রাগী টিচার যখন রোমান্টিক হাসবেন্ড – পর্ব 30

0
1292

#রাগী_টিচার_যখন_রোমান্টিক_হাসবেন্ড
#পর্ব_৩০
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
আয়ান এসে শখকে কোলে তুলে নিলো।এমন’টা হওয়ায় কিছু-টা রেগে বলল।
–কি হয়েছে নামান আমাকে,এখন কি আপমার রুমে ঘুৃমতে’ও পারব না।তাহলে বলে দেন।চলে যাচ্ছি।
–এত রাগ আগে কই থেকে হ্যাঁ,আমার মতো একটু ভালো হতে পারো না।আর তুমি কান্না করছো কেনো?আমি কি তোমাকে মারছি নাকি।
–ভুতের মুখে রাম নাম।আপনি ভালো হলেন কবে।আমার চোখ আমার চোখের পানি।আমার যখন ইচ্ছে খুশি কান্না করব।তাতে আপনার কি?
–আমি খারাপ ছিলাম কবে।আমার সামনে কান্না করা যাবে না।
–আমার ইচ্ছে,আপনি আমাকে নামিয়ে দিন।
–যদি না নামিয়ে দেই।কি করবে।
–আমি চিৎকার করে সবাইকে ডাকবো।
–ডেকে কি বলবে।
–বলতো আপনি আমাকে বিরক্ত করছেন।
–হুম তুমি যদি বলতে পারো,আমার জামাই আমাকে কোলে তুলে নিয়েছে। আমাকে নামাচ্ছে না।তাহলে তোমাকে ছেড়ে দিব।
–আপনি একটা অসভ্য লোক।
–একটু অসভ্যতামি করি।
–এই আপনি ঠিক আছেন তো।শরীল ঠিক আছে আপনার(কপালে হাত দিয়ে)নাকি ভূতে ধরলো।এমন করছেন কেনো।
আয়ান আর কোনো কথা না বলে শখকে চুপচাপ বিছানায় শুইয়ে দিল।তারপরে লাইট নিভিয়ে নিজে’ও শখের পাশে শুয়ে পড়ল।
–এই লোক-কে নিশ্চয় ভূতে ধরছে।কাল রুহি আপুকে বলে ওঝা ডেকে দেখিয়ে নিব,একবার।
–আমি নিজে-ই একটা ভূত আমাকে আবার কোন ভূতে ধরবে।বলতে বলতে শখকে নিজের কাছে টেনে জড়িয়ে নিলো।
–আপনি কথায় কথায় এমনে জড়িয়ে ধরেন কেনো।আমার ভালো লাগে না।
–আমার বউ আমার ইচ্ছে, তাই করবো,তাতে তোমার কি।
–আমার কি মানে আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরেন।তাহলে সমস্যা তো আমারি হবে,নাকি।
–আচ্ছা শখ তোমার শরীল এমন নরম কেনো।একদম নরম তুলতুলে তুলোর মতো। মেয়েদের শরীর বুঝি এমনি নবর হয়।তোমাকে দেখলে-ই খালি আদর করতে ইচ্ছে করে।
আয়ানের এমন কথায় শখ বেশ লজ্জা পেয়ে যায়। লোকটা’কে সত্যি মনে হয় ভূতে ধরছে। এমন করে কথা বলছে কেনো।শখের এখন বেশ ভয় লাগছে। সে নিজেকে আয়ানের কাছে থেকে সরিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।তা দেখে আয়ান আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শখকে।
–তুমি যতই উড়তে চাও না কেনো পাখি।আমি না ছাড়লে আমার হাতে থেকে তোমার মুক্তি নেই।
–আপনি এমন করছেন কেনো,আমার ভয় লাগছে।
–আমি থাকতে তোমার কিসের ভয়।
–জানি না,আমার ভালো লাগছে না।
আয়ান আলত করে শখের ঘাড়ে চুমু খেলো।শখের পুরো শরীর কেঁপে উঠল।তা আয়ান বেশ ভালো-ই বুজতে পারছে।শখ কোনো কথা বলছে না।একদম শান্ত হয়ে আছে। এদিকে আয়ানের কোনো সার শব্দ না পেয়ে আয়ানের দিকে তাকিয়ে দেখে আয়ান ঘুমিয়ে গেছে। শখ যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচল।শখ কিছুক্ষণ ঘুমন্ত আয়ানের দিকে তাকিয়ে দেখলো তারপরে সে নিজে’ও ঘুমিয়ে গেলো।
পরের দিন সকাল বেলা,মুনতাহা উঠে বসে আছে।নিচে নামতে পারছে না।তার কারণ শুভ ওকে নিচে নামতে দিচ্ছে না।ধরে বসে আছে, কোনো কথা বলছে না।এতে বেশ বিরক্ত লাগছে মুনতাহার।
–কি হলো এভাবে সং সাজিয়ে বসিয়ে রাখছেন,কেনো?
