ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:27
.
ছোঁয়াঃ- সেই সময় কবে আসবে বলুন আমাকে আপনি??
জয়ঃ- বেশি দেরি নেই।খুব শীঘ্রই।
ছোঁয়াঃ- কবে আমি যে ওয়েট করতে পারছি না আর।
জয়ঃ- এই অপেক্ষা জিনিসটাই তোমাকে এখন শিখতে হবে।সরি তুমি বলে ফেললাম।
ছোঁয়াঃ- ইটস ওকে জয় বাবু।
জয়ঃ- আপনার বাসায় চলে এসেছি।
ছোঁয়াঃ- বাই।
ছোঁয়া গাড়ি থেকে নেমে গেল।বাইরে এখনও বৃষ্টি হচ্ছে।তাই জয়ও গাড়ি থেকে নামল।ছাতা নিয়ে বের হল।ছোঁয়ার মাথার উপর ধরল ছাতাটা।
যাতে ছোঁয়া না ভিজে যাই সেই জন্য।ছোঁয়া বলতে লাগল,,
ছোঁয়াঃ- ছাতা লাগবে না জয় বাবু।আমার বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগে।
জয়ঃ- যতই ভিজতে ভালোবাসুন যখন ঠান্ডা জ্বর লাগবে তখন কান্না করবেন।
ছোঁয়া অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে জয়ের দিকে।ছোঁয়া যে কান্না করে যখন ওর জ্বর আসে সেইটা জয় কি করে জানল।এইটা জয়ের মুখে শুনে ছোঁয়া অবাক হচ্ছে।ছোঁয়া বলতে লাগল,,
ছোঁয়াঃ- আপনি কি করে জানলেন আমি কান্না করি জ্বর আসলে ঠান্ডা লাগলে।
জয়ঃ- আপনি ছাতাটা নিয়ে যান।আমি আসছি।আমার কাজ আছে।
ছোঁয়াঃ- আচ্ছা বাই।
জয় তাড়াতাড়ি করে গাড়িতে যেয়ে বসল।ছোঁয়া জয়ের যাওয়ার পানের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।ছোঁয়া ছাতাটা নিয়ে ভিতরে চলে গেল।
___________________________________________________________
জয় তাড়াতাড়ি করে ওর বাসায় চলে আসল।নিজের ঘরে চুপ করে বসে রয়েছে।কিছুখন পর জয় জানালার কাছে গেল।জানালাটা খুলে দিল।জানালা খোলার সাথে সাথে বৃষ্টির পানির ঝাপটা মুখে এসে লাগতে লাগল।
জয় এর আজকে এই বৃষ্টির পানি অনেক ভালো লাগছে।ওর চোখ দিয়ে যে পানি পড়ছে সেইটা ও খেয়ালই করে নি।রাবেয়া জয় এর ঘরে আসল।জয়কে জানালার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলছে,,,
রাবেয়াঃ- জানি বাবা তোমার অনেক কষ্ট হচ্ছে নিজের পরিবারের সামনে এইভাবে অভিনয় করে থাকতে।বিশেষ করে ছোঁয়ার সামনে।
জয়ঃ- আপনি যদি না থাকতেন তাহলে কি যে হত।আপনি আমাকে নতুন জন্ম দিয়েছেন।নিজের ছেলের জায়গায় জায়গা দিয়েছেন।ওই শয়তান গুলোকে শাস্তি দেওয়ার জন্য সাহায্য করছেন।বিনা দোষে আবিরকেও মরতে হল।কিন্তু কোন মতে আমি বেঁচে গেলাম।আপনি আমাকে আবার জন্ম দিয়েছেন মা।
জয় কান্না করতে লাগল।রাবেয়ার চোখ দিয়েও পানি পড়ছে।রাবেয়া জয়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে বলতে লাগল,,,
রাবেয়াঃ- কাঁদে না বাবা।কাঁদে না বাবা।
জয়ঃ- মা আমাকে কথা দিন যতখন না পর্যন্ত আমি ওই শয়তানগুলোকে শাস্তি না দিচ্ছি আপনি বলবেন না কাউকে যে আমি প্রান্তিক।বিশেষ করে ছোঁয়াকে।কথা দিন মা।
