প্রিয়তমা ❤️ #সিজন_২ #writer- সালসাবিল সারা পর্ব-১৫

0
1009

#প্রিয়তমা ❤️
#সিজন_২
#writer- সালসাবিল সারা
পর্ব-১৫
*
*
লজ্জায় আর রাগে আমার অবস্থা লাল নীল হতে থাকলো।আর জুমুকে দেখে সাদিফ ভাইয়া আমাকে আস্তে করে বেডে বসিয়ে দিলেন,পিঠের পিছে বালিশ দিয়ে। সাদিফ ভাইয়া আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলেন…
“চুপচাপ বসে থাক। নড়াচড়া করবি তো হাতে ব্যথা পাবি। আমি একটু আসছি। পেমেন্ট আর ফর্মালিটিস গুলো পূরণ করে আসি”।
কথাগুলো বলেই উনি চলে যেতে নিলে,জুমু উনাকে বলে উঠলো…

“ভাইয়া!!আমি তোমাদের জন্যে সহ খাবার নিয়ে এসেছি,
তোমার আর বাহির থেকে খাবার আনা লাগবেনা”।

“ঠিক আছে। শেফাকে খাইয়ে দে তুই। আমার খাওয়া লাগবেনা,আমার খিদে নেই।আমি আসছি”।
বলেই সাদিফ ভাইয়া চলে গেলেন।আর জুমু খাবারের প্যাকেট নিয়ে আমার সামনে এসে বসলো।

“ভাবছিলাম তোকে ভাবী ডাকবো নাকি ফুল ডাকবো”!

জুমুর এমন কথা শুনে আমার চোখ ডিমের গোল গোল হয়ে গেলো…

“কি!!!মাথা খারাপ নাকি তোর? ভাবী কেনো ডাকতে যাবি? কি বলছিস? মাথা ঠিকাছে তোর”?

“মাথা আমার ঠিক আছে।কিন্তু আমার ভাইয়ের মাথা মনে হয় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তোকে নিয়ে ভাইয়াকে এমন সেনসিটিভ হতে আমি কখনো দেখিনি। একেবারে জান বলে ডাকছিল তোকে!! আর আমি তোকে ভাবি ডাকবো না?এটা কি বললি তুই”!!

“দেখ বোন তোর ভাইয়ের মাথায় এমনি সমস্যা আছে। আর উনি কেনো আমাকে জান ডেকেছেন না প্রাণ ডেকেছেন সেটা উনার বিষয়।আমাকে এসবে গোলাবি না”।

“চুপ কর তো তুই। এগুলা খা আপাতত”।
বলেই জুমু বাক্স খুলে আমাকে স্যুপ খাইয়ে দিতে লাগলো।আর আমি ভাবছি জুমুর কথা।আসলেই কি আমি ওর ভাবী হবো??তারমানে আমি সাদিফ ভাইয়ার….
উফ না না!উনি তো একটা রাক্ষস,উনার সাথে আমি!কখনোই না।

স্যুপ খাওয়া শেষ করতে করতেই সাদিফ ভাইয়া কেবিনে আসলেন।এতক্ষণে আমি উনার সাদা পাঞ্জাবির বুক সাইডে রক্তের দাগ দেখতে পেলাম।
আমাকে উনি কত যত্ন করেই উনার বুকে আগলে রেখেছিলেন।ইসস, উনি যদি ঠান্ডা মেজাজের হতেন তাহলে আমি নিজেই উনাকে প্রোপোজ করে দিতাম। হিহি।লোকটা আসলেই খুবই আকর্ষণীয়।
এই যে উনার পাঞ্জাবির হাতা কুনই পর্যন্ত ফোল্ড করা। যার কারণে উনার ফর্সা হাতগুলো দেখা যাচ্ছে।আর ফোনে কার সাথে কথা বলছেন আল্লাহ্ জানে।
কিছুক্ষণ ভ্রু কুঁচকে থাকেন আবার হাসেন।আজব মানুষ!

