#উধয়রনী
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-১৫||
২৩।
তাজওয়ার আহির পাশে এসে বসতেই আহি এক রাশ বিরক্তি নিয়ে তার দিকে তাকালো। তাজওয়ার ঠোঁটে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে বলল,
“আজ আমাদের এনগেজমেন্ট, আহি। তুমি কি খুশি নও?”
আহি গম্ভীরমুখে বলল,
“তোমার মতো ক্যারেক্টারলেস ছেলের সাথে বিয়ে হওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দুর্ভোগ হবে। আর নিজের দুর্ভোগ দেখে কেউ খুশি হয় না।”
“তুমি এখনো আমার গুরুত্বটা বুঝতে পারছো না। তবে একদিন ঠিকই বুঝবে। আর আমার এতো তাড়া নেই। এখন তো তুমি আমার পারমানেন্ট পার্টনার হতে যাচ্ছো।”
রেহানা খান তাজওয়ারের হাতে আংটি ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
“বাবা, আহিকে পরিয়ে দে।”
তাজওয়ার আংটিটা হাতে নিয়ে আহির দিকে তাকালো। আহি নিজের হাতটা লুকিয়ে রেখেছে। তাজওয়ার আহির কান্ড দেখে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো। তাজওয়ারের হাসি দেখে আহির মেজাজ বিগড়ে যাচ্ছে। মিসেস লাবণি আহির পাশে বসে তার হাতটা ধরে বললেন,
“তুমি যদি এই মুহূর্তে কোনো সিনক্রিয়েট করো, তাহলে এর ফলাফল তোমার মা আর তোমার বন্ধুরা ভোগ করবে।”
আহি অসহায় দৃষ্টিতে লাবণির দিকে তাকালো। লাবণি তাজওয়ারকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“আহি কেমন তুমি তো জানো। এভাবে হুট করে কোনো কিছুই ওর পছন্দ না। বিয়ে নিয়ে ওর কতো স্বপ্ন! তাই হয়তো ও একটু অভিমান করে আছে।”
তাজওয়ার লাবণির কথায় আংটিটা বুক পকেটে ঢুকিয়ে রাখলো আর বলল,
“তাহলে আহির মতো করে এই এনগেজমেন্টটা হবে। আমার বাগদত্তা খুশি হলেই আমি খুশি।”
তাজওয়ারের কথা শুনে রিজওয়ান কবির ও লাবণি অবাক হয়ে গেলেন। লাবণি বলল,
“আজ না হয় রিংটা পরিয়ে দাও। আহির ইচ্ছেমতো বড়সড় আয়োজন করে আবার না হয় পরাবে।”
তাজওয়ার উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“খুব স্পেশাল মুহূর্তগুলো জীবনে একবার আসলেই ভালো। যেমন আহি আমার কাছে স্পেশাল একজন, তেমনি তাকে ঘিরে আমার প্রতিটা মুহূর্ত স্পেশাল। এমন ফিকে এনগেজমেন্ট আমিও চাই না। খুব শীঘ্রই আহির জন্য চমৎকার একটা সারপ্রাইজ নিয়ে আসবো। আর তখন আমাদের এনগেজমেন্টের দিনটা আহির কাছে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
তাজওয়ার আহির দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো। আহি ভ্রূ কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে মিসেস লাবণির রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে। আহির হাবভাব দেখে তাজওয়ার ও তার পরিবার যাতে কিছু মনে না করে, তাই লাবণি ওমন কথা বলেছিল। কিন্তু তাজওয়ার যে তার কথা শুনে আহিকে আংটি না পরিয়ে চলে যাবে, এটা সে ভাবতেও পারে নি। এদিকে রিজওয়ান কবির লাবণির দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। আহিকে বিদায় করার জন্য এই দম্পতি যে উঠেপড়ে লেগেছে তা দূর থেকে দেখেই ভালোভাবে বুঝতে পারছেন মুনিয়া খালা। তবে তিনি তাজওয়ারের ক্ষণকালের এই সিদ্ধান্তে মনে মনে খুশি হয়েছেন। এর মধ্যেই যদি আহির কোনো গতি হয়ে যায়, তাতেই হবে।
(***)