রাবেয়াঃ- কথা দিচ্ছি আমি বলব না কাউকে তুমি প্রান্তিক।
জয়ঃ- আমি জানি আপনি বলবেন না।
রাবেয়াঃ- এইবার চোখের পানি মুছ আর ফ্রেস হয়ে আস।আমি খাবার দিচ্ছি।
জয়ঃ- এখন খেতে মন চাচ্ছে না আম্মু।
রাবেয়াঃ- আমার সামনে কোন না না।এখনি যা বলছি।
জয়ঃ- যাচ্ছি।
জয় এর ঘর থেকে রাবেয়া চলে গেল।জয় ওয়াশরুমে চলে গেল।
_____________________________________________________________
ছোঁয়া ওর রুমে চলে আসল।ছাতাটা বন্ধ করে যত্ন করে রেখে দিল।ছোঁয়া কিছুটা হলেও ভিজে গেছে।ছোঁয়া শাড়ি চেন্জ করতে চলে গেল।ছোঁয়া চেন্জ করছে আর ছোঁয়ার মনে পড়ছে প্রান্তিকের পাগলামিগুলো।
প্রান্তিক সব সময় পাগলামি করত ছোঁয়াকে শাড়ি পড়ানোর জন্য।আর ও সেটা করেই ছাড়ত।সেই মূহুর্ত গুলো মনে পড়ছে।ছোঁয়া শাড়িটা চেন্জ করে ফেলল।ছোঁয়া বিছানার উপর বসে পড়ল।ছোঁয়া মনে মনে বলতে লাগল,,,
ছোঁয়াঃ- উনার সব কাজকর্ম আমার ছোট সাহেবের সাথে কেন মিলে যাচ্ছে।আমি যে সব গুলিয়ে ফেলছি।আমার মাথাটা অনেক ব্যথা করছে।
কাজল ছোঁয়ার ঘরে আসল।কাজল ছোঁয়ার পাশে এসে বসল।কাজল যে ছোঁয়ার ঘরে এসেছে।সেইটা ছোঁয়া খেয়ালই করেনি।কাজল ছোঁয়াকে ধাক্কা দিল।ছোঁয়া কাজলের দিকে তাকাল।আর বলতে লাগল,,,
ছোঁয়াঃ- আপু তুমি।
কাজলঃ- হ্যা আমি।তুই এত মনমরা হয়ে থাকিস কেন বলতো??
ছোঁয়াঃ- আমি একটা কথা ভাবছিলাম।
কাজলঃ- কি কথারে ছোঁয়া??
ছোঁয়াঃ- না না আপুকে বলা যাবে না।(মনে মনে)
কাজলঃ- কি হল আবার??বল।
ছোঁয়াঃ- কিছু না আপু।
কাজলঃ- আমায় একটা কথা সত্যি সত্যি বল তো।
ছোঁয়াঃ- জ্বি আপু।
কাজলঃ- ওই ছেলেটাকে তোর কেমন লাগল??
ছোঁয়াঃ- ভালোই।
কাজলঃ- একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিস ওর মধ্যে না প্রান্তিকের আচরন গুলো ফুটে উঠেছিল।
ছোঁয়াঃ- তারমানে আপুও বিষয়টা খেয়াল করেছে।(মনে মনে)কোথায় আমি তো খেয়াল করেনি।
কাজলঃ- ওও।
ছোঁয়াঃ- হুম।
____________________________________________________________________
সিরাজ অনেক রেগে রয়েছে।রাগে একদম গজ গজ করছে।সিরাজ বলতে লাগল,,,
সিরাজঃ- এতই যখন বিয়ে দেওয়ার ছিল তখন ওই ছেলেটার সাথেই কেন দিতে হবে??আমি কি কম ছিলাম নালি।না আমি এই বিয়ে কিছুতেই দিতে দিব না।যদি বিয়েই হয় তাহলে আমার সাথেই হবে আর কারোর সাথে নয়।
সিরাজ রাগতে রাগতে সব কিছু ভাঙ্গতে লাগল।সাদমান সিরাজের ঘরে আসল।সিরাজকে থামানোর চেষ্টা করছে।সিরাজ কিছুতেই থামছে না।সাদমান সিরাজকে একটা চড় মারল।
সিরাজঃ- বাবা তুমি আমাকে মারলে।
সাদমানঃ- হ্যা মারলাম।
সাদমানকে একজন এসে বলতে লাগল আজহার সাহেব এসেছে।সাদমান নিচে গেল।আজহার কে যেয়ে জড়িয়ে ধরল।
.
.
চলবে।