তপ্ত_ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৬১

0
109

#তপ্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৬১

.
🍁
—” রিদ আমি এখন মজা করার মডে নেই। তুমি প্লিজ সিরিয়াস হয়ে উত্তরটা দাও আমাকে।

.
আপুর এমন কথায় উনি একবাক্যে বললো……

.

—” I mean it… নিধি

.
উনার এমন একবাক্যের কথাটা ছিল ঘায়েল করা টাইপ কিছু যাহ মূহুর্তেই দুটো মানুষকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে তুলে। আর এই দুজনে মধ্যে প্রথম কন্যাটা হলো আমি আর দ্বিতীয় কন্যাটা হলো নিধি আপু। আমি উনার কথায় আবাক হয়ে ঘায়েল আর নিধি আপু শকটে কারণে ঘায়েল। কারণ দুটো হলেও ধরণ দুজনের একিই ছিল ঘায়েল হওয়াটা। আমরা দুজনেই উনার দিকে আবাক করা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার মধ্যে দিয়ে হুট করে রুদ্র চলে আসে আমার পাশে। এসে দ্রুততা সঙ্গে নিধি আপুকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..

.

—” cool, cool, নিধি! রিলাক্স হও আগে। ওদের দুজনের জোকস এর মধ্যে তো তুই এখনই নিশ্বাস আঁটকে মারা যাবি মনে হচ্ছে। আরে বাবা চিল। ওরা দুজনেই তোর সাথে মজা করছে।

.

রুদ্রের হঠাৎ আমার পাশে এসে দাঁড়ানোটা সাথে নিধি আপুকে উদ্দেশ্য করে অনর্গল কথা গুলো বলাটা ছিল এক প্রকার আতংকের মতো। হুট করে রুদ্র এখানে চলে আসবে সেটার জন্য মোটেও প্রস্তত ছিলাম না আমি। রুদ্রকে দেখে আমি চমকে উঠে মূহুর্তেই চুপ করে যায় বাস্তবতা চিন্তা করে। কারণ রুদ্রের সাথে আমার চারদিন পর বিয়ে। কাল থেকে বিয়ের সব ফাংশন শুরু হতে চলছে আর সেটা ভেবেই আমি চুপ করে যায়। আর সবচেয়ে বড় কথা কি কারণ আমি এতক্ষণ যাবত এখানে এই অদ্ভুত আচরণ গুলো করছিলাম সেটা বুঝতে পারছি না। আমাকে চুপ করতে দেখে মূহুর্তে রিদ খানের ফেসে চাপা রাগে ফুটে ওঠে। হয়তো আমার চুপ করাটা মোটেও পছন্দ হচ্ছিল না উনার। কিন্তু নিধি আপু জানে জান ফিরে এসেছিল রুদ্র কথা গুলো শুনে। তিনি নিজের শান্ত করে দ্রুত বলে উঠে…..

.

—” মানে….

.
নিধি আপুকে উত্তেজিত হতে দেখে রুদ্র হালকা স্মিত হেসে বলে উঠে….

.
—” মানে হলো মায়া রিদের নয় আমার বউ। ওর সাথেই আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমাদের বিয়ের দিনই তোদের বিয়েটা হচ্ছে। আর সেটা নিয়েই আমার দুষ্ট বউ তোর সাথে মজা করছিল। আর সেই মজাই অংশদারী রিদও হলো। ওরা দুজন মিলে তোকে পাগল বানাচ্ছি। আমি সবটাই দেখছিলাম দূরে থেকে আর হাসাচ্ছিলাম। আমি আর একটু দেরি করে আসলে তুই হয়তো নির্ঘাত নিশ্বাস আঁটকে মারা যেতি পাগলী।

.
কথা গুলো বলতে বলতে রুদ্র একহাতে আমার কাধ জরিয়ে ধরবে তার আগেই রিদ খান রুদ্রর হাতটা ধরে নিজের কাছে নিয়ে এনে আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো……

.
—” তোমার যদি চুপ থাকার ড্রামাটা শেষ হয়ে থাকে তো এখানে থেকে যেতে পারো তুমি।

.

রুদ্রের কথায় নিধি আপু যতটা না স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল উনার আমাকে বলা শাসন মূলক কথা গুলো সন্দেহ পূণতা থেকে যায় নিধি আপু মধ্যে। এবার নিধি আপুর মধ্যে একা দ্বিধাবোধ কাজ করছিল না সাথে রুদ্রের মধ্যে ও করছিল। উনি রুদ্রকে স্পর্শ করতে না দিয়ে আমাকে। এতে করে দুইজনই মধ্যে সন্দেহ পূণতা সৃষ্টি হয় যাহ আমি মূহুর্তে দু’জনকে দেখে বলতে পারছি। আমি দুজনকে দেখে কিছু বলতে যাবো তার আগেই রিদ খান আবারও আমাকে বলতে না দিয়ে উচ্চ স্বরে ক্ষেপ্ত হওয়ার সুরে বলে উঠে…..

