তোমার_আমার_প্রণয় #israt_jahan_arina #part_34

0
793

#তোমার_আমার_প্রণয়
#israt_jahan_arina
#part_34

বর্তমান:
আখি রহমান ফজরের নামাজ শেষ করে গেলেন শাশুড়ির রুমে। শামসুন্নাহার বেগমের আজ কাল কোমরের ব্যাথা বেড়েছে।সকালের দিকে ব্যথা বেড়ে যায়।তাই আখি রহমার তেল গরম করে নিয়ে এসেছেন।শাশুড়ির পাশে বসে বললেন

-“আম্মা একটু কাত হয়ে শুয়ে পড়ুন।আমি তেল মালিশ করে দিচ্ছি।”

-“আর তেল দিয়ে কি হইবো। যাওনের সময় হয়ে গেছে।অহন কতো কি যে হইবো।”

-“আম্মা এমন কথা কেনো বলেন?যাওয়ার সময় আল্লাহ নির্ধারণ করে,বয়স না।আপনি যথেষ্ট স্ট্রং আছেন।”

শামসুন্নাহার বেগম আফসোসের সুরে বললেন
-“বয়স তো কম হইলো না। কতো সখ আছিলো নাতির ঘরে পতি দেইখা মরমু।হেইডা আর হইলো কই? ঘাড় তের পোলা তোর।তার চাইতে বেশি ঘাড় তেরা তুই।আজ এতো বছর ধইরা আমার নাতি তোর লগে কথা কইতে চায়।আর তুই পাষাণের লাহান পাথর হইয়া রইছস।”

-“আম্মা আবার এইসব শুরু করলেন?”

-“তো কি করুম?তোরা কেউ আমার কোনো কথার মূল্য দেস?আইজ কাইল ওই মাইয়াও আবার আমার নাতির পিছে পড়ছে। কাল রাইতে আমরিন হেরে মাহাদের অফিসে দেখছে।”

শাশুড়ির কথা শুনে আখি রহমান কিছুটা চমকে গেলেন।শামসুন্নাহার বেগম আবার বললেন

-“আমি তোরে আগেই কইয়া দিলাম ওই মাইয়া আমি ঘরে তুলমু না।ওই বংশের ছায়াও যেনো আমার বাড়িত না পড়ে।আমার সংসারের সুখ নষ্ট কইরা গেছে। আবার কি করতে আইছে ওই মাইয়া?ওই মাইয়া এই বাড়িত আইলে ছুলের মুডি ধইরা বাইর করমু বইলা দিলাম।”

আখি রহমান কিছুই বললেন না।তবে তাকে দেখে চিন্তিত মনে হচ্ছে।তিনি শাশুড়ির রুম থেকে বের হতেই দেখতে পেলেন তার ছোটো ছেলে অনেকটা রেগে মাহাদের রুমের দিকে গেলো।তিনি ভীষণ অবাক হলেন।কারণ তার এই ছেলেটা সব পরিস্থিতে হাসি খুশি থাকে।পরিবারের কষ্টের মুহূর্তে এই ছেলেটাই সকলকে সামলেছে।তাহলে আজ এতো রাগের কারণ কি?

মাহাদ আড়মোড়া ভেঙে বিছানা ছেড়ে উঠে বসলো।মাথা প্রচন্ড ব্যাথা করছে। কাল ড্রিংক কি বেশি করে ফেললো?মাথার চুল খামচে উঠে বসতেই চমকে গেলো।মাহিম তার বরাবর কাউচে বসে আছে।এতো সকালে ছোট ভাইকে দেখে একটু অবাক হলো।মাহিম গম্ভীর স্বরে বললো

-“ঘুম ভালো হয়েছে তো ভাই?”

মাহাদ বললো
-“হুম হয়েছে।”

মাহিম এক গ্লাস লেবু পানি এগিয়ে দিয়ে বললো
-“মাথা ব্যাথা করছে নিশ্চয়ই।এইটা খাও কমে যাবে।”

মাহাদ এক দৃষ্টিতে মাহিম কে দেখে যাচ্ছে।আজ ছোট ভাইটার কথা গুলো কেমন শক্ত মনে হচ্ছে।সে ড্রিংক টা শেষ করে গ্লাসটা পাশের ছোট টেবিলে রাখলো।মাহিম
বললো

-“এবার নেশাটা কেটেছে তো?নাকি মাতলামি আরো বাকি আছে?”

