উধয়রনী #লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ ||পর্ব-১০||

0
372

#উধয়রনী
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-১০||

১৫।
আহির হাতে একটা মলিন স্কেচ। স্কেচটি একটি ছেলের। স্কেচটিতে কোঁকড়ানো হালকা বাদামী বর্ণের চুল, ধূসর চোখ জোড়ায় স্বচ্ছ জল উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে, আর ঠোঁটে শুকনো হাসি ফুটে উঠেছে। আফিফের পাসপোর্ট সাইজের ছবি দেখেই এই স্কেচটি করেছিল আহি। কি চমৎকার ছিল স্কেচটি! হুবহু আফিফের প্রতিচ্ছবি। কিন্তু আফিফ এই স্কেচটি যত্ন করে রাখতে পারলো না। যেদিন আহি প্রথম আফিফকে এই স্কেচ এঁকে দিয়েছিল, সেদিনই আফিফ সেটা হারিয়ে ফেলেছিল।
প্যান্টের পকেটে ভাঁজ করে সেই স্কেচটি রেখে দিয়েছিল আফিফ। চারুশিল্প থেকে বের হয়েই প্যান্টের পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করতে গিয়ে স্কেচটা মাটিতে পড়ে যায়। ভাগ্যিস আহি প্রতিদিন আফিফের পিছু নিতো। আর এই দৃশ্যটাও তার চোখে পড়ে গেলো। আফিফ সরে যেতেই আহি ভাঁজ করা স্কেচটি মাটি থেকে তুলে নিলো। ততোক্ষণে দু’একজন এর উপর পা মাড়িয়ে চলে গেছে। জুতোর ছাপ পড়ে স্কেচটি মলিন হয়ে গিয়েছিল। ভেজা মাটিতে পড়ায় সাদা পৃষ্ঠায় কেমন ছোঁপ ছোঁপ দাগ স্পষ্ট হয়ে উঠলো। আহি বাসায় এসে চুলার সামনে কাগজটি ধরে রেখে তা শুকিয়ে তার বাদামি মলাটের ডায়েরীর ফাঁকেই রেখে দিয়েছিল। এখনো স্কেচটি সেই ভাঁজেই আছে। গত চার বছরে সে একবারো এই স্কেচটি খুলে দেখে নি। অন্য কিছুতে না হোক, অন্তত এই স্কেচে আফিফের স্পর্শ এখনো বর্তমান। তাই সে এই স্কেচটি ধরার সাহস পায় না। কিন্তু আজ তার মনটা ভীষণ খারাপ। তার ইচ্ছে করছে প্রিয় মানুষগুলোকে অনুভব করতে। তাই স্কেচটি খুলে তাতে হাত বুলিয়ে নিলো আহি।

……………………

সন্ধ্যা থেকেই বৃষ্টি পড়ছে। আজকাল অল্প একটু বৃষ্টিতেই শহরের রাস্তায় পানি উঠে যায়। রিজওয়ান কবিরের অফিস উঁচু রাস্তায়। তাই তার গাড়ি কোনোদিনই ড্রেনের পানির সংস্পর্শে আসে নি। আহিরা যেই জায়গায় থাকে সেটা যথেষ্ট উঁচু স্থান। কিন্তু আহির আর্ট স্কুলের আশেপাশে পানির স্রোত বয়ে যায়। নালা উপচে পানি রাস্তায় চলে আসে।

এদিকে আহি রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে বৃষ্টি কমার জন্য দোয়া করেছিল। কারণ বৃষ্টির কারণে শহর পানিতে ভাসবে, আর তার বাবা তাকে বাসা থেকে বের হতে দেবেন না। সপ্তাহে মাত্র দু’দিন চারুশিল্পের ক্লাস থাকে। এখন একদিন না গেলে আফিফকে দেখার জন্য তার পুরো এক সপ্তাহ বসে থাকতে হবে। এটা সে কখনোই হতে দেবে না। কিন্তু তার দোয়া অপূর্ণ থেকে গেলো। বৃষ্টিও কমলো না, আর এখন পানিতে পুরো শহর থৈ থৈ করছে। আহি সকাল থেকে জেদ করছিল, সে চারুশিল্পে যাবেই যাবে। রিজওয়ান কবির শেষমেশ রাগী স্বরে বললেন,
“গেলে একা একাই যাও। পায়ে হেঁটে যাও। আমি তোমাকে রিক্সায় উঠার জন্যও টাকা দেবো না। আর আমার গাড়ি তো কখনোই পাবে না।”

সালমা ফাওজিয়া মেয়ের হাতে দুইশো টাকা গুঁজে দিয়ে বললেন,
“রিকশা করে যেও। হেঁটে যেও না।”

