হিংস্র_ভালোবাসা (সিজন ২) #Writter_Farhana_Chobi #পর্ব-১

0
947

#হিংস্র_ভালোবাসা (সিজন ২)
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-১

(যারা সিজন১ পড়েন নি তারা ও সিজন ২ পড়তে পারবেন)
.
.
.
সামনে পরে আছে রাব্বি আর হাসানের লাশ৷ ফারহা রাব্বির আর হাসানের রক্তে মাখা মুখ টা দেখে থর থর করে কাপছেঁ ৷ আর এদিকে মেঘ হাত দিয়ে ফারহার মুখে স্লাইট করছে ৷

— প্রেয়সী এভাবে কাপঁছো কেনো তোমার আগেই ভাবা উচিত ছিলো ৷ আমার কথা না শুনলে তোমার সাথে ঠিক কি কি হতে পারে তার একটা ছোট্ট টেইলার ছিলো এটা….

কথাটা বলে মেঘ হা হা করে হাসতে লাগলো ৷ ফারহা কাপাঁ কাপাঁ গলায় বলে উঠলো …

— কে,,কেনো করছেন ..???(ফারহা)

মেঘ ফারহার কাপাঁ কাপাঁ ঠোটের দিকে তাকিয়ে হুট করে ফারহার ঠোট জোড়া নিজের ঠোটের সাথে মিশিয়ে নিলো ৷ ফারহা মেঘ কে জোড়ে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে মেঘের গালে থাপ্পোর মেরে দেয়…

— ঠাসসসস , ছিঃ আপনি কতোটা নিচ কতো টা খারাপ তা কি আপনি জানেন আপনার মতো বড়লোক বাবার বিগরে যাওয়া খুনি ছেলে কে এই ফারহা কখনো ভালোবাসবে না ৷
আপনি কি মানুষ নাকি জানোয়ার হ্যা কি দোষ ছিল রাব্বি হাসানের বলুন কি দোষ ছিলো ..? যার কারনে এভাবে ওদের মরতে হলো..??? (

মেঘের কলাট ধরে ফারহা চিৎকার করে বলতে লাগলো ৷ এদিকে ফারহা মেঘের কলাট ধরায় মেঘ প্রচন্ড রেগে ফারহার চুলের মুঠি ধরে ফারহার ঠোটে রুডলি কিস করতে থাকে ৷ লাস্ট মেঘ ফারহার ঠোটে জোড়ে কামড় বসিয়ে দিয়ে ছেড়ে দিয়ে বলে….

— নেক্টস টাইম যদি কখনো কোন ছেলের নাম তোর মুখে শুনি তাহলে আজ যা করলাম তা করবো না সোজা বাসর ঘড়ে নিয়ে যাবো মাইন্ড ইট….(প্রচন্ড রেগে)

মেঘ এতো জোড়ে ফারহার ঠোটে কামড় বসিয়েছে যে ফারহার ঠোট কেটে রক্ত পরতে লাগলো ৷

— মিস্টার মেঘ চৌধুরী আপনি যদি মনে করেন আমি যে ছেলের সাথে কথা বলবো বন্ধুত্ব করবো আপনি তাকে এভাবে মেরে ফেললে আপনার প্রতি আমার ঘৃনার অনুভূতি গুলো ভালোবাসার অনুভূতিতে রুপ নেওয়াবেন তাহলে বললো আপনি ভূলে ভরা পৃথিবী তে বাস করছেন ৷ আপনার প্রতি ঘৃনা আমার দিন কে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তা কখনো কমবে না আর না অন্য কোন অনুভূতিতে রুপ নিবে..৷

এতোক্ষন মেঘ ফারহার ভাষন শুনে বাকা হেসে ফারহার সামনের চুল গুলো কানের পিঠে গুজে দিয়ে বলে উঠলো …

— প্রেয়সী এভাবে বলো না আমার এখানে লাগে তো (বুকের বা পাশ দেখিয়ে) আর একটা কথা তুমি আজ মন দিয়ে শুনো আমার প্রতি তোমার যে অনুভূতি থাকুক না কেনো তোমাকে আমাকে ভালোবাসাতে হবে ৷ আমার ভালোবাসার খাচায় বন্দি হতে হবে তোমায় আর না হলে তোমার প্রিয় ভালোবাসার মানুষ গুলো কষ্ট পাবে তার সাথে সাথে তোমাকে ও কষ্ট পেতে হবে৷