-“এই ভাবে কথা বলছিস কেনো?”

-“তাহলে কি ভাবে কথা বলবো? উপস!! সরি।রকস্টার মাহাদের সাথে তো সামলে কথা বলতে হবে।তুমি তো আর আমার ভাই নাই।সেলিব্রিটি হয়ে গেছো।”

-“কি হয়েছে বলবি?”

মাহিম তাচ্ছিল্য হেসে বললো
-“সত্যি তোমার মনে নেই কি হয়েছে?তোমাকে আমার ভাই বলতেও লজ্জা লাগছে।”

একদিকে মাথা বেথা অন্য দিকে মাহিমের ব্যাবহার সব মিলিয়ে ভীষণ বিরক্ত হচ্ছে মাহাদ।সে বললো

-“আমার উপর এতো চটে আছিস কেনো?”

-“আমি চটে নেই ভাই। জাস্ট অবাক হচ্ছি।এতো দিন তুই মাতাল হয়ে বাসায় ফিরতি।মাতাল হয়ে মিডিয়ার সাথে ঝামেলা করতি।আমি কখনো কিছুই বলিনি।কিন্তু কাল যা করেছিস সেটা আমি কিছুতেই মানতে পারবো না।”

মাহাদ এবার কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো।সে কাল ঠিক কি করেছে সেটা মনে করতে পারছে না।লাস্ট শুধু এই টুকুই মনে আছে দৃশ্য আর মৃদুলকে এক সাথে দেখে তার ভীষণ রাগ হয়েছিলো।রাগ কমানোর জন্য কয়েক প্যাক গিলেছে।তার পর আর কিছুই মনে পড়ছে না। মাহাদ আতঙ্কিত হয়ে বলল

-“কি…. কি করেছি আমি?প্লিজ ভাই আমার বল?”

মাহিমের দুই চোখ ভিজে আসলো।দৃশ্যর সেই করুন অবস্থা চোখের সামনে ভেসে উঠলো।সে মাহাদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে বেলকনিতে তাকালো।আর বললো

-“ভাবির গায়ে হাত কেনো তুললে?এটাই তোমার ভালোবাসা?হাত কাপলো না?ওই বাচ্চা মেয়েটার উপর তোমার কিসের এতো রাগ!সব কিছুতে ভাবির দোষ কোথায়?তুমি নিজেই তার হাত ছেড়ে দিয়েছিলে।তাহলে তাকে এই ভাবে আঘাত করার মানে কি?সবাই মিলে অন্যায় করছো ভাবির সাথে।”

মাহাদের বুকটা কেপে উঠলো।পুরো শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসছে।সে সত্যি দৃশ্যকে আঘাত করেছে?
মাহিম আবার রেগে বললো

-“কাল মেয়েটার মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না।মাঝ রাস্তায় ভাবির গায়ে হাত তুলে পুরুষত্ব দেখাতে চেয়েছিলে? নাকি তোমার ক্ষমতা বুঝাতে চেয়েছিলে?”

মাহাদ কিছুই ভাবতে পারছে না। বুকের বা পাশে বক্ষস্থল ভীষণ ব্যথা হচ্ছে। দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অনুতাপের অশ্রু।

বীভৎস একটা রাত কেটে গেল দৃশ্যর। রাতে ভীষণ জ্বর উঠেছিল।গা পুরে যাচ্ছিলো জ্বরের তাপে।মেয়েটা মার সহ্যই করতে পারে না।আজ অব্দি যত আর তার গায়ে হাত উঠেছে ঠিক ততবারই সে জ্বরে ভুগেছে।

লতা আর জিনিয়া মিলে সারা রাত জল পট্টি দিয়েছে।কখনো মাথায় পানি ঢেলেছে।মেয়েটা জ্বরের ঘোরে কত কিছু বির বির করছিলো।রাতেই দৃশ্যর গা মুছতে যেয়ে লতা আর জিনিয়া দেখতে পেলো দৃশ্যর গলায় অসংখ্য কামড়ের দাগ।আর পেটে খামছির দাগ। গালের আঙ্গুলের ছাপ তো আগেই দেখেছে।জিনিয়া ভীষণ ঘাবড়ে গিয়েছিলো।মাথায় অসংখ্য খারাপ ভাবনা আসছিল।দৃশ্যর সাথে কি হয়েছে সেটা না জানা অব্দি কিছুতেই শান্তি পাবেনা সে।