রিজওয়ান কবিরের বিরুদ্ধে গিয়ে টাকা দেওয়ায় তিনি রেগে গেলেন। হুট করে উঠে এসে তিনি সালমা ফাওজিয়ার গালে চড় বসিয়ে দিলেন। আহি সাথে সাথেই টাকাটা রেখে দৌঁড়ে বেরিয়ে গেলো। পুরো রাস্তায় সে অন্যমনস্ক ছিল। আজ তার জেদের জন্যই তার মাকে চড় খেতে হলো।

(***)

হাঁটতে হাঁটতে চোখের সামনে পানির স্রোত দেখে থমকে দাঁড়ালো আহি। দেখে বোঝার উপায় নেই এটা রাস্তা নাকি কোনো স্রোতস্বিনী। আহি এদিক-ওদিক তাকিয়ে সামনে পা বাড়ালো। হাঁটু ছুঁইছুঁই পানি। আহি ধীর গতিতে সামনে এগুচ্ছে। আফিফকে দেখার জন্য যেই প্রবল উৎসাহ নিয়ে সে বেরিয়েছিল, মাকে চড় খেতে দেখে তার সব ইচ্ছে উবে গেছে। তবুও কেন যে সে বাড়ি থেকে বের হয়েছে তা নিজেই জানে না। আফিফ নামের মানুষটি যে তার মস্তিষ্ক দখল করে নিয়েছে, সেই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই আহির। সে এই মানুষটার জন্য হয়তো সব সীমা ছাড়িয়ে যাবে।

(***)

অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটতে গিয়ে পায়ে কিছু একটা বেঁধে ভারসাম্য হারিয়ে বন্যার জলেই ধপ করে পড়ে গেলো আহি। গলা অব্ধি ডুবে গেছে তার। তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে নাক চেপে ধরলো সে। সব ড্রেনের পানি, ভাবতেই গা গুলিয়ে এলো তার৷ এভাবে ময়লা ভেজা কাপড় নিয়ে সে চারুশিল্পে গেলে আফিফের নজরে পড়বে। আর এমনভাবে সে আফিফের চোখে পড়তে চায় না।
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন তার নাম ধরে চেঁচিয়ে উঠলো। আহি ঘাড় ফিরিয়ে দেখলো লিনাশা রিকশায় বসে তাকে ডাকছে। আহি লিনাশার কাছে যেতেই লিনাশা তাকে ধরে রিকশায় উঠিয়ে বলল,
“কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছিস নাকি?”

আহি মুখ ছোট করে বলল,
“আমার ক্লাস আছে আজকে।”

“একদিন মিস দিলে কি এমন ক্ষতি হতো?”

“এআরকে আর দেখা হতো না।”

“ও তোর মতো পাগল না যে এক কোমর পানির মধ্যে ক্লাস করতে আসবে।”

লিনাশা আহিকে নিজের বাসায় নিয়ে গেলো। সেখানে গিয়ে আহি ফ্রেশ হয়ে নিলো। লিনাশা তার পকেটমানির টাকা থেকে কিছু টাকা আহিকে দিয়ে বলল,
“রিকশা করে যা। হেঁটে যাবি না কিন্তু। তোর বাবাটা যে কেমন মানুষ! বাবা তো উনাকে একটুও…..”

লিনাশা কথাটা গিলে ফেললো। আহি বুঝতে পেরে মাথা নিচু করে নিলো।

নার্সারিতেই লিনাশা আর আহির বন্ধুত্ব হয়েছিল। কিন্তু শুরুতে আহির সাথে মেলামেশা করা লিনাশার বাবা-মা পছন্দ করতেন না। কারণ আহির বাবা একজন প্রভাবশালী মানুষ। আর লিনাশা একজন সাধারণ উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। আহির বাবা রিজওয়ান কবির দেশে পরিচিত মুখগুলোর মধ্যে একজন। যার ফলে নৈতিক-অনৈতিক অনেক কথায় তার নামে এরই মধ্যে রটে গেছে। রাজনীতিবিদদের কাছে তিনি ফেরেশতা, আর সাধারণ মানুষের কাছে ফেরাউন। সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত না থাকলেও মন্ত্রীদের সহায়তায় তিনি নিজের অবৈধ সম্পদ আর ব্যবসায় অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। আর এমন একজন অসাধু লোকের মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করাটা কোনো বাবা-মা’ই পছন্দ করবেন না, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ধীরে ধীরে লিনাশার বাবা, ফখরুল হক আর লিনাশার মা মিসেস রূনা খানম আহির মায়ায় পড়ে যান। এখন লিনাশার বাবা আহিকে দেখলেই বলেন,
“বাবা যেমনই হোক, মেয়েটা ভীষণ লক্ষী।”

(***)