ফারহা মেঘের কথা শুনে একপ্রকার আঁতকে উঠলো ৷ ফারহার মুখে আর কোন কথা নেই ফারহা বুজতে পেরে গেছে ও বন্দি এই এই লোকটার হিংস্র ভালোবাসায় ওকে সারা জীবন বন্দি হয়ে থাকতে হবে ৷

মেঘ ওর কথা শেষ করে ফারহা কে কোলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে নিজে ড্রাইব করতে থাকে এদিকে ফারহা নিজের বন্ধুদের এমন নিষ্ঠুর ভাবে খুন হতে দেখে কান্না করতে ও ভুলে গেছে মূর্তির মতো বসে আছে আর ভাবছে একমাস আগের কথা……

****ফ্লাসব্যাক ……………

— ফারু আর কতোক্ষন শাওয়ার নিবি ..?? দেরি হয়ে যাচ্ছে তো? (তিন্নি)

— জানু আর পাচঁ মিনিট একটু ওয়েট কর ..(ফারহা)

— আচ্ছা ঠিক আছে আমি আন্টির কাছে যাচ্ছি নাস্তা করতে তুই চেন্জ করে একে বারে রেডি হয়ে নামিস ওকে…(তিন্নি)

— ওকে জানু…(ওয়াসরুম থেকে বললো ফারহা)

তিন্নি ফারহার আম্মুর কাছে গিয়ে গল্প করতে লাগলো আর এদিকে ফারহা শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে সাদা ত্রিপিস পরে নিলো ভেজা চুল গুলো মুছে ছেড়ে দিয়ে চোখে গাঢ় কাজল ঠোটে হালকা গোলাপি লিপষ্টিক হাতে ঘড়ি পরে নিলো ….

— ব্যাস রেডি ,এখনি বের হতে হবে নয়তো আবার কলেজ যেতে লেট হয়ে যাবে ওহ তার আগে আপনাদের আমার পরিচয় টা দিয়ে দি ” আমি ফারহা রহমান ৷ এবার অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী ৷তিন্নি যে কিছুক্ষণ আগে বকবক করলো সে আমার বেস্টু আমার কলিজা৷ বাবা আশিকুর রহমান এক ব্যাংকার আর আম্মু গৃহিনী ৷ তবে আমি একমাত্র মেয়ে নই ৷ আমার আদর ভালোবাসায় ভাগ নেওয়ার জন্য আমার মিষ্টি দুষ্ট একটা ভাই আছে আদিল ৷ ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে পরে ৷ বাকাটা পরে জেনে নিবেন এখন নিচে যাই নয়তো তেলাপোকা (তিন্নি) আবার চিৎকার জুড়ে দিবে………
.
.
.
.
— ওই তো এসে গেছে বড়লোকের বিটি…(তিন্নি)

— তেলাপোকা ভালো হচ্ছে না কিন্তু 😡(ফারহা)

— আহা তোরা কি আবার সকাল সকাল ঝগড়া শুরু করে দিলি ৷ চুপচাপ নাস্তা করে কলেজে যা নয় তো দেরি হয়ে যাবে আর শোন আমি টিফিন দিয়ে দিচ্ছি তোদের দুজনের টা বাইরের খাবার মটে ও খাবি না ৷(ফারহার মা)

— ওকে মাদার বাংলা ৷ তুমি যা বলবে তাই হবে৷

ফারহা তিন্নি নাস্তা করে বেরিয়ে পরলো ভাগ্য ক্রমে বাড়ি থেকে বার হতে না হতে একটা রিকশা পেয়ে যায় ৷

In Collage …..