–আগে তুমি করে বলবে,তারপরে বলবো।
–আজব বললে-ই হলো নাকি।কি বলবেন বলেন।আর না বললে সরেন নিচে নামব।
–আমি না ছাড়লে তুমি যেতে পারবে।তোমার সাহস আছে।
–দেখতে চান আমার সাহস আছে কি না।বলে’ই শুভকে ধাক্কা নিয়ে নিচে নামতে লাগলে,শুভ মুনতাহার হাত টান দিয়ে মুনতাহাকে বিছানায় ফেলে দেয়।মুনতাহা যেনো উঠতে না পারে তা-ই সে-ও মুনতাহার ওপরে শুয়ে পড়ে।
–আল্লাহ গো,মা গো মরে গেলাম। আস্ত একটা হাতি এসে পড়েছে আমার ওপরে।সরুন বলছি।আমাকে কি মেরে-ই ফেলবেন নাকি।
–তুমি আমার কথা শুনো নাই। এটা তোমার শাস্তি।আমার মুখে ওপরে কথা বলো।এত সাহস তোমার।
–সাহসের কি দেখছেন আপনি।সরবেন নাকি,মার খাবেন।বলেই শুভকে মারতে শুরু করলো।এতে শুভর কিছু-ই হচ্ছে না। শুভ হেঁসে বলছে।
–শুধু শুধু নিজের শক্তি অপচয় কেনো করছো বলতো।সুন্দর করে বললে-ই তো পারো।আমাকে ছেড়ে দাও।
–আমাকে ছেড়ে দেন।
–আবার আপনি,তুমি করে বলো।
–এভাবে একদিনে তুমি করে বলা যায় নাকি।
–যায় তুমি বলো।
–ওরে শশুরের পোলা ছেড়ে দাও না,জামাই।
শুভ ড্যাব ড্যাব করে মুনতাহার নিজে তাকিয়ে আছে।
–বাবা এত সুন্দর ডায়লগ কোথায় থেকে শিখেছ।
–শখ শিখিয়েছ।ও আমাকে বলছিল,বিয়ের পড়ে জামাই রে শশুরের পোলা বলে ডাকবে।আমাকে’ও শিখিয়ে দিয়ে ছিল ডাকতে।
–ভালো-ই বোনরে দেখতে পারো নাই। আবার দুই বোন মিলে ভালোই বুদ্ধি পরামর্শ করছো।বিয়ের পড়ে কি করবে।
–তাতে আপনার কি।
–কিছু না।একটা চুমু দাও।তোমাকে ছেড়ে দেই।
–এমন’টা কিন্তু কথা ছিলো না।তুমি বলেছিলে,তোমাকে তুমি করে বললে ছেড়ে দিবে।
শুভ মুনতাহার গালে ও কপালে চুমু খেয়ে ওর ওপরে থেকে উঠে আসল।মুনতাহা যেনো নিজের জীবন’টা ফিরে পেলো।
–আচ্ছা মুনতাহা, কাল যে তোমার সাথে কথা বললাম না।এটা নিয়ে তোমার মনে কোনো প্রশ্ন নেই।
–থেকে-ই বা কি হবে বলেন।কাল সারারাত ভাবলাম। তারপরে বুজতে পারলাম আমার বাবা যা করছে।আপনাদের সাথে,এর থেকে বেশি আমার সাথে আপনার করতে পারেন আমি কিছু বলব না।
–হুস(মুনতার ঠোঁটে হাত দিয়ে বলল) আমি তোমাকে এমন ভালোবাসি নাই। তুমি যেনো অন্য দিকে মন না দিতে পারো।তোমার মন শুধু আমার কথায় ভাবে সেজন্য আমি তোমার সাথে কথা বলি নাই। কাল তুমি শুধু আমার কথা-ই ভেবেছ তাই না বলো,অন্য কথা মনে করো নাই।
–হ্যাঁ সত্যি তো আমি কাল আপনার কথা-ই ভেবেছি।