রাতের খাবারের আয়োজন করে ফেলেছেন মুনিয়া খালা। রিজওয়ান কবির বসার ঘরে বসে সিরাজ খানের সাথে ভিডিও কলে কথা বলছেন। সেখানে বসেই রেহানা খান আর লাবণি গল্প করছেন। তাজওয়ার কারো সাথে ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত। এদিকে আহি নিজের ঘরের দিকে পা বাড়াতেই দোয়েল তার পেছন পেছন এসে তাকে ডাকলো। আহি দোয়েলকে দেখে দাঁড়িয়ে গেলো। দোয়েল আহির কাছে এসে তার হাত ধরে বলল,
“তোমার আর তাজওয়ার ভাইয়ের বিয়ে হবে শুনে আমার অনেক ভালো লাগছে। আমি তো আজই এখানে আসার আগে জানলাম তোমাদের বিয়ে হবে।”
আহি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“আর আমি গত চার বছর ধরে জানি কোনো একদিন এই ভয়াবহ দিনটা আমার জীবনে আসবে।”
“কি বলছো আহি? ভয়াবহ দিন! তাজওয়ার ভাই তোমাকে খুব ভালোবাসেন। তুমি অনেক সৌভাগ্যবতী।”
আহি দোয়েলের হাত সরিয়ে দিয়ে বলল,
“যেই মেয়ে জানে তার হবু শ্বশুড় বাড়ির পরিবেশ কোনো নষ্ট বাড়ির চেয়ে কম নয়, যেই মেয়ে জানে তার হবু স্বামীর শরীরে অনেক মেয়ের গন্ধ লেগে আছে, সেই মেয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে করবে, এটা নেহাতই অপ্রাসঙ্গিক। আমার ভালোবাসার প্রয়োজন নেই ভাবী। আমার ভালোবাসার বয়স পার হয়ে গেছে। আমার এই মুহূর্তে যদি কোনো কিছুর প্রয়োজন হয়, সেটা হচ্ছে ভালো বন্ধু, সত্য সম্পর্ক আর নিরাপদ আশ্রয়। যার একটাও তাজওয়ার আমাকে দিতে পারবে না। তাহলে আমি কি করবো তার এই তথাকথিত ভালোবাসা দিয়ে? আমি তো সেটা চাই-ই না।”
“ভালোবাসা কে না চায়, আহি?”
“আমার কাছে আত্মসম্মানবোধ ভালোবাসার ঊর্ধ্বে। যার আত্মসম্মানবোধ নেই, সে এমন সংসারে নিজেকে মানিয়ে নিতে চায়।”
আহি কথাটি বলেই সেখান থেকে চলে গেলো। আর দোয়েল মলিন মুখে সিঁড়ির কাছে যেতেই পাশের বারান্দা থেকে ফিসফিস শব্দ আসায় থমকে দাঁড়ালো। সে কিছু একটা ভেবে ধীর পায়ে বারান্দার কাছে এসে দাঁড়াতেই চমকে উঠলো। দেখলো সরওয়ার চুনির কোমড় জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আর চুনি সরওয়ারকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। এই দৃশ্য দেখে দোয়েলের চোখে অশ্রু জমতে শুরু করলো। সে বারান্দার দরজায় ইচ্ছে করে ধাক্কা দিতেই সরওয়ারের হাত আলগা হয়ে গেলো। আর চুনি মুক্তি পেয়ে দৌঁড়ে নিচে নেমে গেলো। সরওয়ার দরজার কাছে দোয়েলকে দেখে রাগী স্বরে বলল,
“তুই আর আসার সময় পেলি না!”
কথাটি বলেই সরওয়ার দোয়েলকে এক প্রকার ধাক্কা দিয়েই চলে গেলো। দোয়েল দরজা ধরে দাঁড়িয়ে মলিন হেসে বলল,
“এটাই আমার নিয়তি। তবুও এই মানুষটাকে ভালোবাসি বলেই তার ভালোবাসার কাঙাল হয়ে আছি। আর এই সংসার থেকে বের হয়েই বা কোথায় যাবো? বাবা-মার অভাবের সংসারে আমি অপয়া ছাড়া কিছুই নই।”
এদিকে চুনি আহির কাছে গিয়ে সরওয়ারের বাজে আচরণের কথা জানাতেই আহি ক্ষেপে গেলো। চুনি আহির রাগ দেখে তার হাত ধরে বলল,
“আফা, ওরা ডায়নিংয়ে বসে খাইতাছে। আপনে কিছু কইয়েন না৷ স্যার-ম্যাডাম আমারেই ভুল বুঝবো।”
আহি ঝাঁজালো কণ্ঠে বলল,
“কে কি বুঝলো, বুঝলো না, ওটা তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি আজ ওই খান বংশকে তাদের আসল যোগ্যতা দেখিয়েই ছাড়বো।”
আহি হনহনিয়ে নিচে নামতেই তাজওয়ারের মুখোমুখি হলো। তাজওয়ার আহির হাত ধরে বলল,
“তোমাকে ডাকতেই উপরে উঠছিলাম।”
আহি তাজওয়ারকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলল,
“আমাকে পারছো না তাই আমাদের বাড়ির মেয়েকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করছো?”