কথা বলতে বলতে সাদিফ ভাইয়া কেবিনের সোফায় বসে পড়লেন।আর আমি এখনো হা করে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।

“দোস্ত,মুখটা বন্ধ কর।এভাবে তাকিয়ে আছিস মনে হচ্ছে জীবনেও কোনো ছেলে দেখিসনি।আমার ভাই তোর দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে, আর তুইও আমার ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকিস।এখন আমি কিছু বললে বলবি, আমার মাথা খারাপ!এসব কোন ধরনের লজিক”?
জুমুর ফিসফিসিয়ে বলা কথাগুলো শুনে আমি বিষম খেলাম।

আস্তে করে জুমুকে বললাম…

“যায় বলিস না কেনো! তোর ভাই কিন্তু ড্যাম হট”।

আমার কথা শুনে জুমু বললো…

“ওহহ তাই নাকি!! ব্যস বি রেডি টু বিকাম মাই ভাবী।
ভাইই…তোমার জন্যে মেয়ে পে”…
জুমু কথাটা বলার আগে আমি ওর মুখ চেপে ধরতে গেলাম.. আর অমনি স্যালাইন লাগানো হাতে টান পড়লো।
“ওহ মাগো”বলে চিল্লিয়ে উঠলাম…

চিল্লানো শুনে জুমু উঠে দাঁড়িয়ে গেলো আর ভালো করে
আমার হাত চেক করতে লাগলো।
আর সাদিক ভাইয়া দ্রুত হেঁটে আমার কাছে এসে হাত দেখে দিলো এক জোরে ধমক..

“সমস্যাটা কি বুঝলাম না। এত নাচানাচির কি আছে সবসময়?বার বার ওয়ার্ন করেছিলাম ক্যানালের উপরে রক্ত উঠে যাবে।ভালো লাগছে এখন?? তোর সাথে ভালো ব্যাবহার করা আসলে ঠিক হইনি।অসভ্য”।

সাদিফ ভাইয়ার ধমকে আমার মনটা একদম ভেঙে গেলো।এই ছেলেটার জন্যে যখনই পজেটিভ ফিলিংস আসে,অমনিই উনি আমার ফিলিংসকে কুরবানী দিয়ে দেন।

কিছু না বলে চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছি।আর জুমু আমার কাঁধে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাশে।ধমক দিয়েই সাদিফ ভাইয়া নার্সকে ডেকে আনলেন।

নার্স এসে স্যালাইন খুলে দিলেন।কারণ স্যালাইন দেওয়া শেষ।
আর ক্যানেলের উপর হাতের রক্ত পরিষ্কার করে দিলেন।

বেড থেকে নামতে যাবো,অমনিই সাদিফ ভাইয়ার মোবাইলে কল আসলো।

“বলেন”…(সাদিফ ভাইয়া)
“………”
“ওকে। ড্রাইভার কে বলেন গাড়ি নিয়ে হসপিটাল এর পিছনের গেটে আসতে। আর আপনারা সামনের দিকেই থাকবেন। প্রেসের লোকরা যেন কিছুই বুঝতে না পারে”।
(সাদিফ ভাইয়া)

সাদিফ ভাইয়া কল কাটতেই জুমু জিজ্ঞেস করে উঠলো..

“ভাই!এনি প্রব্লেম”?

“মিডিয়া।এই লোকগুলোর আর কাজ নেই।জুমু মুখে কাপড় পেঁচিয়ে নে।আর এই যে মহারানী মাথায় কাপড় দেন সাথে মুখটাও ঢাকেন।আমি চায় না তোরা এই নোংরা মিডিয়ার কোনোরকম নিউজের হেডলাইন এ থাকবি। সো ডু ইট ফাস্ট।যদিও পিছের গেট দিয়ে বের হবো আমরা।তাও সাবধানের মার নেই”।

আমি আর জুমু কথা না বাড়িয়ে মাথায়, মুখে ওরনা দিয়ে ঢেকে নিলাম।বেড থেকে নেমে জুমুর হাত ধরে দাঁড়ালাম।খুবই উইক লাগছে।
কিন্তু সাদিফ ভাইয়া আবারো এক বেশরম এর কাজ করে বসলেন।নার্স, জুমুর সামনে আমাকে কোলে তুলে নিলেন।
আমি বেশ ভয় পেলাম উনার এমন কান্ডে।নার্স আর জুমু হা করে তাকিয়ে আছেন আমাদের দিকে।

“আজব।নামান আমাকে।কোলে নেওয়ার কোনো মানে হয় না।আমি হাঁটতে পারবো। দরকার পড়লে হসপিটালে হুইল চেয়ার আছে।আমি ঐটা করেও যেতে পারবো।আপনাকে এত কষ্ট করতে হবে না”।

কিন্তু আমার কথা শুনলে তো উনি!
“জুমু, লেটস গো”।
বলেই আমাকে কোলে নিয়ে হাঁটা দিলেন।

ছি।কেমন অদ্ভুত লাগছে ব্যাপারটা।সবাই একবার হলেও আমাদের দিকে তাকাচ্ছে।
আমি ফিসফিসিয়ে উনাকে বললাম…

“ভাইয়া!আপনি এত ভালো অ্যাক্টিং কেমনে করেন?দেখেন সবাই ভাববে আপনি কতো কেয়ারিং।কিন্তু আমি তো জানি,আপনি এমনি সবার সামনে ভালো সাজছেন।আর আমাকে আপনি হেট করেন এটাও আমি জানি”।

আমার কথায় সাদিফ ভাইয়া আমার মুখের কাছে এসে বললেন…

“জানো? ভালই তো জানো দেখছি।অ্যাক্টিং করি বা হেট করি,কিছু তো একটা করি তাই না?বাট এখন আমার কি করতে মন চাচ্ছে জানিস”?