–বউ আমার আমাকে কতো ভালোবাসে। সারারাত আমার কথা ভেবেছে।মুনতাহাকে জড়িয়ে ধরে বলল।
–মটে’ও না।আমি আপনাকে একদম ভালোবাসি না।
–আবার আপনি করে বলছো।
–কমু-ই তো।
–শান্তির কথা ভুলে গেলে।
–আমি তো মজা করলাম আ..মানে তুমি সিরিয়াসলি নিচ্ছ কেনো।
–এবার সঠিক পথে,বউ।
–সরো তো।বলেই শুভর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো মুনতাহা।
কেনো জানি কয়টা দিন সকাল সকাল ঘুম ভেঙে যাচ্ছে শখের।কেনো এমন হচ্ছে সে নিজে’ও জানে না।ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়েছিল,রুহি আবার ওপরে পাঠিয়ে দিলো। আয়ান ঘুমিয়ে আছে।সে কি করবে,কিছু’ই ভালো লাগছে না। তাই বেলকনিতে চলে গেলো শখ।ব্যস্ত শহরটা’কে দেখছিল,শখ।কেউ থেমে নেই। যে যার মতো নিজরে কাজে ব্যস্ত।এসব ভাবছিল শখ।তখনি সে অনুভব করলো। পেছনে থেকে কেউ তাকে জড়িয়ে ধরেছে।স্পর্শ’টা কার এই দুই দিনে সে ঠিক চিনে ফেলছে।
–তুমি এত সকালে উঠে বসে আসো কেনো।শখের কাঁধে মাথা,রেখে বলল।
–ঘুম ভেঙে গেলো,আর ঘুম আসছিল না।তাই উঠে পড়লাম।আয়ানের থেকে কোনো উওর আসলো না।এই মানুষটাকে নিয়ে আর পারলাম না।আবার ঘুমিয়ে গেলো।শখ আয়ান’কে সামনে ঘুরিয়ে নিলো রুমে দিয়ে আসার জন্য। আয়ান শখকে সামনে থেকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেলো।
–আজব তো আপনি এমন করছেন কেনো।ঘুমানোর হলে আপনি বিছানায় গিয়ে ঘুমান।আমি বিছানা নাকি।
–উম কথা বলো না।আমাকে ঘুমোতে দাও।তুমি’ও আমার বিছানা।
–তাহলে আপনার রুমের বেডা’টা ফেলে দিয়ে আসুন।
–ঠিকি বলেছ।আমি আজ’ই ফেলে দিয়ে আসবো।
–সত্যি আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আপনি কলেজে যাবেন না।
এবার আয়ান ঘুৃম ঘুম চোখে তাকাল।
–সত্যি তো কয়টা বাজে,যাও রেডি হয়ে নাও।
–আমি রেডি হয়ে কোথায় যাব।
–কেনো কলেজে।
–বিয়ে হয়েছে কিসের পড়াশোনা।আমি আর পড়াশোনা করুম না।
–বলি কি মাইর দেখছো।সবাই বলবে আয়ানের বউ অশিক্ষিত। সামনে তোমার এইচএসসি পরীক্ষা সেদিকে খেয়াল আছে।আজ থেকে আমি তোমাকে পড়াবো।
–এ্যাঁ,,
–এ্যাঁ নয় হ্যাঁ।আমি রেগে যাওয়ার আগে দৌড়ে দাও।
–কোথায় দৌড় দিব।মানুষ আমাকে পাগল বলবে।
–আমি কথার কথা বলছি,গাধি।
–তাহলে আপনি কি গাধির জামাই।
–শখ,,
–স্যার,,
তবে রে শখকে আর পায় কে দে দৌড়।দরজা খুলতে’ই রাফি এসে হাজির।
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here