আখি রহমান নিজের রুমের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন। চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অশ্রু।ছেলের এই অবনতি তিনি মানতে পড়ছে না।মাহিমের আর মাহাদের সব কথাই তিনি শুনেছেন।তবে আজ ছেলেকে কিছু বলবেন বলে ভেবেছেন।ছেলেটা যে অমানুষের পরিণত হচ্ছে সেটা জানাতে হবে।

তিনি উপরে উঠে মাহাদের রুমে প্রবেশ করলেন।এই রুমে তিনি বেশি একটা আসেন না।সারা রুমে চোখ বুলিয়ে মাহাদকে পেলেন না।আর একটু সামনে আগাতেই কিছু শব্দ তার কানে ভেসে আসে।ওয়াশরুম থেকে সেই শব্দ আসছে।তিনি দরজার কাছে দাড়াতেই আঁতকে উঠলেন।কারণ ভেতর থেকে কান্নার শব্দ আসছে।চিৎকার করে কাদছে মাহাদ।তবে দরজা বন্ধ বলে বাহিরে তেমন একটা শব্দ আসছে না।

আখি রহমান দরজার সামনের বসে পড়লেন।কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে।কোনো মা কি তার সন্তানের এই করুন কান্না সহ্য করতে পারে?আজ তার কয়েক বছর আগের কথা মনে পড়ছে।ছেলেটা তখনও ঠিক এই ভাবে গভীর রাতে কাদতো।তার রুম থেকে গভীর রাতে ফুপানোর শব্দ আসতো।তার পর ধীরে ধীরে ছেলেটা বদলাতে থাকে।অনেক দিন ধরে আর ছেলের রুম থেকে এমন কান্নার শব্দ আসতো না।কিন্তু আজ!!!ছেলের মনের অবস্থা তিনি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন।ছেলেটা ঠিক বাবার মতো হয়েছে।ইমোশনাল।
দৃশ্য চোখ খুলে তার মাথার কাছে লতা আর জিনিয়াকে দেখতে পেলো।তাদের চিন্তিত মুখ দেখে দৃশ্য মুচকি হাসলো।ফিসফিসিয়ে বললো

-“তোমরা এখানে কি করছো আপু? অফিসে যাওনি?”

লতা মলিন স্বরে বললো
-“ফাইজলামি কম কর। তোকে এ অবস্থায় রেখেই অফিসে যাব মাথা খারাপ? এখন কেমন লাগছে তোর?”

দৃশ্য নিচু সরে বললো
-“রাতভর তোমাদের সেবা নিয়ে খারাপ কি করে থাকি বলো? এই জিনিয়াটা এতো ছিঁচকাঁদুনে কেন? রাতভর দেখি চোখের জলে নাকের জলে এক করে ফেলেছে।”

জিনিয়া নাক টেনে বললো
-“তুই জানিস আমি কত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম? কি হয়েছে সত্যি করে বল? তোর শরীরে এসব কিসের দাগ?”

দৃশ্য দুষ্টুমি করে বললো
-“ভালোবাসার দাগ। লাভ বাইট বুঝিস?”

লতা বিরক্ত হয়ে বললো
-“দৃশ্য এখন মোটেও মজা করার মুডে নেই। কি হয়েছে সত্যি করে বল। কেউ কি তোর সাথে কোন খারাপ কিছু করার চেষ্টা করেছে?”

এবার দৃশ্য কিছুটা সিরিয়াস হয়ে গেল।মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে বললো

-“আমার জীবনে খারাপ হওয়ার আর কিছু নেই আপু। আপন মানুষ গুলোর দেওয়া কষ্ট আমার ভেতরটাকে শেষ করে দিয়েছে।এইযে শরীরের আঘাতগুলো দেখছো কিন্তু আমার ভেতরের আঘাত কাউকে দেখাতে পারছি না। রাতে শরীরের আঘাতে যেমন মলম লাগিয়ে দিয়েছিলে ভেতরে আঘাত গুলোকে কোন মলম দিয়ে সরাবো বলো তো?”

