অপূর্ণ_প্রেমগাঁথা #The_Mysterious_Love #আনিশা_সাবিহা পর্ব ১৬

0
470

#অপূর্ণ_প্রেমগাঁথা
#The_Mysterious_Love
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ১৬
প্রতিদিনের মতো মাধুর্যকে নিতে সকাল বেলা তার ফার্মহাউজে চলে আসে অনুভব। দরজার কলিংবেল বাজালে কিছুক্ষণ পর দরজা এসে খুলে দেয় এলিনা। ভ্যাপসা গরমের মাঝে দরদর করে ঘামছে অনুভব। ওদের ক্ষেত্রে গরমের মাঝে থাকা ক্ষতিকারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবুও বাইরে বের হয় অনুভব। এলিনা অনুভবকে দেখে মাথা নত করে। অনুভব শার্টের কলার ঝাড়তে ঝাড়তে ভেতরে প্রবেশ করে বলে….
–“মাধুর্য কোথায়? এখনো জ্ঞান ফেরেনি? নাকি ঘুম থেকে ওঠেনি?”
এলিনা সোজা ভাবে নরম গলায় জবাব দেয়….
–“উঠেছে তো অনেক আগে প্রিন্স তবে ও আজ বাইরে গেল তাড়াহুড়ো করে। খেয়েও গেল না।”
স্থির হয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকায় অনুভব। কড়া গলায় বলে….
–“আমি তোমাকে বলেছিলাম আমি না আসা অবধি ওকে কোথাও যেতে দেবে না। তাহলে কেন দিলে?”
–“আমি তো অনেক বার বারণ করেছিলাম কিন্তু ও শোনে নি প্রিন্স। আমি দুঃখিত।”

নিজের চোখের দুই কোণে হাত রেখে হালকা চোখ কচলে নেয় অনুভব। তারপর সেই হাত পকেটে গুঁজে বলে….
–“কোথায় গেছে আর এতো সকালে তো ওর ইউনিভার্সিটিও নেই। তবে?”
–“হসপিটালে যাবে বলল। ওর কোনো বন্ধুর নাকি বিপদ হয়েছে। এতটুকুই বলল। এই কাছের হসপিটালেই গেছে।”
চোখ বড় বড় তাকায় অনুভব। চোখমুখ জড়িয়ে চোয়াল শক্ত করে বলে….
–“ওহ নো! হসপিটাল এর মানেই তো রক্ত। মাধুর্য যদি একবার রক্ত দেখে আর ওর রুপ বেরিয়ে আসে। তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে। এলিনা!”
–“হ…হ্যাঁ প্রিন্স।”
–“আমি যাচ্ছি। আর এরপর থেকে যদি মাধুর্য একা একা কোথাও যায় সবার আগে আমাকে ইনফর্ম করবে। ফোন শুধু মুখ দেখার জন্য নয়। আন্ডারস্ট্যান্ড?”
এলিনা মাথা ওপর-নিচ দুলাতেই হনহন করে বেরিয়ে যায় অনুভব।

হসপিটালের ভেতর তাড়াতাড়ি ছুটে আসে মাধুর্য। এপাশ ওপাশ চোখ বুলিয়ে খুঁজতে থাকে অরুণকে। না পেয়ে ফোন বের করে কল করে অরুণকে। রিংটোন তৎক্ষনাৎ বেজে ওঠে আশেপাশেই। থতমত খেয়ে পেছনে তাকায় মাধুর্য। অরুণকে দেখে অশান্ত হয়ে ছুটে আসে।
–“অরুণ, আপনি আমাকে এমনভাবে ডাকলেন আর বিপদের কথা বললেন যে আসতে হলো। কি হয়েছে?”
–“সেটা বলছি কিন্তু তোমার ওই বান্ধবী আসেনি?” (আশেপাশে তাকিয়ে)
–“ও আসছে। রাস্তায় আছে। কিন্তু আপনি কেন ডাকলেন আমাকে সেটা তো বলবেন!”
অরুণ তীক্ষ্ণ চোখে পরখ করে নেয় মাধুর্যকে। এই মেয়েটাকে দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। বার বার ছুঁতে ইচ্ছে করে কিন্তু তা তো সে পারবে না। যদি তাকে নিজের করতেই হয় তাহলে কৌশলে করতে হবে। সে মুখটা থমথমে করে বলে ওঠে…..
–“আমার একটা ফ্রেন্ড এক্সিডেন্ট করেছে। তার অনেক রক্তপাত হয়েছে। আর ওর রক্ত নেগেটিভ যেটা কারোর নেই। তোমার আর কবিতার কি আছে?”

বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে মাধুর্য। দিশেহারা হয়ে বলে….
–“তা তো জানি না। কারণ আমি নিজের রক্ত পরীক্ষা কখনো করায়নি। তাই বলতে পারছি না। আর কবিতার কথাও জানি না। ও আসুক সে বলবে। আচ্ছা আপনার ফ্রেন্ড কোথায় আছে চলুন।”
–“ঠিক আছে এসো।”
অরুণ আর মাধুর্য চলতে শুরু করে। একটা কেবিনে গিয়ে ঢুকে একটা ছেলেকে পড়ে থাকতে দেখতে পায় তারা। ছেলেটাকে রক্ত দেওয়া হচ্ছে। মাধুর্য ফিচেল গলায় বলে ওঠে….
–“ওকে তো রক্ত দেওয়া হচ্ছে।”
–“এই এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে হবে না। আরো লাগবে। ব্লাডব্যাংকে এক ব্যাগই ছিল।”
মাধুর্য জবাব দেয় না। স্থির চোখে তাকায় রক্তের ব্যাগের দিকে। চোখের পলক ফেলা বন্ধ করে ফেলে সে। অরুণ মনোযোগ দিয়ে তাকায় মাধুর্যের চোখের দিকে। খেয়াল করতে থাকে ওর চোখের রঙ পাল্টায় কি না। কিন্তু প্রথম পদক্ষেপেই ব্যর্থ হয়। বেজে ওঠে মাধুর্যের ফোন। মাধুর্যের দৃষ্টি সরে যায়। দাঁতে দাঁত চেপে অন্যদিকে তাকায় অরুণ। মাধুর্য কবিতার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতে বেরিয়ে যায়। তার পেছন পেছন বেরিয়ে আসে অরুণ।

কবিতাকে দেখতে পেয়ে ফোন কাটে মাধুর্য। সানগ্লাস পড়ে দাঁড়িয়ে আছে কবিতা। সে হন্তদন্ত হয়ে এসে বলে….
–“কি হয়েছে রে? এভাবে ডাকলি যে। আমি তো ভয় পেয়ে গেছি।”
–“অরুণের ফ্রেন্ড এক্সিডেন্ট করেছে। রক্ত দরকার। তাও নেগেটিভ গ্রুপের। ডক্টর যোগার করতে বলেছে।”
কবিতা চিন্তিত হয়ে বলে….
–“আমার রক্ত তো পজিটিভ।”
কবিতার কথা শুনে মুখটা শুকনো করে অরুণের দিকে তাকায় মাধুর্য। অরুণ নিজের মুখটা থমথমে করাট ভাব ধরে। সামনে রক্তের ব্যাগ নিয়ে আসা নার্সকে দেখে আনমনে হেঁটে এসে হালকা ধাক্কা লাগিয়ে ফেলে দেয় অরুণ। নার্সের হাতে থাকা ট্রে এর ওপর রক্তের ব্যাগ পড়ে যায়। ফ্লোরের আশেপাশে ছিটে যায় রক্ত। মাধুর্য আর কবিতা দুজনেই চমকে তাকায় ফ্লোরে। ঠোঁট কাঁপতে শুরু করে মাধুর্যের। কিন্তু দৃষ্টি শান্ত হয়ে যায়। অরুণ তীক্ষ্ণ চোখে তাকায় দুজনের দিকে। কবিতা সানগ্লাস খুলে তাকায়। বাইরে প্রচন্ড রোদ। তাই সানগ্লাস পড়ে বেরিয়েছিল সে।