লিনাশার বাড়ি থেকে বের হয়ে আহি রিকশা নিয়ে চারুশিল্পে চলে গেলো। ক্লাসে আজকে মাত্র চারজন এসেছে। তাও আবার যাদের বাসা কাছে ছিল। আফিফকে ক্লাসে না দেখেই আহির চোখে জল ভীড় করতে লাগলো। এতো কষ্ট করে সে আফিফকে এক নজর দেখার জন্য চলে এসেছে, কিন্তু ফলাফল শূন্য। আনমনে খাতা খুলে সাদা পৃষ্ঠায় এবড়ো থেবড়ো দাগ কাটতে লাগলো আহি। হঠাৎ সুধাময় সুর আহির হৃদয় স্পর্শ করলো। আহি তড়িৎ গতিতে মাথা তুলে দেখলো আফিফ ভেজা শরীরে দাঁড়িয়ে আছে। আফিফকে দেখেই স্যার জিজ্ঞেস করল,
“এতো ঝামেলা করে আসার কি দরকার ছিল, আফিফ?”

আহি স্যারের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আর মনে মনে বলল,
“ও আমার জন্যই এসেছে।”

আফিফ মলিন মুখে নিজের সিটে বসে পড়লো। আহি এক দৃষ্টিতে আফিফের দিকে তাকিয়ে আছে। আফিফের চোখে-মুখে ইতস্ততভাব। সে পাশের সারিতে বসা একজনের দিকে তাকালো। ধীর গতিতে ব্যাগ থেকে খাতা, পেন্সিল বের করতে লাগলো। স্যারের প্রশ্নে সে ভীষণ লজ্জা পেয়েছে, তা আহি ঠিকই বুঝতে পারছে। কিছুক্ষণ পর পর আফিফ জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজাচ্ছে। আফিফের এমন অদ্ভুত আচরণের কারণ খোঁজার চেষ্টা করতে করতেই ক্লাস শেষ হয়ে গেলো। আফিফও নীরবে বেরিয়ে পড়লো। আফিফ প্রতিদিনই কোনো সাড়াশব্দ ছাড়া ক্লাস করে চলে যায়, ক্লাসের কারো সাথে একটা কথাও বলে না। ছেলেটা এমন কেন? আফিফ সম্পর্কে জানার আগ্রহ আরো বাড়তে লাগলো আহির।

(***)

আজও আফিফের পিছু নিচ্ছে আহি। আরেকটু সামনে গেলে আবার হাঁটু অব্ধি পানিতে নামতে হবে আহিকে। আহি এসব তোয়াক্কা করলো না৷ সে আফিফের পিছু পিছু নেমে পড়লো হাঁটু ভর্তি পানিতে। কিছুদূর যেতেই আফিফ দাঁড়িয়ে গেলো। এদিক-ওদিক কিছু একটা খুঁজতে লাগলো। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর হালকা ঝুঁকে পা থেকে এক পায়ের স্যান্ডেল খুলে নিলো। আহি বুঝতে পারলো, অন্য পায়ের স্যান্ডেলটা হয়তো পানিতেই ভেসে গেছে।

আফিফ কিছুদূর গিয়ে বাসের জন্য দাঁড়ালো। বাস আসতেই সে বাসে উঠার আগে হাতের স্যান্ডেলটা রাস্তায় ফেলে দিলো। বাস চলে যেতেই আহি সেই ফেলে দেওয়া মলিন স্যান্ডেলটি হাতে নিয়ে মনে মনে বলল,
“তোমার ফেলনাও আমার কাছে অনেক মূল্যবান, এআর।”

আহি বাসায় এসে ভালোভাবে আফিফের স্যান্ডেলটি পরিষ্কার করে পলিথিন পেপারে মুড়িয়ে রেখে দিলো। তারপর আজকের দিনের অভিজ্ঞতাটাও ডায়েরিতে তুললো। লেখার পাশে প্রতিদিনের মতো স্কেচ করলো। তবে আজ আফিফের ছবি আঁকলো না। আজ আঁকলো রাস্তার উপর একটা পরিত্যক্ত স্যান্ডেলের ছবি।

পরদিন চারুশিল্পে আফিফকে দেখে অবাক হলো আহি। আফিফ আজ ছেঁড়া স্যান্ডেল পায়ে ক্লাসে এসেছে। স্যান্ডেলের তলাটিও খসে পড়ার উপক্রম। যার দরুন রাস্তায় হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছিলো তার। জুমার দিন তাই নামাজের জন্য পাশের মসজিদে ঢুকে পড়লো সে।

(***)