কথাটা বলতে বলতে কয়েক ফোঁটা অশ্রু বিসর্জন দিলো।জিনিয়া এতো খনে ফুঁপাতে শুরু করেছে। লতা দৃশ্যর চোখের জল মুছে দিয়ে বললো

-“কষ্ট করে একটু উঠে বস নাস্তা করে নে তোর ঔষধ আছে।”

দৃশ্য মাথা নেড়ে হ্যা জানালো। লতা আপু জিনিয়ার দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে বলল
-“এই রুম থেকে বের হ।আমার রুমে বসে বসে যতো খুশি কাদ।যা বের হো।”

লতা দৃশ্যকে নিজ হাতে নাস্তা খাইয়ে দিলো।এই মেয়েটার মাঝে দৃশ্য মা মা ফিল পায়।লতা আপু না থাকলে সে হয়তো বিষাদে ছেয়ে যেতো।এই মানুষটাই তাকে সব কষ্ট চাপা দিয়ে সামনে আগাতে শিখিয়েছে।এই মানুষটা জোর না করলে হয়তো তার লেখাপড়াটা ও বন্ধ হয়ে যেতো।মন থেকে শ্রদ্ধাবোধ কাজ করে মানুষের জন্য।

লতা আর জিনিয়া মিলে দুপুরের রান্না করছে।জ্বরের কারণে দৃশ্য কিছুই খেতে পারছে না।তাই দৃশ্যর জন্য চিকেন সুপ করছে।যদি কিছু খাবার পেটে পড়ে।কাজের মাঝেই বাসার ডোর বেল বেজে উঠল। লতা জিনিয়া কে বলল দরজা খুলতে।জিনিয়া হাত ধুইয়ে দরজা খুলে দেখলো সামনের মানুষটি কে। কালো জ্যাকেট,কালো জিন্স পরা একজন লোক।যার মুখে কালো মাস্ক।মাথায় কালো ক্যাপ। আর চোখে কালো সানগ্লাস।লম্বা চওড়া মানুষটিকে দেখে জিনিয়ার কপাল কুঁচকে গেল।কালো রঙের প্যাকেট হওয়া মানুষটিকে চিনতে পারলো না।হাতের ফোলা পেশী দেখে জিনিয়া একটু চিন্তিত হলো।এই বিশাল দেহী লোকটা কোনো ডাকাত নয় তো?সে ভয়ে ভয়ে বললো

-“কে আপনি?কাকে চাই?”

সামনের মানুষটি মিষ্টি কন্ঠে বললো
-“দৃশ্য বাসায় আছে?”

এবার জিনিয়া একটু ঘাবড়ে গেলো।অচেনা একটা মানুষ হটাৎ দৃশ্যর খোঁজ কেনো করছে?দৃশ্যর কোনো ক্ষতি করতে চাইছে না তো?সে বললো

-“দৃশ্যকে কি দরকার আপনার?”

লোকটা আসে পাশে তাকিয়ে আবার বললো
-“ভেতরে এসে কথা বলি?”

জিনিয়া অবাক হলো।অচেনা একটা লোক বাসায় আসতে চাইছে।তার কি করা উচিৎ বুঝতে পড়ছে না।জিনিয়াকে অবাক করে দিয়ে লোকটা তাকে পাশ কাটিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লো।জিনিয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এবার কিছুটা রেগে জিনিয়া বললো

-“আরে আশ্চর্য!আপনি ভেতরে কেনো চলে আসলেন?কে আপনি?”

জিনিয়ার কথায় লোকটা তার দিকে ফিরে মাথার ক্যাপ আর মুখের মাস্ক খুলে ফেললো।জিনিয়া যেনো বড়ো সরো শক খেলো।সে লোকটির দিকে হা করে তাকিয়ে রইল।সে কি সত্যি দেখছে?রকস্টার মাহাদ সত্যিই কি তার সামনে দাড়িয়ে আছে?এটা কি করে সম্ভব?সে নিজের হাতে জোরে চিমটি কাটলো।আর সাথে সাথে আহ্ করে উঠলো।তার মানে সব সত্যি।কিন্তু কেমনে কি? মাহাদ ব্রু কুচকে জিনিয়ার দিকে তাকালো।

লতা রান্নাঘর থেকে বের হয়ে বলতে লাগলো
-“কে এসেছে জিনি…..!