আমি ভ্রু কুঁচকে উনার দিকে তাকাতেই সাদিফ ভাইয়া বলে উঠলেন…

“তোর চোখে চুম্মা দিতে”।

সাদিফ ভাইয়ার কথা শুনে আমি গোল গোল চোখ করে
উনার দিকে তাকিয়ে আছি।আর উনি দাঁত বের করে কি সুন্দর করে হাসছেন।আমি বার বার এই হাসির উপরে ক্রাশিত হই।

ভেবেছিলাম গাড়িতেও এই লোক আমাকে কোলে নিয়ে বসবেন।কিন্তু উনার মাথায় আক্কেল আসলো।আমাকে গাড়ির সিটেই বসিয়ে দিলেন।
আর আমার দুই পাশে উনারা দুই ভাইবোন বসে পড়লো।

*

বাসায় পৌঁছাতেই দেখলাম রাফসান ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছেন গেইটের সামনে।
গাড়ি থেকে নামতেই জুমু আর রাফসান ভাইয়া আমাকে দুইদিকে ধরলো।
সাদিফ ভাইয়া এবার কিছুই করলো না।গাড়ি থেকেও বের হলো না।না কোলে নিতে চাইলো, না আমাকে ধরলো।

“ওর খেয়াল রাখিস।আর খালামণিকে বলবি ওকে বকা না দিতে”।
কথাগুলো বলেই সাদিফ ভাইয়া চুপচাপ গাড়িতে করে চলে গেলেন।

আমিও আর ভাবলাম না কিছু।বাসায় চলে গেলাম।

বাসায় গিয়ে নানু, মা,বাবা, ভাই,ভাবী সবাই নানা প্রশ্ন শুরু করলো।কিন্তু সবাইকে বানানো কথাটাই বললাম।কোচিং এর ব্যাপারটা তুলিই নি।

এইদিকে সাদিফ বাসায় এসেই শাওয়ার করতে চলে গেলো।আয়নার সামনে দাড়াতেই পাঞ্জাবির উপরে রক্তের দাগ দেখতে পেলো।সাথে সাথেই আজকের ঘটনার কথা মাথায় নাড়া দিলো।

“এতক্ষণ শেফার সাথে থাকার কারণে এসব কথা মাথায় ছিল না।এই মেয়ের সাথে থাকলে আমি আমাতেই থাকি না।কিন্তু আমার জানকে যে এত কষ্ট দিয়েছে তাকে আমি শাস্তি দিবই।সে যে হোক না কেনো”।
কথাগুলো ভাবতেই সাদিফের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো।

সাদিফ দ্রুত শাওয়ার নিয়ে কোমরে তাওয়াল পেঁচিয়ে বের হয়ে গেলো।

রুমে এসেই মোবাইল নিলো আদনানকে কল করার উদ্দেশ্যে।কিন্তু তখনই আদনানের কল এলো…

“হ্যালো…তোকেই কল দিচ্ছিলাম।এনি নিউজ”?

“ফুটেজ পাঠিয়েছি।কিন্তু দোস্ত,একটা প্রব্লেম আছে”।

“ছেলেটা পলিটিশিয়ান ইমরান এর ভাই তাসিফ।এখন এর সাথে কিছু করলে ব্যাপারটা তোর জন্যেই উল্টো হতে পারে”।

“দা ফাক!যেই হোক না কেনো?সে আমার জানের উপর হামলা করতে চেয়েছিলো।আর আমি তাকে ছেড়ে দিবো?আর ইমরান?ওর এত পাওয়ার নাই যে সাদিফের সাথে লাগতে আসবে।শেফার দিকে যে তাকাবে তার অবস্থা আমি বেহাল করবো”।

“ওকে।বাট বেশি কিছু করিস না।বুঝিস তো, সিচুয়েশন খারাপ হলে,যুদ্ধ বেজে যাবে।আফটার অল তোরা রাজনীতি করিস”।

