নি।তাকালে হয়তো অভ্রের চোখেমুখে দুষ্টু হাসির রেখা দেখতে পেতো।

প্রেমাকে দেখে সাইকান হুড়মুড়িয়ে প্রেমার সামনে এসে দাঁড়ায়। বেশ চিন্তত চোখমুখ। সাথে জেরিনেরও।
-আপু কোথায় গিয়েছিলে তুমি? আমরা এতক্ষণ ধরে খোঁজছিলাম। কল ও দিয়েছি।কতো টেন..(সাইকান)
-‘আমার সাথে ছিলো,সাইকান। (অভ্র)
অভ্র প্রেমার পাশে আসতেই প্রেমা বাঁকা চোখে তাঁকায়।
এখন তারও রাগ হচ্ছে অভ্রের মৌনতার কারনে।

-যাক,কিন্তু….? (সাইকান)
অভ্র চোখ রাঙালে সাইকান মুখের কথাটা গিলে ফেলে।

প্রেমা অভ্রের আগে হেঁটে সিঁড়ির উপর উঠে,তা দেখে অভ্রও প্রেমার পেঁছনে গিয়ে প্রেমাকে ধাক্কা দেয়। আচমকা পড়ে যেতে গিয়ে সিঁড়ির রেলিং আঁকড়ে ধরে প্রেমা।রাগান্বিত দৃষ্টি অভ্রের দিকে ছুঁড়তেই অভ্র পিঁছন ফিরে তাকাল, অভ্রের লাল ঠোঁটের মিটিমিটি হাসি প্রেমার দৃষ্টি কাঁড়ে।
এবার প্রেমার মাথায়ও শয়তানি বুদ্ধি চাপে।দ্রুত পায়ে অভ্রের পেঁছনে গিয়ে ধাক্কা দিতে যায়,কিন্তু অভ্র লম্বা পায়ে দু’পা হাঁটতেই প্রেমা নাগাল না পেয়ে ধপাস করে পড়ে যায়।
প্রেমার পড়ে যাওয়া দেখে অভ্র শব্দ করে হেসে রুমে চলে যায়।
রাগে দুঃখে প্রেমার চোখ দিয়ে পানি চলে আসে।

আজকের দিনটা মেঘাচ্ছন্ন ছিলো। এখন দুপুর আড়াইটা। খেয়ে-দেয়ে সবেমাত্র বিছানায় শায়িত হয় প্রেমা। রাতে পরিপূর্ণ ঘুম না হওয়ার ফলে এখন ঘুমে চোখজোড়া চম্বুকের মতো টানছে। চোখ বন্ধ করতে যাবে মুহুর্তে কেঁপে উঠে। মেঘের গর্জন শুনে। আচমকা মেঘের গর্জনে প্রেমা ভয় পেয়ে যায়। ঘুম হালকা ছুটে যায়। বারান্দার দিকে তাকালে দেখে বিষণ বাতাস বইছে। গাছ-পালা এলোমেলো হয়ে মুহূর্তে ভেঙে যাবে।

খোলা বারান্দাটা বিষণ টানছে ওকে। বিছানা ছেড়ে উঠে যায়। বারান্দার দিকে পা বাড়াবে ওমনি দরজার করাঘাত। দরজার দিকে কিছুসময় চেয়ে তাকল প্রেমা।
কে হতে পারে?
শেষের দরজার শব্দটা একটু জোরে পড়তেই চমকে দ্রুত দরজার কাছে গিয়ে দরজা খোলে দেয়।
প্রেমাকে ঠেলে সরিয়ে অভ্র রুমে প্রবেশ করে। এবং দরজাটা লাগিয়ে দেয়। আঁড়চোখে একবার প্রেমাকে স্ক্যান করে নেয় অভ্র। ঘন পায়ে হেটে ছোট টেবিল নিয়ে বারান্দার দরজার পাশে গিয়ে ছোট টেবিলের উপরে দাঁড়ায়। প্রেমা কপালে ভাঁজ তুলে অভ্রকে দেখছে।

বারান্দার উপরো মিনি ছাদ থেকে মোটা রশি টাইপের কিছু তক্তা সহ বের করে এবং দরজাটা লাগিয়ে দেয়।
এরপর তক্ত এবং রশি দিয়ে একটা দোলনা বেঁধে ফেলে। টেবিল থেকে নেমে টেবিলটা সাইডে রেখে দেয়।
তারপর বিছানায় রাখা প্যাকেটটা নিয়ে দোলনায় বসে অভ্র। এতক্ষণ কিছু না বুঝলেও দোলনা দেখে প্রেমার চোখ ছানাবড়া। প্যাকেট থেকে ‘সান চিপস’ বের করে খেতে শুরু করে অভ্র। বারাদার দোলনায় বসে বাইরের বৃষ্টি পড়ার দৃশ্য সত্যিই খুব অমায়িক। সাথে শরীর ধরানো শীতল বাতাস।
প্রেমা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। তারও ইচ্ছে করছে অভ্রের পাশে বসে দোলনায় দোল খেতে। কিন্তু অভ্র তো কথাই বলছেনা। বসবে কীভাবে।
অনেক ভেবে চিন্তে বারান্দার দিকে এগোতো লাগলো প্রেমা। বৃষ্টির স্পর্শ শরীরে সংস্পর্শে আসার পূর্বেই জোরে টান অনুভব করে প্রেমা। থুবড়ে গিয়ে পড়ে টানদাতার বক্ষে।ঠিক সেময় হয় বজ্রপাতের আগমন।ভয় পায় প্রেমা।তবে নিজেকে নিরাপদ স্থানে পেয়ে ঠোঁটের হাসি প্রসারিত হয়। অভ্রকে আরো দ্বিগুন আঁকড়ে প্রেমা। অভ্র আবছা কন্ঠে বলে,
‘আমি ব্যতিতো বিনা অনুমতিতে অন্য কিছুর স্পর্শ আমি সহ্য করবোনা। হোক সেটা বৃষ্টি বা রোদ।আমার হিংসে হয়। রোদের স্পর্শ থেকে তো সবসময় আমি আঁটকাতে পারবোনা।তবে আজ বৃষ্টির স্পর্শ থেকে আঁটকেছি। দেখেছো…
প্রেমা চুপ রইলো,আপাততো উষ্ণ পরশের প্রয়োজন তার।

