ইয়াসমিন_রিমা #অসম_প্রেম #পর্ব_১২

0
352

#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_১২

বলেই আদিত্যর ঘরের দিকে চলে গেলাম। বাড়িটা একটু ঘুরে দেখতে হবে।
,,
পুরো বাড়ি ঘুরে দেখলাম।সব থেকে অবাক লাগলো আদিত্যর ঘরের উল্টো সাইডে একটি রুম আছে। কিন্তু তালা দেওয়া কেন।ও যখন ওর মামা বাড়ি থাকে তাহলে ওর নামের পদবী মামা বাড়ির কেন। বাবার বাড়ির কোনো পদবী নেই।যত হাঁটছি তত সন্দেহ বেরে যাচ্ছে। ডালমে কুছ তো কালা হে। আমাকে সব কিছু খুঁজে বের করতে হবে। আলিশা বিয়ের পর এখানে থাকে ওর হাজবেন্ড এখানে থাকে নরমাল সেটা মেনে নিলাম কিন্তু ওর হাজবেন্ড কোথায়।আর আমাকে আদিত্য কেন বিয়ে করে আনল। কোন শাস্তি দিতে।ওর বোন আলিশা ওকে কি বলেছে।যার ওর বোনের খুশিতেই ও খুশি।
এখুনি আলিশার ঘরে যেতে হবে। এখন রান্না করছে এদিকে আসবে না। সিরি দিয়ে ওঠার পর ডান সাইটে আলিশার রুম। কোনো না কোনো ক্লু ত পাবই।
আলিশা রুমে ঢুকে খোজ করছি চারপাশে।বেডের সাথে ছোট্ট বেড ড্রয়ার এর উপর ছবি গুলো দেখে। অবাক না হয়ে পারলাম না। এটা কিভাবে সম্ভব। আলিশার সাথে শ্রাবন এর ছবি। তাহলে কি শ্রাবনই ওর স্বামী।ওহ,,, নো।
সিট আমি একটু খোঁজ নিলেই জানতাম। তাহলে এই জন্য বিয়ে করা। আমাকে শ্রাবনের সাথে দেখে এই জন্য ফুসছিল আদিত্য।
আমার রাগ হচ্ছে।আর কন্ট্রল করতে পারছি না।বেডে বসে পরলাম।
,, তোকে আমি ছাড়ব না। শ্রাবনের বাচ্ছা শ্রাবন।তোর কপালে অনেক দুঃখ আছে। তোকে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
দেরি না করে পুরো রুম তল্লাশি চালিয়েছি সেরকম কিছু নেই।কাবাড খুললাম কাপড় সরিয়ে কিছু পেলাম না। নিচে দেখি একটা ফোন। কিন্তু কাবাডের ভিতরে ফোন কেন থাকবে। হাতে নিলাম।দুর ছাতা লক করা। এবার কি হবে। বুদ্ধি খাটালাম হা হা হা হা।লক খুলে গেল।
,এটা কি। আমার ছবি।এই রকম বানানো।তাও আবার ফোনের ওয়াল পেপার দেওয়া। শ্রাবনের সাথে খুব ঘনিষ্ঠ অবস্থা। আমার সাথে ওর ওরকম কোনো ছবি নেই। আমি তুলিও নি।সব হল এডিটিং এর কারিশমা।
তোর হাল আমি কি করি তুই শুধু দেখ।
গ্যালারিতে ঢুকলাম একই অবস্থা। ওহ্ মাই গড যত নিল ছবি আছে সব এর ভিতর। শয়তান কি পরিমান খারাপ ধারণা করা যায়।এক নম্বরের ক্যারেকটারলেস।ওর সাথে আলিশা সংসার করে কিভাবে।
ফোনে ত হাবি জাবি দিয়ে ভরা।এক কাজ করি।এই ফোন টা ই নিয়ে যাই পরে নিরিবিলি সময়। পুরোটা দেখা যাবে।
কেউ নেই এই ফাঁকে চলে যাই সবকিছু আগের মত গুছিয়ে।
আদিত্যর ঘরে ঢুকলাম। বেশ পরিপাটি। আবার নিজের ছবিও দেখি খাটের পাশে রেখে দিয়েছে।সবটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম।ওহ পারফিউম। মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি আসল। আমাকে অনেক জ্বালিয়েছে। পারফিউমের সব লিকিউট অন্য বোতলে রাখলাম। বাথরুম থেকে নীলের বোতল নিয়ে পারফিউমের বোতলে পানি দিয়ে ঢুকিয়ে দিলাম। বেশ ভালো কাজ করবে। এখন দেখতে হবে পরে কি হয়।হি হি হি হি হি হি।
