ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ২৩

0
532

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:- Bushratuzzaman Shoya
Part:- 23
.
ছোঁয়া:- না না।কিছুই তো আছে।কি বলতে চাচ্ছেন বলুন।

প্রান্তিক:- সত্যি কিছু না।তুমি ঘুমিয়ে পড়।

ছোঁয়া:- এই মাত্র তো ঘুম থেকে উঠলাম।এখনি ঘুমাব আবার।

প্রান্তিক:- এখনও সুস্থ হওনি তুমি।তাই ঘুমাতে বলছি।

ছোঁয়া:- ঘুমাব কিন্তু আপনি আমার কাছ থেকে অন্য কোথাও যাবেন না।

প্রান্তিক:- ঠিক আছে।

ছোঁয়া ঘুমিয়ে পড়েছে।প্রান্তিক ছোঁয়ার পাশে বসে রয়েছে।

প্রান্তিক আর ছোঁয়ার বিয়ের প্রায় ছয়মাস হয়ে গেছে।প্রান্তিক অফিসে যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে।কিন্তু কোন কিছুই খুজে পাচ্ছে না।প্রান্তিক তাই ছোঁয়াকে জোরে করে ডাক দিল,,,,

প্রান্তিক:- এই ছোঁয়া তুই কোথায় রে??তাড়াতাড়ি ঘরে চলে আই।

ছোঁয়া এক দৌড়ে ঘরে চলে আসল।ছোঁয়া প্রান্তিককে জিজ্ঞাসা করছে,,,

ছোঁয়া:- কি হয়েছে টা কি??ষাঁড়ের মত চিল্লাচ্ছেন কেন??

প্রান্তিক:- কি আমি ষাঁড়ের মত চিল্লাই।

ছোঁয়া:- কি লাগবে সেইটা বলুন আগে।

প্রান্তিক:- আমি যে অফিসে যাব।আমি কি পড়ে যাব।কিছুই তো খুঁজে পাচ্ছি না।

ছোঁয়া:- আমি খুঁজে দিচ্ছি দাঁড়ান।

ছোঁয়া সব খুঁজে দিতে লাগল।ছোঁয়া এক মিনিটেই সব খুঁজে দিল।ছোঁয়া প্রান্তিকের হাতে ওইগুলো সব দিয়ে দিল।পুষ্পিতা এই ঘরে আসল কিছুখন পর।পুষ্পিতা বলতে লাগল,,,

পুষ্পিতা:- ছোট ভাবি চল না আজকে পার্কে ঘুরতে চাই।বড় ভাবিও যাচ্ছে সাথে।আর আপনার ভাইও যাবে।প্লিজ ছোট ভাবি।

ছোঁয়া:- আমি তো যেতে চাই কিন্তু,,,

পুষ্পিতা:- কিন্তু কি ভাবি??

ছোঁয়া:- কিন্তু যদি তোমার ভাই আমাকে যেতে দেই।

প্রান্তিক:- আমার কোন সমস্যা নেই।তুই যা।

ছোঁয়া:- সত্যি।

প্রান্তিক:- হুম।

ছোঁয়া প্রান্তিককে জড়িয়ে ধরল।একদম পুষ্পিতার সামনে।পুষ্পিতা মুচকি হাসতে লাগল।পুষ্পিতা কিছুখন হাসার পর একটা কাশি দিল।সাথে সাথে ছোঁয়া প্রান্তিককে ছেড়ে দিল।

প্রান্তিক হাসতে হাসতে ওয়াশরুমে গেল।রেডি হওয়ার জন্য।ছোঁয়া লজ্জা পেয়ে নিচে চলে গেল।পুষ্পিতা ছোঁয়ার পিছন পিছন গেল।প্রান্তিক সকালের খাবার খেয়ে অফিসে চলে গেল।

বিকাল হয়ে গেছে।সবাই মিলে পার্কে চলে গেছে।ছোঁয়া একটা বেঞ্চিতে যেয়ে বসল।কাজলও যেয়ে বসল ছোঁয়ার পাশে।জাকির আর পুষ্পিতা একটু দূরে যেয়ে কথা বলতে লাগল।পুষ্পিতা জাকিরকে জিজ্ঞাসা করছে,,,

পুষ্পিতা:- আচ্ছা আপনি কি কাউকে লাইক করেন??

জাকির:- হঠাৎ করে এই প্রশ্ন।

পুষ্পিতা:- না মানে এমনিই।কাউকে কি লাইক করেন??

জাকির:- হুম।

পুষ্পিতা:- ও।

পুষ্পিতা মন খারাপ করে চলে যাচ্ছিল।জাকির আবার বলে উঠল,,

জাকির:- এইটা তো জিজ্ঞেস করলে না কাকে লাইক করি??

পুষ্পিতা:- কাকে করেন লাইক??