দোলনায় পাশাপাশি বসে আছে প্রেমা আর অভ্র।প্রেমা
অভ্রের কাঁধে মা্থা রেখে শুয়ে আছে।
-অভ্র'(প্রেমা)

-‘ হুম ‘ (প্রেমার হাতের আঙুলের সাথে খেলতে খেলতে)

-তোমার অরি আপু, মানে আরিয়ান স্যারের বউ এর সাথে তোমার সম্পর্ক কী? মানে তোমরা তুই-তোকারি করে কথা বলছিলে,আপু তোমার বড় তারপরেও তুই করে বলছিলে তাই… (প্রেমা)
প্রেমার কথা শুনে অভ্রের বুক ছিড়ে দীর্ঘশ্বাস বেরুয়।
কীভাবে বলবে সে। কিন্তু বলতে হবেই।তবে এখন নয়।সময় আসুক।
-সময় চাই আমার,(অভ্র)
-তোমার যত সময় চাই নিও,তবে আমাকে সব বলো।
-আমার ব্যপারে কতটুক জানো তুমি?(অভ্র)
অভ্রের কথায় প্রেমা হতাশার শিষ তুলে বলে,
-কখনো মনে হয় সব জানি,আবার মনে হয় জানার মধ্যে আরো অনেক কিছুই জানিনা।(প্রেমা)
অভ্র হেসে বলে, ‘ এটাই সিক্সথ সেন্স’ মেয়েদের সিক্সথ সেন্স স্ট্রং হয়।তোমারটা মে বি একটু বেশিই স্ট্রং। (আঁড়চোখে প্রেমাকে দেখে বলে)

-‘কিজানি (প্রেমা)

-প্রেমা! (অভ্র)

-বলো, (প্রেমা)

-বিয়ের পর আমরা আলাদা থাকবো,(অভ্র)

-কেন? তাছাড়া আংকেল,আন্টি,আদ্র উনাদের একা ছেড়ে থাকার ইচ্ছে কেন জাগলো।উনাদের সাথে থাকলে কী সমস্য? (প্রেমা)

-মা-বাবা আদ্র ও আমাদের সাথে যাবে, তবে এ শহরে আমি থাকতে চাইনা। এ শহরটা আমাকে…
এতটুক বলে অভ্র থামে। চোখের কোণায় পানি আসার জোগাড়। নিজেকে সামলে নেই। যা পায়নি তাতে কোনো অভিযোগ নেই তাঁর। তবে যা পেয়েছে তা বাকিটা জীবণ আঁকড়ে ধরে বাঁচবে।

-তোমাকে কী অভ্র? থামলে কেন?(প্রেমা)
মুচকি হেসে অভ্র বলে,
-কিছুনা।তোমার মা-বাবাকেও রাজি করাতে হবে।তারা আমার প্রতি নাখোশ হবেন না।তবে সমস্যা তোমার হিটলার ভাই।তাকে আমি কিছু বলবো না। রাজি হলে হবে নাহলে তোমাকে,আর তোমার মা-বাবা এবং দাদিকে সহ তুলে নিয়ে যাবো।ব্যপারটা ইন্টেরেস্টিং হবে তাই না?
অভ্রের কথায় প্রেমা হেসে অভ্রের চুল এলোমেলো করে দেয়।

-কাল থেকে কিন্তু আমাদের কলেজে যেতে হবে।অনেকদিন যায়নি।পড়াশুনা গোল্লায় যাবে।(প্রেমা)
প্রমার কথা শুনে অভ্র ভাব নিয়ে বলে,
-আমার কোন চিন্তা নেই আমার রেজাল্ট সর্বদা গোল্ডেন থাকে।এইচএসসিতে কম পড়াশোনা করেও আমি আমার রেজাল্ট গোল্ডেন আনবো।দেখে নিও।
-কম পড়াশোনা করবে কেন? (প্রেমা)
-কারণ আমরা আমাদের হ্যাপি মোমেন্ট গুলো খুব স্পেশাল ভাবে কাটাবো। নাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে কী গল্প শুনাবো?
প্রেমা হাসতে শুরু করে। অভ্রের বেশিরভাগ কথায় ওর হাসি পাই।

(চলবে)

আপনাদের রেসপন্স ডাউন কেন?😒 Tarin Jannat

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here