,ওহ্ আমি তো ভুলে গেছি আমার বরটা সকালে কিছু খায়নি।যাই গিয়ে খাবার দিয়ে আসি।
নিচে নেমে দেখি এখনো সবাই রান্না করছে।
সোফায় বসে টিভি দেখতে দেখতে বললাম।
, এই যে ম্যাডামেরা এখানো কি রান্না হয়নি হ্যা। আমার বরটাকে খাবার দিয়ে আসব।
, আলিশা, এই মেয়ে তুমি আমাদের ওপর তরফ দারি করছ।
,আহা ননদিনী এত রেগে কেন যাচ্ছ হ্যা। আমার বরের জন্য চিন্তা ত হবে ই বলো।ইস একটা বিষয় খুব খারাপ লাগল জানো।কাল আর বাসর রাত তা হলো না।তাই তো রেগে ছিল তোমার ভাই।যাও যাও গিয়ে রান্না করো।
, ওকে খাবার আমি দিয়ে আসছি। দেখলে সকালে তোমার উপর ও কত রেগে ছিল। তার পর ও তোমার লজ্জা হয় না।এই কথা বল।
,তা কেন হবে।ও আমার স্বামী বুঝেছ।
খাবার লাঞ্চ বক্স এ ভরে নিয়ে যাচ্ছিল আলিশা। আমি ছো মেরে নিয়ে নিলাম।
,কি হল ননদিনী ওভারে তাকিয়ে কি দেখছ।দেখার কিছু ই নেই বুঝেছ।
, ভাই জানলে তোমার কি হবে।তা তুমি জানো না।
, মামী,এই মেয়ে তোমার সাহস তো কম নয়।যাও গিয়ে ঘরের কাজ কর।যাও গিয়ে সারাবাড়ির মেঝে মুছ।আর এখন থেকে তুমি এই বাড়ির সব বাড়ির কাজ করবে। খাবার আলিশা দিয়ে আসবে।
বলেই পিছন থেকে আমার হাত মোচড় দিয়ে ধরল। খুব ব্যথা লাগছে। জোরে ছিটকে দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিলাম।
, আপনি আমায় ভুল ভাবছেন শাশুড়ি আম্মা।আমি তো ওর কাছে যাবই।আমায় আর পাঁচ টা মেয়ের মতো ভুল ভাবছেন যে সব অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করবে। কখনো ই না।
বলেই চলে যাচ্ছিলাম তখনই একজনের সাথে ধাক্কা লাগল।
,হে হু আর উ।দেখে চলতে পার না।
, আগে আপনি দেখে চলুন।
সামনে চিৎকার করে বলছে
, আম্মু কে এই।
, মামী, ওকে তোর দাভই বিয়ে করে নিয়ে এসেছে কাল।
, অর্নব, ওহ্ মাই গড। সত্যি বলছ। খুব এক্সাইটেড হয়ে। সত্যি দাভাই বিয়ে করেছে। তার মানে ত ভাবী তাই না।ইস
আমি কাল কেন বন্ধুদের সাথে পিকনিকে গিয়েছিলাম। থাকলে কত মজা হত। কিন্তু দাভাই যা রাগি। ভাবী তুমি সামলাতে পারবে তো। ওহ্ তো বাসর রাত ছিল। কত্ত মজা হত। আমি থাকলে।
আমার সামনে এসে বলল,
, ওহ্ তুমি,,,,সো কিউট। তুমি তো খুব ব্লাশিং করছ কি ব্যাপার হুম ‌।চোখ উঁচিয়ে। হুম।
কি অসভ্য মার্কা ছেলে। ভাই যা অসভ্য তাতে এ হবে না ই বা কেন।
,সেট আপ।
, ওহ্ ভাবী তুমি লজ্জা পাচ্ছো।বাই দা ওয়ে আমি অর্নব শেহ্জাহান খান। তুমি?
, আমি প্রেমা। আমি যাই তোমার ভাই কে লাঞ্চ বক্স দিয়ে আসি।
মামী রেগে আগুন হয়ে আছেন।
, মামী, অর্নব তুই কাকে ভাবী ডাকছিস ও তোর ভাবী নয়।এই বাড়ির চাকর। তোর ভাই চাকর নিয়ে এসেছে।
, আলিশা, হ্যা অর্নব। মামী ঠিক বলেছে। ভাই জানলে খুব রাগ করবে। ওকে তুই ভাবী ডাকিস না।কাল অনেক কিছু হয়েছে।সব তোকে বলছি।
, অর্নব,এ সব তোমরা কি বলছ।সব তো মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
,,,
আমি এখন আদিত্য অফিসে দাঁড়িয়ে আছি।

চলবে,
কেমন হল জানাবেন,সব আপডেট পেতে পেজটি লাইক দিয়ে রাখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here