আজ দোকানপাট সবই বন্ধ। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে রাস্তায় একটা ভ্যানগাড়ি চোখে পড়লো আহির। ফেরিওয়ালা তার ভ্যানে করে জুতা বিক্রি করছেন। আহি একজোড়া চামড়ার স্যান্ডেল কিনে নিলো। ভাগ্যিস কাল আফিফ তার স্যান্ডেলটা ফেলে গিয়েছিল। স্যান্ডেলের গায়ে সাইজ লেখা ছিল বলেই এই নতুন জোড়া কিনতে পেরেছে সে। স্যান্ডেল জোড়া কিনেই মসজিদের সামনে এসে দাঁড়ালো আহি। পাশে একজন মহিলা ভিক্ষার জন্য বসে আছেন। আহি মহিলাটির হাতে দুইশো টাকার নোট দিয়ে বলল,
“আপনি আমার একটা কাজ করে দিলে আপনাকে আরো পাঁচশ টাকা দেবো।”

পাঁচশ টাকা পাওয়ার খুশিতে তিনি সানন্দে আহির প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলেন। আহির কথামতো নামাজ শেষ হতেই তিনি আফিফের কাছে গিয়ে নতুন স্যান্ডেল জোড়া তার হাতে দিয়ে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
“একটা মাইয়া তোমারে দিতে কইছে।”

আফিফ অবাক হয়ে এদিক-ওদিক তাকালো। চিরকুটটি খুলে দেখলো সেখানে ইংরেজিতে লেখা,
“শোনো বালক,
নিজের খেয়াল রাখতে শিখো। এভাবে কষ্ট করে হেঁটে হেঁটে ক্লাস করতে আসছো, আমি কিন্তু তোমার কপালের ভাঁজ সহ্য করতে পারছি না। এই স্যান্ডেল জোড়া তোমার জন্য। আমি নিজের পকেটমানি বাঁচিয়ে তোমার জন্য কিনলাম। যত্নে রাখবে কিন্তু।”

আফিফ চিরকুটটি পড়ে এদিক-ওদিক তাকালো। চিরকুটটি ইংরেজিতে লেখার কারণ যাতে আফিফ আহির লেখা বুঝতে না পারে। আর আহির বাংলা লেখা আফিফ সহজেই বুঝে ফেলবে। এই মুহূর্তে লিনাশাও পাশে নেই তাই ইংরেজিই তার একমাত্র ভরসা। আফিফ চিরকুটটি ভাঁজ করে পকেটে রেখে দিলো। এরপর প্যাকেট থেকে স্যান্ডেলটা বের করে ভিক্ষুক মহিলাটিকে কিছু একটা জিজ্ঞেস করলো। ভিক্ষুক মহিলাটিও এদিক-ওদিক তাকিয়ে আহিকে খুঁজতে লাগলো। আফিফ কিছুক্ষণ সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর আহির দেওয়া স্যান্ডেল পায়ে দিয়েই চলে গেলো। আহি কিছুক্ষণ পর ভিক্ষুক মহিলাটিকে পাঁচশ টাকা দেওয়ার জন্য সামনে আসতেই তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
“পোলাডারে তুমি চেনো?”

আহি বলল,
“ওভাবে না। আপনি দোয়া করে দিন, যাতে আরো ভালোভাবে জানতে পারি।”

মহিলাটি আহির মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। আহির সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল, সত্যিই হয়তো তার ভাগ্য শুভ প্রমাণিত হবে। তবে মহিলাটির দোয়া সত্যিই কবুল হয়েছিল। সে আফিফকে অনেক ভালোভাবেই জানতে পেরেছিল। যতোটুকু সে আফিফ সম্পর্কে জেনেছে, ততোটুকু হয়তো আর কারো পক্ষেই জানা সম্ভব নয়।

…………………………

অতীতের স্মৃতিগুলো ভাবতে ভাবতেই পুরো বেলা কাটিয়ে দিলো আহি। এর মধ্যে একবারো কেউ তার রুমের দরজায় কড়া নাড়ে নি। সন্ধ্যার পর মুনিয়া খালা দরজার সামনে এসে আহিকে ডাকলেন। আহি দরজা খুলতেই তিনি মলিন মুখে বললেন,
“ছোড আফা, তাজওয়ার স্যার আইছেন।”

তাজওয়ার আসার খবর শুনে আহি মিইয়ে গেলো। সে ফোন হাতে নিয়ে রাদের নম্বরে ডায়াল করতে যাবে তখনই তাজওয়ার হুট করে তার রুমে ঢুকে পড়লো। আহি চমকে উঠে তাজওয়ারের দিকে তাকাতেই সে ঠোঁটে বাঁকা হাসি টেনে আহির কাছে এসে বলল,
“তোমার কোমলতা দেখছি চোখ ধাঁধানো রূপ নিয়েছে। তুমি তো দেখছি ছবির থেকেও বেশি সুন্দর হয়ে গেছো। এখন মনে হচ্ছে আমি বেশিদিন ওয়েট করতে পারবো না। আংকেলকে বলে শীগ্রই তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাবো। তুমি চাইলে এখনই নিয়ে যেতে পারি।”

চলবে-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here