.
—” Just goo stupid…….

.
উনার চিৎকার করার কথায় আমি ভয়ে চমকে উঠে কিছু না বলে দ্রুত সেখান থেকে চলে আসি। ওদের তিনজন মধ্যে কি কথা হয়েছে সেটার কিছুই জানা নেই। আমি এটাও জানি না আজকে এই কথা গুলো কোথায় নিয়ে যায় আমাকে।

.

.
🍁
গায়ে হলুদের সাজে ডেসিং টেবিলে সামনে বসে আছি আমি। স্তব্ধতার সাথে ডেসিবলে আয়নায় নিজেকে দেখছি এক দৃষ্টিতে। কেন দেখছি তার বলতে পারবো না। নিজেই মনের অনূভুতিটা কেমন সেটাও কাউকে বুঝাতে পারবো না। শুধু জানি আজ আমার গায়ের হলুদ তাই কিছুক্ষণ আগে একঝাক মেকাপ কন্যা এসে আমাকে হলুদ সাজে সজ্জিত করে দিয়ে গেছে। গায়ে আমার হলুদ লেহেঙ্গা পড়ানো খুব সুন্দর করে। খুবই সিম্পল করে গর্জিয়েস ভাবে সাজিয়েছে আমাকে। আমার নিজেকে দেখে মনে কারও পছন্দ অনুযায়ী সাজানো হয়েছে আমাকে। কেউ হয়তো চাই আমি তার জন্য এই ভাবে সাজি। কিন্তু কে চাই রুদ্র? হয়তো বা! রুদ্র সাথে যেহেতু আমার বিয়ে হচ্ছে হয়তো রুদ্রই এই মেয়ে গুলোকে পাঠিয়েছে আমাকে এই ভাবে সাজাতে। মনে মনে কথা গুলো ভেবেই একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়লাম নিরবে। এই দীর্ঘ নিশ্বাসটাই যেন আজ কাল আমার সংঙ্গী হয়ে দাড়িয়েছে আমার জীবনে। যখন থেকে রিদ খানের অতীত সম্পর্কে জানতে পেরেছি তখন থেকে একটা অজানা অস্থিরতা ভুগছি আমি। কোনো ভাবে কোনো কিছু মিলাতে পারছি না আমি সবকিছু কেমন এলোমেলো লাগছে নিজের কাছে। আসিফের সাথেও দুইদিন ধরে যোগাযোগ করা চেষ্টা করেছি কিন্তু কোনো রকম ভাবেই করতে পারছি না। মনে হচ্ছে কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাকে আসিফ থেকে দূরে দূত রাখছে। আর এটা হয়তো রিদ খানই করছে কারণ উনি জানে হয়তো আমি আসিফ এর কাছে যেতে পারি আমার বাকি প্রশ্ন গুলো উত্তরের জন্য আর এটা বুঝতে পেরেই এমন করছে। কিন্তু এখন আমি আমার বাকী প্রশ্ন গুলোর উত্তর কিভাবে পাবো সেটাও জানি না। সবকিছু এখন ওপরওয়ালা কাছে ছেড়ে দিলাম। উনি এখন আমাকে যে দিশায় নিয়ে যাবে আমি সেই পথেই হাটবো।

.

