#পতিতা_বউ
২৯তম পর্ব
নুহার জ্ঞান ফিরলো প্রায় একদিন পরে। এইটুকু সময়ে আফিফ নুহার পাশ থেকে একদমই নড়েনি। ঔষধ পত্র আনার জন্য রাফিই বাহিরে যেত। আফিফ নুহার কেবিনেই বসে থাকতো নুহার পাশে। একদিন পরে জ্ঞান ফিরলেও নুহা তখনো সুস্থ হয়নি।
প্রায় পাঁচদিন পরে নুহাকে রিলিজ করা হয়। এই পাঁচ দিনে আফিফ আর রাফি মিলে যথেষ্ট সেবাযত্ন করেছে নুহার। নুহা প্রেগন্যান্সির বিষয় টি জানতো না তাই পরে মিসক্যারেজ এর বিষয় টাও তাকে আর জানানো হয়নি।
নুহাকে একসপ্তাহ পর ডিসচার্জ দেওয়া হয়।
ঘরে আসার পর থেকে যেন নাহিদার আদিক্ষেতা আরো বেড়ে গিয়েছে নুহার প্রতি। সবকিছুতেই এক্সট্রা কেয়ার নিচ্ছে। নুহার উনার আচরণে কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছে। আর আফিফের মনে হচ্ছে যে সত্যিই নাহিদা নুহাকে মেনে নিয়েছে।
কিন্তু এইসবই ছিলো নাহিদার চালাকি।আফিফের মন ভুলানোর কারসাজি। আর তাতে সে যথেষ্ট সফল ও হয়েছে।
আর রাফি সুযোগ খুঁজছে কখন আফিফকে সত্যি টা বলা যায়।
ব্যাল্কুনিতে বসে আছে নুহা। শরৎ এর শুভ্র আকাশ দেখছে মনযোগ দিয়ে।
একটু পরেই আফিফ এলো স্যুপ নিয়ে আসে
নুহার পাশে বসে স্যুপ টা টেবিলে রাখে। নুহা স্যুপ দেখে নাক সিটকাতে শুরু করে,
>>আমার মোটেও ভাল্লাগেনা স্যুপ খেতে। তাও দিনে দুই বেলা করে খাওয়াও তুমি। প্লিজ এবার অফ যাও না।
>>আচ্ছা ঠিক আছে আজকেই লাস্ট। এরপর তোমার যা যা খেতে ইচ্ছে হবে তাই রান্না হবে। তোমার কি খেতে ইচ্ছে হচ্ছে বলো?
>> আমার পান্তা খেতে ইচ্ছে হচ্ছে খুব। সাথে একটু ভর্তা আর শুকনো মরিচ। ইশ মুখে পানি চলে এসেছে বলতেই।
>>আচ্ছা তাই হবে আমি রাসু খালা কে বলে দেবো। এখন চলো রুমে।
আফিফ নুহাকে শুইয়ে দিয়ে নিচে গেলো। রাসু খালার সাথে কথা বলে চলে আসার সময় রাফির সাথে দেখা হতেই রাফি বললো,
>>ব্রো কিছু কথা আছে।
>>হ্যাঁ বল শুনছি।
>>একচুয়্যালি ভাবির সেদিন সিঁড়ি থেকে পড়া টা কোন এক্সিডেন্ট ছিলো এটা একটা প্ল্যান করা ছিলো।
>>হোয়াট তুই কিভাবে জানলি আর এমনটা কে করেছে বল আমায়?
>>এমন টা মা করেছে। ভাবির জায়গায় সেদিন তোকে মারার ফাঁদ পাতা হয়েছিল কিন্তু তোর বদলে ভাবির সাথে এমন হয়েছে। আমি সব সত্যি বের করেছি আর এমন টা মা ই করেছে।
রাফির কথা শেষ হতে না হতেই আফিফ ঠাশ করে রাফির গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো। এমনটা হওয়াই রাফি পুরাই অবাক। এমনটা সে আশা করেনি মোটেও।
এদিকে নুহা কাবার্ড থেকে টাওয়াল নিতে গেলে কিছু কাগজ-পত্র নিচে পড়ে যায়। সে টাওয়াল টা বেডে রেখে কাগজ-পত্র গুলো তুলে নেয় গুছানোর জন্য। হঠাৎ তার চোখে পড়ে এগুলো তারই রিপোর্টস। গুছানোর এক পর্যায়ে একটা রিপোর্টে গিয়ে তার চোখ আটকে যায়। সেই রিপোর্টে তার মিসক্যারেজ এর কথা লেখা ছিলো। নুহার পায়ের নিচ থেকে যেন মাটিই সরে যায়। দু’চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝড়তে থাকে তার।
এক সময় সে কেঁদে উঠে রিপোর্ট টা বুকে জড়িয়ে ধরে। কাঁদতে কাঁদতে এক পর্যায়ে সে সেখানেই সেন্সলেস হয়ে পড়ে যায়।
চলবে….
#Razia_Binte_SuLtan