তাজওয়ার ভ্রূ কুঁচকে বললো,
“কি উল্টাপাল্টা কথা বলছো?”
“তোমার ভাইকে জিজ্ঞেস করো, সে কি করেছে!”
তাজওয়ার ভ্রূ কুঁচকে সরওয়ারের দিকে তাকালো। আহির কথা শুনে সরওয়ারের গলায় খাবার আটকে গেলো। সে কাশতে শুরু করলে দোয়েল তার দিকে পানি এগিয়ে দিতে যাবে তখনই আহি এসে পানির গ্লাসটা নিয়ে সরওয়ারের মাথায় ঢেলে দিলো। সরওয়ার চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই রিজওয়ান কবির চেঁচিয়ে বললেন,
“আহি, এসব কেমন অভদ্রতা?”
আহি সরওয়ারের দিকে আঙ্গুল তাক করে বলল,
“এই অসভ্য লোকটা চুনির সাথে বাজে ব্যবহার করেছে। জোরজবরদস্তি করতে চেয়েছে।”
মিসেস লাবণি ক্ষুব্ধ কন্ঠে বললেন,
“কে বলেছে তোমাকে এসব কথা? ওই চুনি বলেছে?”
“হ্যাঁ।”
লাবণি তাচ্ছিল্যের সুরে বলল,
“আর তুমি বিশ্বাস করেছো? এসব মেয়েগুলোকে আমার ভালোই চেনা আছে। বড় ঘরের ছেলেদের সাথে নিজেরাই ঘেঁষতে চাইবে, তারপর একটু স্পর্শ পেলেই ন্যাকা কান্না জুড়ে দেবে।”
মুনিয়া খালা নিজের মেয়ের নামে এমন কথা শুনে পাথরের মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে রইলেন। কিন্তু আহি চুপ থাকলো না। প্রতিত্তোরে বলল,
“আরেহ হ্যাঁ, আপনি তো এসব মেয়েদের ভালোই চিনবেন। নিজেও তো একই কাজ করেছিলেন।”
রিজওয়ান কবির আহির কথা শুনে তার দিকে তেড়ে এসে সশব্দে তার গালে চড় বসিয়ে দিলো। তাজওয়ার আহিকে নিজের কাছে টেনে এনে রাগী কন্ঠে বলল,
“মিস্টার রিজওয়ান কবির, আপনি আমার সামনে আমার ফিয়োন্সের গায়ে হাত তুলেছেন কোন সাহসে?”
আহি গালে হাত দিয়েই তাজওয়ারের দিকে তাকালো। তাজওয়ার আহির গালে আলতো হাত রেখে বলল,
“ওর উপর এখন আমার অধিকার। ওকে শাসন করতে হলে, আমিই করবো।”
এরপর তাজওয়ার সরওয়ারকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“ভাই, আমি তো জানি তুমি কেমন! তাই তোমাকে এখানে দাঁড়িয়ে নিজের গুণকীর্তন গাইতে হবে না।”
তাজওয়ার এবার রেহানা খানকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“মা, আজ সবার সামনে জানিয়ে দিচ্ছি। সরওয়ার খান যদি আমার আর আহির কোনো অনুষ্ঠানে আসে, তাহলে আমি খুব বাজে কিছু করে বসবো। আর এই বাড়িতে দ্বিতীয়বার যেন সে না আসে।”
তাজওয়ারের কথায় সরওয়ারের মুখটা লাল হয়ে গেলো। সে হনহনিয়ে আহিদের বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো। সরওয়ার চলে যেতেই তাজওয়ার লাবণিকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“মিসেস কবির, প্লিজ আহির কথায় কিছু মনে করবেন না। ও যা বলেছে ফ্রাস্ট্রেশন থেকে বলেছে। কিন্তু মন থেকে ও খুব সফট। একদম ফুলের মতো।”
আহি অবাক হয়ে তাজওয়ারের দিকে তাকিয়ে আছে। তাজওয়ার আহির হাত ধরে তাকে টেনে বাগানের কাছে নিয়ে গেলো। আহি সেখানে গিয়েই নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
“আমাকে ইমপ্রেস করার জন্য তুমি যে-কোনো কিছু করতে পারো। ইন্টারেস্টিং!”
