ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ২২

0
528

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:- Bushratuzzaman Shoya
Part:- 22
.
প্রান্তিক:- আমি যে তোর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না।
ছোঁয়া:- কেন??
প্রান্তিক:- তুই যখন কষ্ট পাস তখন মনে হয় যেন সেই কষ্ট টা আমি পাচ্ছি।আমি তোকে হারাতে চাই না ছোঁয়া।
ছোঁয়া:- আমিও আপনার কাছ থেকে দূরে থাকতে পারব না।আমি যে আপনাকে খুব ভালোবাসি।
প্রান্তিক:- আমিও যে তোকে খুব ভালোবাসি পাগলি।তুই ব্যাস তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যা।
আফজাল সাহেব আর ফাহাদ সাহেব একে অপরের সাথথ কথা বলছেন,,,
ফাহাদ:- আমার মেয়েটা কি ঠিক হয়ে যাবে আফজাল।আমি আমার মরিয়মের মত আমার মেয়েটাকে হারাতে চাই না।
আফজাল:- জানি।চিন্তা করিস না ও ঠিক হয়ে যাবে।প্রান্তিক তো ওর কোন ক্ষতিই হতে দিবে না।ঠিক সুস্থ করেই তুলবে।
ফাহাদ:- আমার মেয়েটার জন্য তুই এত চিন্তা করিস।যে নিজের ছোট ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলি।
আফজাল:- ছোঁয়া তো আমার মেয়ের মতনই।
ফাহাদ:- ছোটবেলাই ওকে কানাডায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু ওই শত্রুদের জন্য ওকে নিয়ে যেতে পারিনি।
আফজাল:- ওরাই তো মরিয়মকে মেরেছে।ওরা ভেবেছে যে মরিয়মের সাথে সাথে ওই সন্তানটা মারা গেছে।কিন্তু না ও বেঁচে ছিল।এখন ও আমার সাথেই থাকে।
ফাহাদ:- কিন্তু আমার ভয় করছে ওরা না জেনে যাই আমার মেয়ে বেঁচে আছে।
আফজাল:- চিন্তা করিস না কিছুই হবে না।অন্তত আমার ছেলেটা কিছু হতে দিবে না।
ফাহাদ:- জানি।বিয়ে করার আগে এর জন্যই তো প্রান্তিক সবসময় এত বকা দিত আমার মেয়েটাকে যাতে আমার মেয়েটাকে বাঁচাতে পারে।কিন্তু একি হল আমার মেয়েটার।আমার মেয়েটার কিছু হলে আমি বেঁচে থাকতে পারব না।
আফজাল:- ফাহাদ চিন্তা করিছ না।কিছু হবে না ছোঁয়ার।
আফজাল আর ফাহাদের কথা জ্যাক পিছনে দাঁড়িয়ে শুনছিল।আর জ্যাকের চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল।আফজাল খেয়াল করল জ্যাক পিছনে দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছে।আফজাল হঠাৎ করেই বলে উঠল,,
আফজাল:- জাকির।
ফাহাদ পিছন ফিরে তাকাল।জ্যাক কে দেখে অবাক হল।আর কাঁদতে লাগল।জ্যাক কান্নাজড়িত কন্ঠে বলতে লাগল,,,
জ্যাক:- ড্যাড তুমি এইটা কি করে করতে পারলে।আঠারটি বছর আমার কাছ থেকে আমার ছোট বোনকে দূরে রেখেছ তুমি।তুমি জানতে আমার বোন এইখানে ছিল।আর তুমি আমাকে একবারও বললে না।এই কাজটা তুমি কি করে করতে পারলে??
ফাহাদ:- ওকে বাঁচাতে চেয়েছি ওদের হাত থেকে।এর জন্য আমাদের কাছ থেকে এতটা দূরে রেখেছি।
জ্যাক:- অন্তত আমাকে বলতে পারতেন।এর জন্য আমি আপনাকে কখনও ক্ষমা করতে পারব না।
ফাহাদ:- জাকির কথা শুন আমার।
জ্যাক দৌড়ে ওদের কাছে গেল।ওরা ডাক্তারের সাথে কথা বলছে।ফাহাদ আর আফজালও ওইখানে আসল।প্রান্তিকও ভিতর থেকে বাইরে বের হল।জ্যাক ডক্টরকে বলছে,,
জ্যাক:- ডক্টর প্লিজ আমার বোনটাকে বাঁচিয়ে দিন।ওকর সুস্থ করে দিন।অপারেশন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করে দিন।
রাশেদ:- জ্বি।
রাশেদ ওইখান থেকে চলে গেল।জ্যাক কান্না করেই যাচ্ছে।আমেনা হঠাৎ করেই বলে উঠল,,
আমেনা:- ওর বোন মানে কিছুই বুঝলাম না।
আফজাল:- ছোঁয়া ফাহাদের মেয়ে।আমি তোমাদের কাছ থেকে এতদিন লুকিয়ে রেখেছিলাম এই কথাটা।এমনকি ছোঁয়ার কাছ থেকে।শুধু এই কথাটা প্রান্তিক জানত।এখন জাকির এই কথাটা জেনে গেছে।তোমাদের কাছ থেকে এই কথাটা এখন লুকিয়ে রেখে লাভ কি??