“ওকে ব্রো।আল্লাহ্ হাফেজ”।

“আল্লাহ্ হাফেজ ব্রো। কিপ ইউর মাইন্ড স্টেবল”।
বলেই আদনান কল কেটে দিলো।

সাদিফ বসে তার মোবাইলে আজকের সিসিটিভি ফুটেজ দেখছে।

জাস্ট এতটুকুই দেখলো, তাসিফ শেফার আগে এসে ঐ রুমে ঢুকে ছিলো।আর শেফা পানি খেয়ে আসতে নিলেই তাকে টেনে রুমে ঢুকিয়ে ফেলে তাসিফ।
আর ভিডিও শেষ!
রুমের ভিতরের ঘটনা একমাত্র পাবে তাসিফ থেকে।
শেফাকে এই ঘটনা নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস সে করবে না।

তাই সাদিফ তার পার্সোনাল ডিটেক্টিভ কে ফোন করে তাসিফের খবর নিতে বললো।আর সুযোগ পেলেই কিডন্যাপ করে নিতে বললো।

কল রেখেই সাদিফ ট্রাউজার আর টিশার্ট পড়ে বেরিয়ে পড়লো শেফার বাসার উদ্দেশ্যে।অবশ্য সাদিফের মা,ইতি ওরা আগেই চলে গিয়েছে শেফাকে দেখতে।

*
*
চারদিন পর্যন্ত মাথায়,হাতে ব্যান্ডেজ লাগানো ছিলো।কিন্তু আমি পড়ালেখা বাদ দিই নি একটুও।কারণ দুইদিন পরেই অ্যাডমিশন টেস্ট।এত কষ্ট করে পড়ালেখা করলাম এতদিন।শুধু শুধু বসে থাকলে লস হবে আমার পড়ালেখায়।তাই হাজার কষ্ট হলেও ব্যাথা লাগলেও পড়ালেখা চালিয়ে গেলাম। জুমুও আমাকে অনেক সাহায্য করতো।প্রতিদিন সে বিকালে এসে হাজির হয় আর আমরা একসাথে রাত পর্যন্ত পড়তে থাকি।

আর সাদিফ সে তো ঐ ঘটনার দুইদিন পরেই তাসিফকে হাতের কাছে পেয়েছিল।
কিন্তু তাসিফ তার কর্মের জন্য অনেক অনুতপ্ত ছিলো।
সে বার বার হাত জোর করে বলছিলো…

“ভাইয়া আমি অনেক দুঃখিত।আমি আসলে ভাবি নি এত কিছু হয়ে যাবে।আমি শেফাকে লাইক করতাম ভাইয়া।তবে আমার এটা বয়সের ভুল।আমাকে ক্ষমা করে দিন।প্লিজ। আই বেগ ইউ।আর কখনো এমন হবে না”।

যদিও সাদিফ ভেবেছিলো,সে তাসিফকে মেরে তক্তা বানাবে।কিন্তু ছেলেটা শেফা আর জুমুর বয়সের।আর বেচারা যেভাবে কান্না করছে। সাদিফ কি মারবে আর।কিন্তু সাদিফ তাসিফকে যথেষ্ট শাসিয়েছে…

“লাস্ট বার করেছিস এই ভুল।আর কখনো যদি আপনার জানের উপরে চোখ তুলে দেখিস…সেদিন তোর লাস্ট দিন হবে এই দুনিয়ায়।নাও গো টু হেল”।

তাসিফের বাঁধন খুলে দিতেই, তাসিফ উঠে দাঁড়ায়।
কিন্তু,চলে যাওয়ার সময় তাসিফের মুখে ছিলো এক রহস্যময় হাসি।যা সাদিফ দেখেনি।

কোচিং এর ঘটনা আমার মাথায় আর কোনোদিন আসে নি।কিন্তু সেদিন রাতে তাসফিয়ার মেসেজ দেখে আবারো পুরানো স্মৃতি চোখে ভেসে উঠলো।
কিন্তু, যেহেতু তাসফিয়াকে ফ্রেন্ড বলেছি,তাই ইগনোর করাটা ভালো দেখাবে না।

তাসফিয়ার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, সে ঐ ঘটনার কিছুই জানে না।খুব স্বাভাবিক ভাবে কথা বললাম ওর সাথে।যাক,তাহলে ফ্রেন্ডশিপ নষ্ট হলো না।


এক্সামের দিন আজ, খুবই টেনশন হচ্ছে।আল্লাহ্ জানে কি হবে রেজাল্ট।এই এক্সাম নামক জিনিসগুলো খুব বাজে লাগে আমার।
আমি,জুমু,রাফসান ভাইয়া আর সাদিফ ভাইয়া যাবো ভার্সিটিতে।