মামা সামনে রাখেন এখানে নামবো আমরা….(তিন্নি)

ফারহা তিন্নি রিকসা থেকে নামতে হঠাৎ করে আসে পাশে ফায়ারিংয়ের শব্দে কেপে ওঠে ওরা দুজনে পাশে তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে মে বি ৬ ফিট লম্বা জিম করা বডি ধব ধবে ফর্সা চোখের মনিটা গাঢ় নীল মুখে চাপদারি কালো কোট প্যান্ট পরা হাতে ব্রান্ডের ওয়াচ দেখলে মনে হয় কোন বলিউডের হিরো বা তার থেকে ও বেশি …..

— আউচ কি করছিস তেলাপোকা এভাবে চিমটি কাটলি কেনো দেখতে দে না ছেলে টাকে কি হ্যান্ডস্যাম ….(ফারহা)

— ফারু তোর কি মাথা খারাপ হলো নাকি হু দেখছিস না ছেলেটার গুলি লেগেছে কতো রক্ত পরছে ৷ মনে হয় মরে যাচ্ছে দেখ চোখ মেলে তাকাতে পর্যন্ত পারছে না ..(তিন্নি)

এতোক্ষনে ফারহার হুস ফিরলো ছেলে টার দিকে আর একটু ভালো করে তাকাতে দেখে ছেলেটার বুকে গুলে লেগেছে ৷ ফারহা দৌড়ে গিয়ে ছেলেটাকে ধরে রিকসা ডাকতে থাকে তিন্নি বুজতে পারলো আজ ওদের আর ক্লাস করা হবে না ফারহা ছেলে টাকে হসপিটালে নিয়ে যাবে ৷ তিন্নি একটা রিকসা ডেকে দুজনে মিলে ছেলেটা কে ধরে রিকসায় বসিয়ে দিয়ে ফারহা পাশে বসে পরে ৷ ফারহা নিজের ওড়না দিয়ে ছেলেটির ক্ষত জায়গায় চেপে ধরে কারন গুলি লাগার জন্য প্রচুর রক্তপাত হচ্ছে ৷ তিন্নি অন্য রিকসা নিয়ে ফারহার পিছু পিছু আসছে……

In Hospital ……..

ডক্টর ছেলেটির অপারেশন করার জন্য অটিতে নিয়ে যেতেই এক দল লোক হসপিটালে ঢুকে চেচামেচি করতে লাগলো এখানে নাকি ওনাদের বস কে ভর্তি করা হয়েছে ৷ রিসিবশনের থেকে খবর নিয়ে ফারহা তিন্নির দিকে এগোতে লাগলো লোক গুলো ৷ হঠাৎ করে এতো লোকজন দেখে ফারহা বেশ ঘাবড়ে এটা ভেবে যে ছেলে টা কোন মন্ত্রী বা বড় কোন পলিটিক্যাল লোক হবে ……

— এই যে মিস এখানে কি আমাদের বস কে নিয়ে এসেছেন আপনারা..??( লোকদের ভিতর থেকে একজন বলে উঠলো )

— ফারহা ভয়ে ভয়ে বললো” দেখুন আমি তো জানি না তিনি আপনাদের বস কিনা আমারা ওনাকে আহত অবস্তায় পরে থাকতে দেখে এখানে নিয়ে আসি ট্রিটমেন্টের জন্য”

লোকটি বুজতে পারলো ওদের বস কে এই মেয়েটি চেনে না তাই ফোন বের করে ওদের বসের ছবি দেখালো….

— দেখুন তো মিস এই লোকটি কি না..??

— ফারহা ভালো করে তাকিয়ে দেখে বলে ” হ্যা এই লোকটাই ওনার তো বুক গুলে লেগেছে তাই আমরা ওনাকে এখানে নিয়ে এসেছি”

— ওকে মিস আপনি যাকে এখানে এ্যাডমিট করেছেন তাকে মে বি আপনি চিনেন না৷ ওনার নাম মেঘ চৌধুরী ৷ পেশায় একজন ডক্টর সাথে বিডির সব চেয়ে বড় বিজনেসম্যান ৷

ফারহা মেঘের পরিচয় শুনে হা করে তাকিয়ে রইল পাশ থেকে তিন্নি আবার চিমটি কাটতে ফারহা মুখ বন্ধ করে বললো…