কবিতার সানগ্লাস খুলতেই অরুণ হতভম্ব হয়ে যায়। কবিতার চোখের রঙ সবুজ হয়ে এসেছে। কবিতার দিকে এগুতে গিয়েও থেমে যায় অরুণ। হাত মুঠো করে দাঁড়িয়ে থাকে। অন্যদিকে মাধুর্যের দিকে খেয়াল নেই তার। মাধুর্য হুট করেই নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে। তখনই পেছন থেকে এক পুরুষালি গলা ভেসে আসে….
–“মাধুর্য!”
চোখ খুলে পেছন ফিরে তাকায় মাধুর্য ও কবিতা। সেই সঙ্গে অরুণও। অনুভব ইচ্ছে করেই জোরে মাধুর্যকে ডেকেছে। কারণ মাধুর্য নিশ্চয় রক্তের দিকে তাকিয়ে ছিল। দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসতেই ওর চোখ যায় অরুণের দিকে। একটু হলেও কয়েক মূহুর্তের জন্য শকড হয়ে পড়ে সে। পায়ের গতি কমে যায়। চোখমুখ শক্ত হয়ে আসে। যার জন্য ভয় পাচ্ছিল সে ঠিক তাই হলো। দাঁত কিড়মিড় করে তাকায় অনুভব। মাধুর্যের কন্ঠে চোখমুখ স্বাভাবিক করে ফেলে সে।
–“আপনি এখানে?”
–“হ্যাঁ মানে এলিনা বলল তুমি এখানে এসেছো তাই। কেন এসেছো?”

মাধুর্য কিছু বলার আগেই অনুভব বেশ শক্ত গলায় বলে ওঠে….
–“যাও গাড়িতে গিয়ে বসো। আর কবিতা তুমিও। গো।” (বাইরে ইশারা করে কারো দিকে না তাকিয়ে)
–“কিন্তু…. ”
–“আমার কথা তোমাকে শুনতে হবে মাধুর্য। আর আমি যেতে বলেছি।”
অনুভবের লাল চোখ দেখে কিছু বলতে গিয়েও আঁটকে যায় মাধুর্য। কবিতা সানগ্লাস পড়ে ফিসফিস করে বলে….
–“এই চল না। অযথা কেন রাগাচ্ছিস হিরো টাকে?”
কবিতা মাধুর্যের হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায়। বাইরে।
বড় নিশ্বাস নিয়ে অরুণের দিকে তাকায় অনুভব। দুই ধাপ এগিয়ে আসে সে।
–“তোর চেহারা ভুলে যাইনি আমি। তুইও জানিস আমিও জানি তুই কে। কিন্তু নিজের সীমানা অতিক্রম করিস না। তোর ভাগ্য কিন্তু তোর সাথ দেয় বলতে হয়। নয়ত এতো জনবহুল জায়গায় তোর সঙ্গে আমার দেখা হতো না। নয়ত আজই আমি নিজ হাতে তোর মৃত্যু লিখতাম। মাধুর্যের থেকে দূরে থাক দ্যাটস মাই ফার্স্ট অ্যান্ড লাস্ট ওয়ার্নিং। এরপর ওয়ার্নিং দেব না কিন্তু।”

অনুভব হাঁটতে শুরু করে। কিন্তু পেছন থেকে অরুণের তাচ্ছিল্যময় কথাগুলো শুনে যেতে পারে না সে।
–“কেন মাধুর্যের পেছনে পড়েছিস? ও তো সাধারণ মানুষ। নাকি ভাবনাকে মেরে ফেলে আফসোস করছিস। তাই এখন মানুষের পেছনেও ঘুরতে হচ্ছে। হাহাহা।”
চোখের পলক ফেলার আগেই দ্রুত ঘুরে অরুণের কাছাকাছি এসে ধাক্কা দেয় অনুভব। রাগের বশে পাল্টে যায় তার চোখের রঙ।
–“অন্য সবার মতো শান্ত ভ্যাম্পায়ার আমাকে খবরদার ভাববি না। মনে রাখিস, তোরা আমার মনে যে শয়তান সত্তা ঢুকিয়েছিস সেটা কিন্তু এখন অবিচল গতিতে রয়েছে। তোর হৃদয় টেনে বের করতে এক সেকেন্ডও সময় লাগবে না আমার। নিজেকে দূরে রাখ আমার থেকে।”
–“একি! আপনারা এখানে ঝগড়া করছেন কেন? এটা ঝগড়া করার জায়গা নয়। বাইরে যান আপনারা।”
একটি নার্স অনবরত কথাগুলো বলে চলে যায়। অনুভবও নিজেকে স্বাভাবিক করে বেরিয়ে আসে হসপিটাল থেকে।