তাজওয়ার হাঁটু গেড়ে বসে বলল,
“তোমার আর নিজের প্রাণ নেওয়া ছাড়া আমি সব করতে পারবো।”
“নিজের প্রাণ নিয়ে আমাকে উদ্ধার করলে বেশি ভালো হতো।”
“আই লাভ মাইসেল্ফ, আহি। আমি নিজেকে ভালোবাসি বলেই তো তোমাকে চাই। কারণ আমার ভালো থাকা তোমাতেই সীমাবদ্ধ। তুমি ছাড়া আমি শূন্য। আর আমি ছাড়া তুমি ধ্বংস।”
২৪।
আহি আর রাদ ক্যাম্পাসের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। একটু আগেই তারা মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছে। এদিকে লাবীব আর পুষ্পের মধ্যে চলছে বাগবিতণ্ডা। ছোট একটা বিষয় নিয়েই তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি চলছে। রাদ আর আহি একপাশে দাঁড়িয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ আহির চোখ গেলো ভার্সিটির গেটের দিকে। আর মুহূর্তেই তার পুরো শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে উঠলো। আহিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে থাকতে দেখে রাদ তার কাঁধে হাত রাখতেই আহি তার শরীরের ভার ছেড়ে দিলো। রাদ শক্ত করে আহিকে ধরে উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলল,
“কি হয়েছে তোর!”
আহির শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তার চোখের সামনে বার-বার সেই বর্ষার রাতটি ভেসে উঠছে। সে উলটো দিকে ফিরে রাদের শার্ট খামচে ধরে কাঁপা কন্ঠে বলল,
“আফিফ রাফাত।”
আফিফের নাম শুনে রাদ সামনে তাকালো। গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে একটা ছেলে। পরণে সাদা শার্ট। কাঁধে অফিস ব্যাগ। কোঁকড়ানো চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে। রাদ চাপা স্বরে বলল,
“এটাই আফিফ।”
আহি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। আহির চোখ দু’টি ভিজে যাচ্ছে। রাদ এদিক-ওদিক তাকিয়ে আহিকে শক্ত করে ধরে বলল,
“আহি রিল্যাক্স। পাব্লিক প্লেসে এমন করিস না। শান্ত হো।”
আহি কাঁপা কন্ঠে বললো,
“আমার শরীরটা নিথর হয়ে যাচ্ছে, রাদ। আমাকে বাঁচা। ও কেন আমার সামনে এসেছে? আমি যদি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি, লোকে আমার চরিত্রে আঙ্গুল তুলবে।”
রাদ আহির গালে হাত রেখে বলল,
“পাগল না-কি তুই!”
“দেখ না, তাজওয়ার জোর করে আমাকে নিজের করে নিতে চাইছে। আর সবাই ওকে বলছে প্রেমিক পুরুষ। এমন ভালোবাসা না-কি সব মেয়েরাই চায়। তাহলে আমি একটু চাইতে গেলে সবাই আমাকে বেহায়া কেন বলে? আমি তো আফিফকে জোর করি নি। আমি তো ওকে শুধু নীরবে ভালোবেসেছি।”
রাদ আহিকে জড়িয়ে ধরতেই লাবীব আর পুষ্প তাদের দিকে তাকালো। পুষ্প গালে হাত দিয়ে বলল,
“বাহ, এদের তো দারুণ রোমান্টিক মুহূর্ত শুরু হয়েছে।”
লাবীব পুষ্পের দিকে তাকালো। সে নিজেই বুঝতে পারছে না হঠাৎ তাদের কি হলো। একটু পর রাদ আহিকে ছেড়ে দিয়ে সামনে তাকিয়ে বলল,
“চল তোকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি। আফিফকে আর দেখা যাচ্ছে না।”
আহি রাদের হাত ধরে বলল,
“রাদ, ও এখানে কি করছে?”
রাদ গভীর ভাবনায় চলে গেছে। আহি আবার বলল,
“ওর তো অনেক আগেই বের হয়ে যাওয়ার কথা।”
রাদ অন্যমনস্ক হয়ে বলল,
“হয়তো প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।”
আহি ব্যস্ত কন্ঠে বললো,
“এভাবে বলিস না রাদ। আমি আর ও একই ডিপার্টমেন্টের। ও যদি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর হয়, তাহলে আমি কোথায় যাবো?”
রাদ আহির হাত নিজের কপালে ঠেকিয়ে বলল,
“তুই একটু শক্ত হো। পৃথিবীটা গোল। একদিন না একদিন তোর আফিফের সামনে দাঁড়াতেই হতো। নিজেকে প্রস্তুত কর। ওর সামনে যাতে তোর দুর্বলতা প্রকাশ না পায়।”
চলবে-