সবার থেকে বিদায় নিয়ে বের হলাম,ভার্সিটির উদ্দেশ্যে।মনে হচ্ছে কোনো কঠিন কাজ সম্পন্ন করতে যাচ্ছি।

সাদিফ ভাইয়া ড্রাইভ করছে আর উনার পাশে রাফসান ভাইয়া।আমি আর জুমু পিছে বসে বইয়ে চোখ বুলাচ্ছি।

ভার্সিটিতে পৌঁছে সাদিফ ভাইয়া গাড়ি পার্ক করে নিলেন।আর আমি ,জুমু গাড়িতেই বসে পড়ছি। সাদিফ ভাইয়া গাড়ি থেকে নামতেই উনার বডিগার্ডরা উনাকে ঘিরে রইলেন।এক নজর ঐদিকে তাকিয়ে আবার বইয়ে চোখ ডুবালাম।

এক্সামের আর ৪০মিনিট বাকি আছে।আর তাই বই বন্ধ করে গাড়ি থেকে নামলাম,আমি আর জুমু।
আমরা নামতেই সাদিফ ভাইয়া আর রাফসান ভাইয়া আমাদের দিকে এগিয়ে এলো।

“ভাইয়া..!হল তো দূরে আছে।ভিতরে তো গাড়ি নিয়ে যেতে পারবে না।চলো হাঁটতে থাকি।নাহলে লেট হবে”।(জুমু)

“হু।চল।
আপনারা এখানেই থাকুন।ভিতরে আপনাদের গান নিয়ে এলাও করবে না”।
বলেই সাদিফ ভাইয়া উনার সানগ্লাস লাগিয়ে নিলেন।
আর আমরা সবাই হাঁটতে লাগলাম।
আজ সাদিফ ভাইয়া শার্ট আর জিন্স পড়েছেন। পলিটিশিয়ান উনি, সবাই উনাকে অনেক ভালো করে চিনে।আর সানগ্লাস লাগানোতে উনাকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে। মেয়েরা নিশ্চয় উনার দিকে তাকিয়ে আছে!!
হু!উনার আসার কি দরকার ছিলো?যেনো উনার পরীক্ষা চলছে।যত্তসব,রূপ দেখানোর ধান্ধা।
হলের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আশে পাশে হাজার হাজার মানুষ।কিন্তু আমার পাশে আমার ভাই , জুমুর পাশে জুমুর ভাই দাঁড়িয়ে আর আমি_জুমু মাঝে দাঁড়িয়ে আছি ওদের।

একে একে সবাই চলে যাচ্ছে হলে।

রাফসান ভাইয়া আমাকে অনেক লেকচার দিয়ে জুমুর কাছে গেলো আর তখন আমার সামনে এলো সাদিফ ভাইয়া…

“ভয় করছে??নো টেনশন, ওকে বেবি?আমি আর রাফসান এখানেই থাকবো।এক্সাম ভালো করে দিবে।
আমরা এখানেই দাঁড়ানো থাকবো।এক্সাম শেষে এখানেই আসবে।ওকে”?

সাদিফ ভাইয়ার ভালো ব্যাবহারে আমার কেনো যেনো খুব খুশি হচ্ছিলো।
আমি মাথা নাড়িয়ে “হ্যাঁ”বললাম।আর উনি আবার বলতে শুরু করলেন…

“ওকে বেবি।নাও গো। জুমুর সাথে থাকবে আর ওর সাথেই নিচে আসবে।আর আমার নাম্বার বা রাফসানের নাম্বার জানো তো??ভালো করে এক্সাম দিও বেবি”।

“হ্যাঁ মনে আছে।আসছি তাহলে ।জুমু চল”।
মুচকি হেসেই আমি আর জুমু রওনা দিলাম ভর্তি পরীক্ষা নামক যুদ্ধে।
আজ কেনো যেনো খুব খুশি লাগছে। সাদিফ ভাইয়ার কথায় খুব এনার্জেটিক ফিল হচ্ছে।
এক্সাম খুব ভালো হবে ইন শাহ্ আল্লাহ্।

চলবে….

সরি ফর লেট।আমার কিছু করার নেই। গল্প দিতে লেট হয়ে যায়। ছোট হয়ে থাকলে তাও সরি।অনেক ব্যস্ত থাকি আমি।তাও লিখলাম আপনাদের জন্যে।চেক করা হয় নি। স্পেলিং ভুল হলে তাও সরি।

হ্যাপী রিডিং ❤️☺️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here