এই কথা শুনার পর কেউ আর কোন কিছু বলল না।সবাই কান্না করেই যাচ্ছে।ফাহাদ সাহেব শান্ত হয়ে বসে থাকতেও পারছেন না।মেয়ের জন্য ছটফট করছে।জ্যাক বসে বসে চোখের পানি ফেলেই যাচ্ছে।
প্রান্তিক চেয়ারে চুপ করে বসে রয়েছে।কোন কথাই বলছে না।প্রান্তিকের বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে।ছোঁয়াকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেল।সবাই বাইরে বসে রয়েছে।জাকির এখনও কান্না করছে।পুষ্পিতা জাকির এর পাশে বসল।পুষ্পিতা জাকিরকে বলছে,,
পুষ্পিতা:- কান্না করবেন না।কিছুই হবে না ছোট ভাবির।একদম ঠিক হয়ে যাবে।
জাকির পুষ্পিতাকে জড়িয়ে ধরল।জাকির পুষ্পিতাকে বলছে,,,
জাকির:- তাই যেন হয় p।
প্রান্তিক চুপচাপ বসে রয়েছে।প্রান্তিক মনে মনে বলছে,,,
প্রান্তিক:- আমার ছোঁয়াকে বাঁচিয়ে দাও তুমি আল্লাহ।পারলে তুমি আমার প্রান নিয়ে নাও।তবুও বাঁচিয়ে দাও।
লাইটটা অফ হয়ে গেছে।সবাই উঠে দাঁড়াল।ডক্টর বের হল।সবাই‌ ডক্টরকে বলছে ছোঁয়া ঠিক আছে কি না।
রাশেদ:- operation successful…
সবার মুখে হাসি ফুটে উঠল।শুধু এখন ছোঁয়ার জ্ঞান ফিরার পালা।কিছুখন পর ছোঁয়ার জ্ঞান ফিরল।সবাই ছোঁয়ার সাথে দেখা করতে গেল।ফাহাদ ছোঁয়ার পাশে যেয়ে বসল।ফাহাদ ছোঁয়াকে বলছে,,,
ফাহাদ:- আল্লাহ তোমার কাছে লাখ লাখ শোকর।আমার মেয়েটাকে তুমি বাঁচিয়ে দিয়েছ।
ছোঁয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে।কিছুই বুঝতে পারছে না।ছোঁয়া বলে উঠল,,,
ছোঁয়া:- মানে।আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
আফজাল:- ছোঁয়া এ তোমার বাবা।
ছোঁয়া:- বাবা।আপনি আমার বাবা।তাহলে এতদিন আমার কাছ থেকে দূরে ছিলেন কেন??আমাকে নিতে আসেননি কেন??
ফাহাদ:- ওই শয়তানগুলোর হাত থেকে তোমাকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম তাই তোমাকে আমার কাছ থেকে দূরে রেখেছি।
ছোঁয়া:- কে??
ফাহাদ:- আজকের দিনে ওই শয়তানটার নাম উচ্চারন করতে চাচ্ছি না।
ছোঁয়া:- বাবা।
ছোঁয়া ফাহাদ সাহেবকে জড়িয়ে ধরল।প্রান্তিক সবাইকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে।প্রান্তিক ছোঁয়ার পাশে বসে রয়েছে।প্রান্তিক ছোঁয়ার হাত ধরে রয়েছে।ছোঁয়ার ঘুম থেকে উঠে গেছে।প্রান্তিক ছোঁয়াকে বলছে,,,
প্রান্তিক:- তোর কিছু একটা হয়ে গেলে নিজেকে তো শেষই করেই দিতাম।
ছোঁয়া:- এইরকম কথা বলবেন না কখনও।আমার ভয় করে।
প্রান্তিক:- ঠিক আছে।
ছোঁয়া:- আমার বাবাকে আপনি আগে থেকেই চিনতেন।আর জানতেনও উনি আমার বাবা।আমাকে কেন বলেননি এই কথা।
প্রান্তিক:- কারন তোকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম ওই শয়তানগুলোর হাত থেকে।
ছোঁয়া:- কেন বাঁচাতে চান??
প্রান্তিক:- কারন তোকে আমি,,,,
ছোঁয়া:- কি আমাকে??
প্রান্তিক:- কিছু না।
চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here