–“এই মাধু, দেখ না নতুন চোখে লেন্স পড়েছি। কেমন লাগছে?”
থম মেরে বসে আছে মাধুর্য। অনুভবের আজকের ব্যবহারটা অন্যরকম ঠেকল তার কাছে। সেটা নিয়েই ভাবছে সে। কবিতার কথায় বাঁকা চোখে তাকায় সে।
–“আর কোনো কালার পাসনি? সবুজ কালার?”
–“উঁহু… এমনি এমনি তো এই কালার নিইনি। কাল রাতে ভ্যাম্পায়ার মুভি দেখেছি। উফফ…কি জোস লাগছিল জানিস সবুজ রঙের মনি যখন হয়ে গিয়েছিল হিরোর? আর হিরোকে না একদম আমার মি. ক্রাশ অনুভবের মতো দেখতে। দিল ছুঁ দিয়া।”
বুকের বাম পাশে হাত দিয়ে হাস্যকর ভঙ্গিতে কথাগুলো বলে কবিতা। মাধুর্য না চাইতেও হেসে ওঠে। এই হাসাহাসির মাঝে হানা দিয়ে গাড়িতে উঠে বসে অনুভব। স্টিয়ারিং এ হাত রেখে অনুভব বাঁকা হেসে বলে….
–“কি নিয়ে কথা হচ্ছিল?”
কবিতা লাফিয়ে বলে ওঠে….
–“ভ্যাম্পায়ার।”
–“দেখেছো কখনো?”

কবিতা মাথা নাড়িয়ে না জানায়।
–“শুধু মুভিতে দেখেছি। এটা কি রিয়েলে হয় নাকি?”
অনুভব সামনের দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি দেয়। তা নজর এড়ায় না মাধুর্যের। কিছুটা কনফিডেন্স এর সুরে সে বলে ওঠে….
–“হতেই পারে। দুনিয়ায় এমন অনেক কিছুই ঘটে বা থাকে যেটা মানুষের কাছে শুধুমাত্র রূপকথা হিসেবেই পরিচিত। কখন কি ঘটে তা কি কেউ বলতে পারে?”
অবাক চোখে তাকায় মাধুর্য। অনুভবের কথায় মনে পড়ে ওর সেদিনের কথা। অন্য এক জগত। ওটা তো ছিল রূপকথারই জগত। গা শিউরে ওঠে চুপ করে বসে থাকে সে এক কোণে ঠেস লাগিয়ে।
হালকাপাতলা কথা বলতে বলতে ইউনিভার্সিটিতে পৌঁছে যায় ওরা। কবিতা নেমে গেলেও মাধুর্য নামতে নিলে ওর হাত পেছন থেকে টেনে ধরে অনুভব। গোল গোল চোখে তাকায় মাধুর্য। কবিতা আগে আগে চলে গেছে।

–“কি হলো? ছাড়ুন। ইউনিভার্সিটি যেতে হবে তো।”
–“আজকে যাবে না তুমি। গাড়িতে বসো।”
–“কিন্তু কেন?”
অনুভব কোনো রকম ভাবভঙ্গি না করেই সোজাসাপটা ভাবে উত্তর দেয়।
–“কারণ আমি বলেছি। আর আমার কথা তোমাকে শুনতে হবে।”
–“আপনি এতোটা নিশ্চিত হচ্ছেন কি করে? আমি আপনার কথা শুনবই?”
অনুভব আবারও সাবলীল ভাবে প্রতিত্তোর দেয়।
–“বিশ্বাস নিয়েই বলছি। সব কিছুতে নিশ্চয়তা খুঁজতে নেই। কিছু কিছু সময় বিশ্বাস রেখে কথাগুলো বলতে হয়।”
হাতটা ছেড়ে দেয় অনুভব। ঘড়ির কাটা দেখে স্টিয়ারিং এ হাত রেখে বলে ওঠে….
–“২ মিনিট। জাস্ট ২ মিনিট অপেক্ষা করছি। তুমি ভেতরে যাও ফিরে আসতেই হবে এই ২ মিনিটে।”
কিছুক্ষণ সরু চোখে তাকিয়ে থেকে ধীর পায়ে চলে গেল ইউনিভার্সিটির ভেতরে। অনুভব হালকা হেসে বলে….
–“আমার ভাবনা কখনোই আমার কথা নড়চড় করার ইচ্ছেটুকু প্রকাশ করত না। আজও করবে না। তুমি একই রকম রয়ে গেছো ভাবনা।”