— দেখুন উনি কে বা ওনার পরিচয় কি এটা জেনে তো ওনাকে ট্রিটমেণ্ট করাতে নিয়ে আসি নি ৷ এখন যেহেতু আপনারা এসে গেছেন এখন আমরা যেতে পারি ৷

— অবশ্যই তবে আপনার নাম টা …

ফারহা আসলামের পুরো কথা শোনার আগেই ফারহা তিন্নি কে নিয়ে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে গেলো . দু ঘন্টা পর ডক্টর অটি শেষ করে বাইরে এসে জানায় গুলি বার করা হয়েছে তবে প্রচুর ব্লিন্ডিং হওয়ার জন্য তিনি ভিষন দূর্বল আছে৷

— ডক্টর বসের জ্ঞান ফিরবে কখন..??(আসলাম)
.
.
.
.
.
— ছেলেটা কি হ্যান্ডস্যাম না দোস্ত..??(তিন্নি)

— ওই মাতারি যারে দেখোস তারেই তোর কাছে হ্যান্ডস্যাম লাগে হ্যা ৷ ছেমড়ি আর একটা কথাও কবি না ৷ শালি আমি বাচি না আমার জ্বালায় তুই আছোস তোর হ্যান্ডস্যাম রে নিয়া…..(ফারহা)

ফারহার হঠাৎ করে রাগ করা দেখে তিন্নি বেশ অবাক হয় কারন এমন হুট হাট করে ফারহা কখন রাগ করে না ও খুব ঠান্ডা মাথার মানুষ ৷ তিন্নি ভেবে পাচ্ছে না ফারহার রাগের কারন টা ৷ তাই একরাশ কনফিউশন নিয়ে নিয়ে ফারহা জ্বিগাসা করলো” দোস্ত তুই ঠিক আছিস তো .?? ”

— ক্যান আমার কি হবে হ্যা তুই দেখতে পারছিস না আমি তিরিং বিরিং করে খুশিতে লাফাচ্ছি হ্যা (দাতেঁ দাতঁ চেপে )

— দোস্ত তোর পার্স কই ..(জোড়ে চিৎকার করে)

— চুপ একদম চুপ শালি তোর জন্য তোর জন্য আমার পার্স টা হারিয়ে ফেলেছি ৷

— আমার জন্য (কাচুমাচু মুখ করে)

— দেখ তেলাপোকা মেজাজ টা এমনি তে চরে আছে পার্স হারিয়ে ফেললাম সাথে ওড়নায় এতো রক্ত শুকিয়ে আছে এভাবে বাড়ি ফিরবো কি করে ভেবে কূল পাচ্ছি না আর তুই মজা করছিস…(ফারহা)

— দোস্ত চিল আমার ড্রেস আছে তো চিন্তা কিসের হুম আর শোন আন্টিকে কল করে জানিয়ে দিচ্ছি তুই আজ আমার সাথে আমাদের বাড়িতে থাকবি কাল কলেজ করে সোজা বাড়িতে যাবি ওকে ….(তিন্নি)

— হ্যা তাই কর নয় তো আম্মু আমাকে এভাবে দেখলে চিন্তা করবে….

তিন্নি ফোন করে ফারহার মায়ের থেকে পার্মিশন নিয়ে নেয় ওদের বাসায় থাকার জন্য……
.
.
.
*পরের দিন ……..

— আসলাম কে আমাকে হসপিটালে এডমিট করেছে..??(মেঘ)

— বস মেয়েটার নাম জ্বিগাসা করার সময় পায়নি তবে ওই মেয়েটি মে বি যাবার সময় পার্স টা ফেলে গেছে ৷ এই দেখুন….(পার্সটা মেঘের হাতে দিয়ে)

— মেঘ পার্সটা খুলতে একটা হাস্যমুখ চোখে পরতে মেঘের দুচোখ ওখানে আটকে যায় ওই মায়াবী চোখে৷ মেঘ মৃদু হেসে ফারহার ছবিতে চুমু খেয়ে বলে উঠলো” আমার প্রেয়সী ”
.
.
.
.
.
#To_be_Continued……………….🍁🍁🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here