জাকির:- p কে।

পুষ্পিতার মুখে একটু হাসি ফুটে উঠল।লজ্জা পেয়ে ওইখান থেকে চলে গেল।জাকির পুষ্পিতার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।কিছুখন তাকিয়ে থাকার পর পুষ্পিতার পিছু যেতে লাগল।

সাদমান সাহেবের ছেলে সিরাজ এই পার্কেই ঘুরতে এসেছে ওর বন্ধুদেরকে নিয়ে।সাদমান সাহেব এই শহরের অনেক বড় বিজনেসম্যান।তাই সিরাজের যা মনে আসে তাই করে।আর সিরাজ ওর বাবার খুব আদরের ছেলে।

সিরাজ ওর বন্ধুদের সাথে হাসিতে খুশিতে কথা বলতে বলতে সামনের দিকে গেল।হঠাৎই চোখ গিয়ে আটকাল ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে।ছোঁয়ার দিকে চোখ পড়তেই থমকে দাঁড়াল।তখন ছোঁয়া ওইখানে একা ছিল।সিরাজ ছোঁয়াকে দেখে ওর সানগ্লাসটা নিচে নামিয়ে নিল।সিরাজ বলতে লাগল,,

সিরাজ:- wow..so beautiful…

সিরাজের বন্ধুগুলো সিরাজের দেখাদেখি ওইখানেই দাঁড়িয়ে গেল।ছোঁয়া খেয়াল করল একটা ছেলে ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।ছোঁয়া নিজেকে ঠিক করে নিল।তবুও‌ ওর দিকে তাকিয়ে রয়েছে।

ছোঁয়া রেগে গিয়ে সিরাজের সামনে গেল।ছোঁয়া সিরাজের সামনে যেয়ে বলছে,,

ছোঁয়া:- এ হ্যালো আপনার সমস্যাটা কি আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ে রয়েছেন কেন??সুন্দরি মেয়ে দেখলে শুধু প্রেম করতে মন চাই।

সিরাজ:- এ আপনি কি বলছেন ম্যাম।

ছোঁয়া:- যা সত্য তাই বললাম।

কাজল চলে আসল।কাজল চলে আসল।কাজল ছোঁয়াকে বলছে,,

কাজল:- কি হয়েছে ছোঁয়া??আর এই ছেলে কে??

ছোঁয়া:- চিনি না আপু।তুমি চল এইখান থেকে।

সিরাজ শুধু ছোঁয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।সিরাজের কাছের বন্ধু আকাশ সিরাজকে জিজ্ঞাসা করছে,,,

আকাশ:- কি রে সিরাজ তুই ওই মেয়েটাকে কিছুই বললি না??

সিরাজ:- এমনি।

সিরাজ ওইখান থেকে চলে গেল।

ছোঁয়া আর বাকি সবাই সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে চলে আসল।রাত হয়ে গেছে।ছোঁয়া ওর ঘরে বসে রয়েছে।আর প্রান্তিকের জন্য অপেক্ষা করছে।কিন্তু প্রান্তিক এখনও আসছে না বাড়িতে।ছোঁয়ার খুব টেনশন হচ্ছে।

ছোঁয়া শুইয়ে রয়েছে।প্রান্তিকের জন্য চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়ালই করেনি।

সিরাজ ওর কাজ করে লাইটটা অফ করে দিয়ে শুয়ে পড়েছে।সিরাজ চোখ বন্ধ করার সাথে সাথে ছোঁয়াকে দেখতে পেল।সিরাজ চোখ খুলে ফেলল।

সিরাজ চোখ খুলার সাথে সাথে আবার ছোঁয়াকে দেখতে পেল।সিরাজ শুয়া অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়াল।ছোঁয়ার সামনে এসে দাঁড়াল।আর বলতে লাগল,,,

সিরাজ:- তোমার এই ঠোঁট দুটো অনেক সুন্দর।আর চোখ দুটোও।এই ঠোঁট দুটোতে মন চাই ভালোবাসার ছোঁয়া লাগিয়ে দেই।এই প্রথম তোমাকেই দেখে এইরকম মনে হচ্ছে।

সিরাজ যেই ছোঁয়ার ঠোঁটে ভালোবাসার ছোঁয়া লাগাতে যাবে ঠিক তখন ছোঁয়া চলে গেল।সিরাজ মাথায় একটা বাড়ি দিয়ে বলতে লাগল,,,

সিরাজ:- মেয়েটাকে দেখার পর থেকেই ওকে নিয়ে কল্পনা করেই যাচ্ছি।

ছোঁয়ার ঘুম একটার দিকে ভেঙ্গে গেল।এখনও পর্যন্ত প্রান্তিক আসেনি।ছোঁয়ার এখন আরও বেশি টেনশন হচ্ছে।ছোঁয়া প্রান্তিকের মোবাইলে কল দিতে লাগল।কিন্তু সুইজড অফ বলছে।

ছোঁয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।এখনও কেন প্রান্তিক আসছে না।নাকি ওর কোন সমস্যা হল।ছোঁয়া একদম টেনশনে মরেই যাচ্ছে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here