আর বলতে পারলো না।সামনের মানুষটিকে দেখে অবাক হয়ে গেলো।রকস্টার মাহাদ তার সামনে দাড়িয়ে আছে।
মাহাদ তাদের অবস্থা বুঝতে পারলো।তাই লতাকে উদ্দেশ্য করে বললো

-“দৃশ্য কোথায়?”

লতা কিছুটা চমকালো।সে দৃশ্য খোঁজ কেনো করছে?লতা খেয়াল করলো মাহাদের চোখ লাল হয়ে আছে।কিছু একটা ভেবে লতার চোখ বড় হয়ে গেলো।সে হাতে ইশারা করে দৃশ্যর রুম দেখিয়ে দিলো। মাহাদ থ্যাঙ্কস জানিয়ে সে রুমের দিকে এগিয়ে গেল। জিনিয়া এখনো হা করে তাকিয়ে আছে।সে লতাকে বললো

-“এইটা কি হলো আপু।আমি স্বপ্ন দেখছি নাতো?”

-“না।”

-“আপু আমি যেইটা ভাবছি সেইটা কি সঠিক?”

-“কি ভাবছিস?”

-“দৃশ্যর মাহাদই কি এই রকস্টার মাহাদ?”

-“আমারও তাই মনে হচ্ছে।”

-“ওই বান্দরনী আমাদের আগে বললো না কেনো?”

লতা বিরক্ত হয়ে বললো
-“জানিনা।”

দৃশ্য খাটে হেলান দিয়ে ফোন চাপছিল।জ্বরের কারণে বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছে না।শুয়ে শুয়ে একদম বোর হয়ে গেছে।তাই ফোন বার বার স্ক্রল করছে।দরজা খোলার শব্দ পেয়ে সামনে তাকিয়ে থমকে গেলো।নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। মাহাদ এখানে কি করে আসতে পারে?জ্বরের ঘোরে উল্টাপাল্টা দেখছে নাতো?গলা শুকিয়ে আসছে।কয়েক বার শুকনো ঢোক গিলতে লাগলো।কেমন তেতো সব।নিশ্চয়ই জ্বরের কারণে।

মাহাদ বিছানায় বসা দৃশ্যর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে দৃশ্যর।সে দৃশ্যর দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো।

মাহাদ কে কাছে আসতে দেখে দৃশ্য চট করে বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালো।তার হাত পা কাপছে।ঠিক মত দাড়াতে পারছে না।কাপা কাপা গলায় বললো

-“আপনি এখানে? এখানে কেনো এসেছেন?”

মাহাদ সোজা দৃশ্যর সামনে দাড়ালো।দৃশ্যর গালে অনেক গুলি আঙ্গুলের ছাপ।পুরো গাল লাল হয়ে আছে।তারপর চোখ পড়লো দৃশ্য গলায়।অসংখ্য নীলচে কামড়ের দাগ।তার দু চোখ আবার ভিজে উঠল সামনের সব ঝাপসা লাগছে।
মাহাদের এমন তাকানো দেখে দৃশ্যর হুস হলো যে তার গায়ে ওড়না নেই।বিছানার পাশের থেকে ওড়নাটা নিয়ে দ্রুত গায়ে জড়িয়ে নিলো।

মাহাদ এগিয়ে এসে দৃশ্যর চিবুকে হাত রাখতেই বুঝতে পারলো দৃশ্যর গায়ে জ্বর।দৃশ্য অবাক হয়ে মাহাদ কে দেখছে।এই মুহূর্তে মাহাদ কে আগের মাহাদ বলে মনে হচ্ছে।
মাহাদ দৃশ্যর কপালে ঠোঁট জোড়া ছুয়ে দিলো।মুহূর্তেই দৃশ্য কেপে উঠলো।পুরো শরীর জুড়ে শিহরণ বয়ে গেলো।কয়েক সেকেন্ড পর ফিল করলো তার কপাল ভিজে উঠেছে। মাহাদ কি কদছে?কেনো?দৃশ্য মাহাদকে ছাড়াতে চাইলে মাহাদ তাকে জড়িয়ে ধরলো।দৃশ্যর পুরো শরীর কাপছে।পুরো শরীর অসাড় মনে হচ্ছে।সে মনে হয় আর দাড়িয়ে থাকতে পারবে না।হটাৎ তার কানে এলো মাহাদের কথা।

-“ভালোবাসি বউ।”

দৃশ্য চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো।এই লোকটা কি তাকে দুর্বল করতে চাইছে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here