ঠিক মিনিট দুয়েক পরই হন্তদন্ত হয়ে গেট থেকে বের হতে দেখা যায় মাধুর্য। জানালা দিকে মাধুর্যকে দেখে নিজের হাসি প্রসারিত করে অনুভব। গাড়ির কাছে আসতেই অনুভব দ্রুততার সঙ্গে বলে ওঠে….
–“রিলাক্স! আমি চলে যাইনি এখানেই আছি। এমন ভাব করছো যেন বিয়ে করার জন্য পালিয়ে এসেছো।”
–“হোয়াট ননসেন্স!”
–“তোমার এভাবে আসা দেখে সবাই এটাই ভাববে। এনিওয়ে, তুমি ফিরলে কেন?”
মাধুর্য মিইয়ে যায়। মিনমিন করে বলে….
–“আপনি কি এমন জাদু করেছেন আমার ওপর? অমান্য করতে পারিনি আপনার কথা।”
অনুভব নিজের কন্ঠস্বর ক্ষীণ করে বলে ওঠে…..
–“রোগ! ভয়ানক রোগ আঁকড়ে ধরছে যে তোমায়। আমার প্রতি তোমার একটা অনুভূতির সংমিশ্রণ তৈরি হয়েছে। বৃথা নিজের মনের বিরুদ্ধে যেও না। বসো গাড়িতে।”
মাধুর্য মাথা নাড়ায়। উঠে বসে অনুভবের পাশে।

ভ্যাম্পায়ার রাজ প্রাসাদ আলোয় ঝলমলে হয়ে উঠেছে। কোথাও কোনো কমতি নেই। আশপাশের সবকিছুতে রাজকীয় ভাব। এই বড়সড় প্রাসাদকে আবারও আগের মতো করার চেষ্টায় সফল হয়েছেন ভ্যাম্পায়ার কিং প্রলয়। তবে মনের মাঝ থেকে কমেনি চিন্তা। প্রণয় বেশ কিছুক্ষণ ধরে তার ভাইয়ের চোখেমুখে দুঃশ্চিতার ছাপ লক্ষ্য করছেন। এবার না পেরে প্রশ্ন করে ওঠে……
–“কি হয়েছে তোমার প্রলয় ভাই? তোমাকে চিন্তিত দেখাচ্ছে। আমাদের রাজ্য আগের মতো হতে চলেছে। আমাদের তো খুশি হওয়া উচিত।”
কিং প্রলয় চিন্তিত সুরে বলে ওঠেন….
–“আমি জানি প্রণয়। কিন্তু আমি খুশি হতে পারছি না। তুমি জানো আমি কালকে মাধুর্য চৌধুরীকে দেখেছি। ওর ব্যবহার, ওর চেহারায় ভাবনার প্রতিচ্ছবি দেখেছি আমি। বুঝতে পেরেছি আমি অনুভবের কেন এতোটা টান ওই মেয়ের প্রতি।”
–“কিন্তু এতে ক্ষতি কোথায়? ভাবনা যদি ফিরে আসে অনুভবের জীবনে তাহলে তো ভালোই।”
–“ক্ষতি আছে প্রণয়। ভাবনা এলে এর উল্টো টাও হতে পারে। হতে পারে, ও আমার ছেলের ওপর প্রতিশোধ নিতে এলো। তখন কি হবে?”

এবার প্রণয়ও চিন্তিত হয়ে পড়ে।
–“তাহলে এখন উপায় কি প্রলয় ভাই?”
–“আমি উপায় ভেবে রেখেছি প্রণয়। মাধুর্য থেকে অনুভবকে দূরে করার একটাই উপায়। অনুভবকে বিয়ে দেব আমি। এতে অনুভব দূরে সরে আসবে। প্রণয় তুমি মেয়ে দেখো। যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে দিতে চাই আমি অনুভবের। দেরি করে লাভ নেই। নয়ত ছেলেকে হারিয়ে বসব আমি। চাই না আমি ছেলেকে হারাতে।”

চলবে…..🍀🍀
বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here