বাড়ি ভরতি মেহমান এসেছে। বিয়ের অনুষ্ঠান আমাদের বাড়িতেই হচ্ছে আর এতে রুদ্রের পরিবারের কারও কোনো রকম আপত্তি নেই। আত্মীয় স্বজনরা সবাই চলে এসেছে। সেই সাথে আমার পঞ্চ বান্ধবীরা এসেছে আমার বিয়েতে। ওরা সবাই কালই চলে এসেছে। কাল থেকে ওরা সবাই আমার সাথেই ছিল একটু আগের ওরা সবাই গেছে হলুদের জন্য সাজতে হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে চলেও আসবে আমাকে নিচে নিয়ে যেতে স্টেজ মধ্যে হলুদের জন্য। এখন আমি একাই রুমের মধ্যে বসে আছি চুপচাপ। মনটা খুব বেশি ভার ভার লাগছে সাথে উনাকেও (রিদ) খুব বেশি মিস করছি। ডেসিবল সামনে থেকে নিজের হাতের ফোনটা তুলে নিয়ে উনাকে ফোন দেয়। উনার (রিদ) ফোনে রিং হওয়ার আগে দ্রুত কলটা কেটে দেয় আমি। কয়েক বার এই ভাবে কল করতে গিয়েও করতে পারিনি আমি বারবার কলটা কেটে দেয়। কিছুতেই সাহস যোগাতে পারছিনা উনাকে একটা কল করার জন্য। আর কল করে বাহ কি বলবো উনাকে সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। নিজে দ্বিধা দ্বন্দ কাজ করতে করতে ফোনটা রেখে দেয় টেবিলের ওপর। আমি ফোনটা টেবিলের ওপর রাখতেই হঠাৎই আমার রুমের লাইট অফ হয়ে যায়। আমি চমকে উঠে চারপাশে তাকাতেই চোখে পড়ল আমার রুমেরই লাইট অফ বাহিরের কড়াকড়ি ভাবে লাইট জ্বলছে। আমার রুমের জানালা দিয়ে সেই লাইটের আলো স্পষ্ট আসছে আমার রুমে। চারপাশে আলোয় আমার রুমটা খুব বেশি অন্ধকার না হওয়ায় আমি আর ওঠে সেটা চেক না করেই বসে থাকি জায়গায় অন্য মনস্কর হয়ে। আমি মন্ত হয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকার পরপরই হঠাৎ মনে হলো কারও ভারি নিশ্বাস পরছে আমার ঘাড়ে ওপর। আমি ভয়ে আতংকিত হয়ে ওঠে দাড়িয়ে ঘুরে দেখতে যাবো তার আগেই কেউ আমাকে পিছন থেকে নিজের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে সাথে সাথে। আমি ভয়ে চিৎকার করতে যাবো তার আগে সেই ব্যাক্তিটি একহাতে পিছন থেকে আমার মুখ চেপে ধরে গলায় নিজের মুখে গজায় নেশাগ্রস্ত ভাবে। আমি ভয়ে নিজের হাত পা ছুটাতে থাকি ব্যাক্তিটি থেকে বাচার জন্য। কিন্তু এতে করে বিন্দু মাত্রও ব্যাক্তিটি শক্তি সাথে পেরে উঠছিলাম না আমি। কারণ উনি পিছন থেকে একহাতে আমার মুখ ও অন্য হাতে আমার দুইহাত নিজের সাথে চেপে ধরে রেখেছিল। আমি উর্বোচ্চ নড়াচড়া করতে থাকায় ব্যাক্তিটি ডিস্টার্ব হচ্ছিল তাই ব্যাক্তিটি আমাকে আরও একধাপ নিজের সাথে চেপে ধরে নেশাক্ত কন্ঠে আস্তে করে বললো……

.

—” উঁহুম। এতো নড়াচড়া করো কেন তুমি সবসময়? চুপচাপ দাড়িয়ে থাকো জায়গায়।

.
চিনা কণ্ঠে কানে আসতেই মূহুর্তেই চুপ করে যায় আমি। এই মূহুর্তে রিদ খান আমাকে এই ভাবে নিজের সাথে জরিয়ে রাখবে সেটা কখনোই ভাবিনি আমি। আর আমিও উনার কণ্ঠ কানে আসতেই শান্ত হয়ে যায়। কোনো রকম চিৎকার না করে উল্টো উনার কাজে সুমতি প্রকাশ করছি শান্ত থেকে। আমি কেন চুপ করে আছি কেন চিৎকার করছি না তা জানি না। তবে এই মূহুর্তে আমার মনে হচ্ছে যেটা হচ্ছে সেটাই হয়তো ঠিক। থাক না কিছু বিষয় নিজের জানার বাহিরে। থাকুক না কিছু কথা অজানা। আমার এমন চিন্তা ভাবনা মাঝে উনি আস্তে আস্তে আমার মুখ থেকে নিজের হাতটা সরিয়ে ফেলে আমাকে শান্ত ভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে। হালকা হাতে আমার লেহেঙ্গা ভিতর থেকে আমার পেট স্পর্শ করতে থাকে সাথে ডীপলি ভাবে আমার ঘাড়ে ওপর নিজের ঠোঁট দুটো চেপে ধরতেই, আমি মূহুর্তে কেঁপে ওঠে নিজের দুইচোখ বন্ধ করে নেই। সাথে উনার (রিদ) এমন স্পর্শ সয্য করতে না পেরে সাথে সাথে উনার দিকে ঘুরে নিজের দুহাতে উনাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে উনার বুকের মধ্যে নিজের মুখে লুকায়।

.
চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here